Last Updated on September 21, 2022 11:16 PM by Khabar365Din
৩৬৫দিন। নরওয়ের রাজধানী অশ্লো থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত স্ট্যাভেঞ্জার শহর। বিশ্বের উত্তর ভাগের একেবারে শেষ প্রান্ত। আর সেখানেই একেবারে স্বতন্ত্রধারায় পূজিত হন দেবী। কলকাতার, কুমারটুলি নয়! বিদেশের মাটিতে নিজেদের উপরেই ভরসা রাখছেন প্রবাসী বাঙালিরা। তাই, প্লাস্টার প্যারিসের ওপর শোলার থেকে শুরু করে রং তুলির শেষ টান। সবটাই, নিজেদের কাঁধে।
প্রবাসী পুজো উদযাপনের এই ধারায় এবারও হচ্ছে না ব্যতিক্রম। ১২ মাসে ঘ্যানঘ্যানে বৃষ্টি, স্যাঁতস্যাতে ঝাপসা আকাশের তোয়াক্কা না করেই বাঙালিয়ানায় মেতেছেন দীপ্তিমান দাস-রা।১৩ বছর ধরেই পৃথিবীর একেবারে শেষ প্রান্তে দুর্গাপূজোর আয়োজন করে চলেছে নরওয়ের বঙ্গভারতী স্ট্যাভেঞ্জার । পুজো প্রসঙ্গে পূজোর অন্যতম উদ্যোক্তা দীপ্তিমানবাবু, পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কর্মী জানাচ্ছেন, নরওয়েতে এমনিতেই বসতি কম বাঙালির সংখ্যাও কম।
বিদেশের আর পাঁচটা জায়গার মতো, এখানে এত বাঙালি নেই। ২০০৯ সালে প্রথম শুরুটা। দুর্গা ঠাকুরের প্রিন্ট আউট বাধিয়ে নিয়ে পুজো করা হয়। এরপর, ২০১০ সালে প্রতিমা তৈরি করি। তিন চার বছর অন্তর অন্তরই প্রতিমা তৈরি হয়। শুধুমাত্র প্রতিমার শাড়ি, গয়না ও সাজানোর কিছু জিনিস কুমোরটুলি থেকে আনা হয়। বাকিটা নিজেরাই করি। প্রথম বছর ৩ থেকে ৪ টি পরিবার মিলে পুজো শুরু করেছিলাম। এখন ৩০ থেকে ৩৫ জনের মতো রয়েছি। শোলা এবং প্লাস্টার অফ প্যারিস ব্যবহার করে ৫ থেকে ