৩৬৫দিন। আসানসোল। বিকাশবাবু একের পর এক মামলা করছেন। আদালত নিয়োগ বন্ধ করে দিচ্ছে। ওনার তো অর্থের কোন অভাব নেই। কিন্তু সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে আপনাদের। আপনারা বিকাশবাবুদেরকে বলুন আপনাদের জন্য চাকরিতে আটকে যাচ্ছে আপনাদের দিতে হবে। যারা বড় বড় কথা বলেন তারা জানেন না ত্রিপুরায় ১০ হাজার শিক্ষকের চাকরি গিয়েছিল। বিজেপি একজনের চাকরিও ফেরত দিতে পারেনি। কোর্টের অর্ডার পেলে আমরা সবারই চাকরি ফিরিয়ে দেব। কারণ আমাদের সহানুভূতি তাদের সঙ্গে আছে। শিক্ষকদের নিয়োগ প্রসঙ্গে এমন ভাষাতেই সিপিএমের বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য ও বিজেপিকে আক্রমন করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিকাশবাবুরতো অর্থের অভাব নেই, কিন্তু সমস্যা ভুগতে হচ্ছে আপনাদের
বিকাশ বাবু চাকরি আটকাচ্ছেন, ওকে বলুন চাকরি দিতে
লোকসভা উপনির্বাচনে তৃণমূলের বিপুল ভোটে জয়লাভের পর আসানসোলবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে মঙ্গলবার আসানসোল স্টেডিয়ামে জনসভা করলেন তৃণমূল নেত্রী। সভায় উপস্থিত ছিলেন আসানসোলের নবনির্বাচিত সংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা, তাঁর স্ত্রী পুনম সিনহা, রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক, বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়, আসানসোল দুর্গাপুরের সমস্ত বিধায়ক দুই শহরের মেয়র এবং তৃণমূল নেতৃত্ব। সভামঞ্চে থেকে একদিকে যেমন তৃণমূলের উন্নয়নকে তুলে ধরলেন, তেমনই অন্যদিকে ভাজপা ও কেন্দ্রের মিথ্যে প্ররোচনা ও সিপিএমের কুৎসার রাজনীতিকে তীব্র আক্রমণ করলেন মমতা।
১৭ হাজার চাকরি রয়েছে
রাজ্যে চাকরির নিয়োগ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মমতা বলেন, আমি খোঁজ নিয়েছি, আমার হাতে ১৭ হাজার চাকরি আছে। আদালত অনুমতি না দিলে আমি কি করে চাকরি দেব। সবক্ষেত্রেই আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে। আদালত অনুমতি দিল আমি চাকরি দেবো। কিন্তু যারা মামলা করে আপনাদের চাকরি আটকে দিচ্ছেন, তাদের চাকরি দিতে বলুন।
কেন্দ্র ললিপপ দেখাচ্ছে
অগ্নিপথ ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী কঠোর সমালোচনা করেন কেন্দ্রীয় সরকারের। তিনি বলেন, ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচন।তার আগে কার্যত বিজেপি মিথ্যে কথা বলে ললিপপ দেখাচ্ছে। কেন্দ্র বলছে অগ্নিপথ প্রকল্পে একবার ২০ হাজার আর একবার ৪০ হাজার ছেলে নেবে। রাজ্যের ভাগ্যে ১ হাজার চাকরি হবে না। আবার যার আয়ু আবার ৪ বছর। ভোট মিটলেই অগ্নিবিরদের বাড়ি পাঠিয়ে দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। বিজেপির ফাঁদে পা দেবেন না। সেনা কে সামনে রেখে চালাকি করছে কেন্দ্রীয় সরকার।৪ বছরের চাকরিজীবন হয় না। চাকরি দিলে ৬০ বছরের জন্য দিতে হবে। সেটা না পারলে মিথ্যে কথা বলবেন না আসলে এটা একটা বিরাট বড় দুর্নীতি।মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন ” খেলাটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুরু করেছিলেন। সারাদেশে আগুন জ্বলায় মুখ পুড়েছে। তাই তারা সেনাবাহিনীকে এগিয়ে দিচ্ছেন। এক কর্নেল চিঠিতে আমাকে লিখেছেন যে রাজ্যের কাছে ডাটাবেস পাঠানো হবে। চার বছর চাকরির পর সেই সমস্ত যুবকদের জন্য রাজ্য চাকরি দেবে।
