Pujar Khobor : বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে জলের নিচেই চলেছে দেবী আরাধনা, কুমারটুলি পার্কের এবারের থিম অন্বেষণ

0

৩৬৫ দিন। হিমবাহের সারি। সেখান থেকেই নামছে জলের স্রোত। সেই স্রোতের রেশ টেনেই জলের তলায় হারিয়ে যাচ্ছে একের পর এক ইমারত। সেখান, থেকেই শুরু একটা টানেল। যেখানে রয়েছে পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্য।

কিন্তু, সেটাও অর্ধেক জলের নীচে। তারপর, আরও একটা টানেল। সেই টানেলে সমুদ্রের জলযান ভেসে বেড়াচ্ছে, সেই জলযানের রয়েছে মানুষ অর্থাৎ আমরা। আশেপাশে রয়েছে প্রচুর সামুদ্রিক মাছ এবং প্রাণী। আর, তার মাঝেই অন্বেষণ। জলের নিচেই যেন একটা ভগ্ন মন্দির। সেই মন্দিরকে আবিষ্কার করেই চলছে দেবী আরাধনা। কুমারটুলি পার্কের সামগ্রিক ভাবনায় রয়েছেন শিল্পী চন্দন পাল।

থিম প্রসঙ্গে শিল্পী জানান, বিশ্ব উষ্ণায়নের বাড়ছে তাপমাত্রা। গলছে বরফ। অদূর ভবিষ্যতে বাড়বে জলস্তর। কৃষ্টি, সংস্কৃতি হারিয়ে যাবে বিপুল জলরাশির করাল গ্রাসে। সেখান থেকেই মানুষকে সচেতন করার বার্তা দিয়ে জলের তলায় থাকছে প্রতিমা। বেশ কয়েকটি ধাপ পেরিয়ে একেবারে শেষের দিকে, দেখানো হচ্ছে বিশাল বড় পুজো প্রাঙ্গণ। যেখানে কোন এক সময় পুজো মণ্ডপ ছিল, সময়ের সঙ্গে ভগ্ন দশায় এসে জলের নিচে রয়েছে সেটি।

সবমিলিয়ে, জলের যাত্রী সেজে দশর্করা সেই জায়গাটিকে নতুনভাবে দেখতে পাবেন। প্রতিমার ভাবনায় রয়েছেন চন্দন পাল এবং অমল পাল। প্রতিমায় থাকছে তিনটি মুখ। দুর্গাকে মাঝখান রেখে মণ্ডপ প্রদক্ষিণ করার সময় মানুষ যাতে সমানভাবে প্রতিমা দর্শন করতে পারেন, সেই জন্যেই এই ব্যবস্থা। একই আদলে থাকছে তিনটি দিক মুখ। মূলত, ফাইবার, থার্মকল, টিন, কাঠের তক্তা ইত্যাদি ব্যবহার করেই হচ্ছে মণ্ডপ।

এই নিয়ে পুজো কমিটির সম্পাদক পবিত্র বসাক জানান, বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং তার ফলে মানুষের সমস্ত সৃষ্টি সমস্ত জলের তলায় চলে যাওয়া নিয়ে এবারের বিষয়বস্তু। জলের তলায় কোন এক মন্দির। সেখানে মহা আড়ম্বরে দুর্গাপুজো হচ্ছে। সেটাকেই এখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। উষ্ণায়নের কারণে আরও জলস্তর বাড়বে। আমাদের অস্তিত্ব জলের তলায় চলে যাবে। সমস্ত সৃষ্টি জলের তলায় চলে যাবে। সেখান থেকেই এবারের থিম অন্বেষণ।

তিনি আরও বলেন, ৩০ তম বর্ষ পদার্পণ করল এবারের পুজো। সমস্ত সরকারি গাইডলাইন মেনেই পুজো করা হবে। এছাড়া, প্রতিবারের মত এবারও স্যানিটাইজার, মাস্ক, সব ব্যবস্থাই থাকছে। প্রসঙ্গত, গত বছর নতুন প্রাণের উৎসবকে নিয়েই কলরব সৃষ্টি করেছিলেন শিল্পী চন্দন পাল। থিম ছিল কলরব। শিল্পী জানান, বাঙালির উৎসব প্রবণতা রয়েছে যথেষ্ট।

কোন উৎসবকে সফল করার জন্যে একেবারে ঝাঁপিয়ে পড়ে উৎসবপ্রেমী মানুষ। সেখান থেকেই করোনা আবহের সঙ্গে পৃথিবীতে প্রতিদিনের নতুন প্রাণের সঞ্চার হওয়ার বিষয়টাকেই যুক্ত করার চেষ্টা করেছি। এত মৃত্যুর মাঝেও নতুন প্রাণের জন্ম। সেই প্রাণ কিভাবে উৎসবের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হচ্ছে সেটাই বিষয়বস্তু।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here