৩৬৫ দিন। দুই ভিন্নধর্মী চিত্রে শেষ হল জুন! শুরুর বৈপরীত্য চোখে পড়ার মত। আষাঢ়ের মাঝামাঝি যোগ বিয়োগের হিসেবে অনেকটাই পিছিয়ে দক্ষিণবঙ্গ। একই অবস্থা কলকাতাতেও। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, জুনে কলকাতায় স্বাভাবিকের থেকে ৫৯ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। স্বাভাবিক বৃষ্টির পরিমাণ, ২৮২.৯ শতাংশ।
কিন্তু, বৃষ্টি হয়েছে ১১৫.৮ শতাংশ। গোটা দক্ষিণবঙ্গে সেই ঘাটতির পরিমাণ, ৪৯ শতাংশ। বৃষ্টি হওয়ার কথা ২৪৭.৯ শতাংশ, বৃষ্টি হয়েছে ১২৭.৬ শতাংশ। দক্ষিণের মধ্যে মুর্শিদাবাদ জেলায় বৃষ্টির ঘাটতি সবথেকে বেশি, ৬৪ শতাংশ। এদিকে, উত্তরবঙ্গ প্রথম থেকেই বর্ষা মঙ্গল। সেখানে স্বাভাবিকের থেকে ৫০ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হওয়ার কথা, ৪৮৪.৬ শতাংশ। কিন্তু, হয়েছে ৭২৭.৫ শতাংশ। গোটা পশ্চিমবঙ্গে সার্বিকভাবে স্বাভাবিকের থেকে ৯ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশ কুমার দাস জানান, মৌসুমী বায়ু দুর্বল। তাই, দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশের পর থেকে একটানা ভারী বৃষ্টি হয়নি। যা হয়েছে বিক্ষিপ্তভাবে। মাঝে দু একবার প্রতিবেশী রাজ্যের ঘূর্ণাবর্ত এবং অক্ষরেখার দরুণ জলীয় বাষ্প ঢুকছিল সমতলে। তার ফলে উত্তরবঙ্গে একটানা ভারী বৃষ্টি এবং দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হচ্ছিল।
কিন্তু, এখন সেভাবে কোন সিস্টেম না থাকায় সক্রিয় নয় মৌসুমী বায়ু।অন্যদিকে, চলতি মরশুমে স্বাভাবিকের থেকে ৩ দিন আগে উত্তরবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করে। স্বাভাবিকভাবে ৬ জুন বর্ষা প্রবেশের দিন, কিন্তু এবার মৌসুমী বায়ু ঢোকে ৩ জুন। অন্যদিকে, দক্ষিণবঙ্গে প্রথম থেকেই বিরূপ ছবি। বর্ষা প্রবেশের স্বাভাবিক দিন ১২ জুন।
কিন্তু ৬ দিন পিছিয়ে গিয়ে বর্ষা প্রবেশ করে ১৮ জুন। তারপর, বিক্ষিপ্তভাবে প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। কলকাতায় মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল কলকাতা সহ মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া সহ একাধিক জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানায় দফতর।
দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, আগামী ৫ দিন কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে বজ্রবিদ্যুত সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা। উত্তরবঙ্গে, ৩০ তারিখ পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। দিন দুয়েক আগেই অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে লাল সতর্কতা জারি করে আবহাওয়া দফতর।