ভাজপার পাপ আমরা নেব না
নুপুর শর্মা ইসুতেও নাম না করে মোদি সরকারকে একহাত নেন মমতা। তার দাবি, বিজেপির লোক ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর কিছু বললে তাকে গ্রেফতার করা হয় না। যারা ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করছেন তাদের আমরা ছাড়বো না। ওদের পাপ আমরা নেব কেন?বিজেপির ডাস্টবিন আমি পরিষ্কার করতে যাব না। বিজেপিকে নিজেকেই তার নিজের ডাস্টবিন ভ্যানিশ করতে হবে।
সোশ্যাল মিডিয়ার ফেক ভিডিও ছড়ায়
ভাজপার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো ভিডিও ছড়িয়ে মিথ্যা খবর ছড়ানোর অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার অভিযোগ, বিজেপি সোশ্যাল মিডিয়া ফেক ভিডিও দেখায়। মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেয়। ওরা খুন করলেও চর্চা হয় না আমি যদি কথা বলি আমাকে খুনি বানিয়ে দেয়। যারা মিথ্যা কথা বলে, চিটিংবাজি করে তার প্রতিবাদ আমরা করবোই। আমার সব সময় সত্যের পক্ষেই দাঁড়াবো।গ্যাসের দাম কি? কৃষকদের অবস্থা কি। প্রতিবাদ করলেই ইডি, সিবিআই পাঠিয়ে দিচ্ছে বাড়িতে।
শিল্পাঞ্চলের উন্নয়ন
শিল্পাঞ্চলে শিল্পে প্রভুত উন্নয়ন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান,রানীগঞ্জে পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ শেল গ্যাসের ভান্ডার রয়েছে এবং সেই শেল গ্যাস উত্তোলন করতে গ্রেট ইস্টার্ন এনার্জি কর্পোরেশন লিমিটেডের সঙ্গে রাজ্য সরকারের চুক্তি হয়েছে। ওই সংস্থা ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে রানীগঞ্জে। এছাড়াও দুর্গাপুর গ্যাস উত্তোলনের জন্য এসআর গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। তারা ৭ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। মোট ২২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে শিল্পাঞ্চলে। এছাড়াও অন্ডাল বিমাননগরীকে আন্তর্জাতিক বিমাননগরী করা হচ্ছে। বার্নপুরে হবে বিমানবন্দর। দুর্গাপুর মঙ্গলপুরে হবে শিল্প তালুক। অমৃতসর থেকে ডানকুনি পর্যন্ত ফ্রেট করিডর হবে। জঙ্গল সুন্দরী শিল্প তালুক হবে পুরুলিয়ায়।
২০২৪ সালে মমতাই নির্ণায়ক শক্তি
এদিন রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক নিজের ভাষণ দিতে গিয়ে আসানসোলের পরিবর্তনের পর থেকে কি কি উন্নয়ন হয়েছে তার খতিয়ান তুলে ধরেন পাশাপাশি শত্রুঘ্ন সিনহার এই জয় নিয়ে আসানসোল বাসীকে শুভেচ্ছা জানান। অন্যদিকে নবনির্বাচিত সংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা বলেন ২০২৪ এ দেশের নিয়ন্ত্রণ শক্তি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে দিতে হবে। কারণ যে সরকার চলছে তা ভাঙ্গনের সরকার চলছে। জাতির নামে ধর্মের নামে দেশের মধ্যে ভাঙ্গন সৃষ্টি করতে চাইছে। এটা বন্ধ করতে হবে।