Last Updated on August 11, 2021 12:16 AM by Khabar365Din
ঘাটাল থেকে রিপোর্ট অশোককুমার মণ্ডল
৩৬৫ দিন। ঘাটাল। পশ্চিম মেদিনীপুর। আকাশপথে হেলিকপ্টার থেকে নজরদারি করেই ক্ষান্ত না থেকে হাঁটু জলে নেমে ঘাটালের বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী। দীর্ঘকাল ধরেই ঘাটাল সহ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ প্রতিবছর জলাধার থেকে জল ছাড়ার ফলে বন্যার কবলে পড়েন। ক্ষমতায় আসার বহু বছর আগে থেকেই মমতা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান অনুমোদন দেওয়ার জন্য আবেদন করে আসছেন। তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোন সদর্থক পদক্ষেপ দেখা যায়নি। ঘাটালের বন্যা প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করে মুখ্যমন্ত্রী আজও বলেন, জল ছেড়ে দেওয়ার ফলে পরিকল্পিতভাবে এই বন্যা হয়েছে, এটি ম্যানমেড বন্যা। কেন্দ্র সরকার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কোনো সহযোগিতা করছে না। জল ছাড়ার ফলে পরিকল্পিত বন্যা হচ্ছে। কিছুতেই কেন্দ্র সরকার ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের অনুমোদন দিচ্ছে না। ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান রূপায়ণ করা না হলে ঘাটালকে বন্যার হাত থেকে বাঁচানো যাবে না। ছোটবেলা থেকেই ঘাটালের বন্যা দেখে আসছি।
আজ বেলা বারোটা নাগাদ ঘাটাল পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। ঘাটালের বিবেকানন্দ রোড ধরে ঘাটাল পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের ময়রা পুকুর এলাকায় যান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সাথে ছিলেন ঘাটালের সাংসদ দেব, রাজ্যের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র, ডাক্তার মানস ভুঁইয়া, হুমায়ুন কবির, শ্রীকান্ত মাহাতো, শিউলি সাহা,জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ হাজরা ও সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতি, জেলাশাসক রেশমি কমল, পুলিশ সুপার দিনেশ কুমার সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা। মুখ্যমন্ত্রী এলাকার দুর্গত মানুষদের সাথে কথা বলেন এবং কিছু দুর্গত মানুষদের হাতে ত্রান তুলে দেন। এরপর ময়রা পুকুর এলাকায় রাস্তার উপর কতটা জল জমে রয়েছে নিজেই জলে নেমে তার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাদের সমস্যার কথা জানার পরে মমতা বলেন, প্রচুর ঘরবাড়ি ,রাস্তাঘাট ,দোকানপাট, চাষের জমি এখনো জলে ডুবে রয়েছে। জল ছেড়ে পরিকল্পিতভাবে বন্যায় প্লাবিত করা হয়েছে ঘাটাল, খানাকুল, গোঘাট, উদয়নারায়নপুর সহ বিভিন্ন এলাকাকে।
কেন্দ্রের কাছে দরবার
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের অনুমোদন আদায় করে আনার জন্য কেন্দ্রের কাছে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল পাঠাবেন। প্রতিনিধি দলে থাকবেন রাজ্যের মন্ত্রী ও সাংসদরা। সেই প্রতিনিধিদল কেন্দ্রের জলসম্পদ মন্ত্রীর সাথে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে বিস্তারিত ভাবে কথা বলবেন। সেই সঙ্গে তিনি বলেন বন্যায় প্রতিটি মানুষকে পর্যাপ্ত ত্রান দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ত্রান দেওয়া নিয়ে কোন রাজনীতি করা চলবে না। যে সমস্ত সমাজসেবী সংগঠন গুলি ওই এলাকায় দুর্গত মানুষদের হাতে ত্রাণ দিচ্ছে তাদেরকে তিনি প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য জানান। তিনি উল্লেখ করেন ভারত সেবাশ্রমের কথা। ভারত সেবাশ্রমের পক্ষ থেকে ওই এলাকায় বেশ কয়েকদিন ধরে ত্রান দেওয়া হচ্ছে।
দীঘা সুন্দরবন বাঁচাতে প্রকল্প
সুন্দরবন ও দীঘাকে বাঁচানোর জন্য দুটি প্রকল্প তৈরির পরিকল্পনা জানান মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, এই প্রকল্পের রিপোর্ট কেন্দ্র সরকারের কাছে পাঠানো হবে। পাশাপাশি ঘাটালের দুর্গত মানুষদের পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রাণ দেওয়ার জন্য জেলা শাসক ও জেলা প্রশাসন এর আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন। যাতে মানুষ কোন বিপদের মধ্যে না থাকেন সে বিষয়ে খতিয়ে দেখার জন্য এবং দুর্গত মানুষদের পাশে থাকার জন্য তিনি প্রশাসনের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন।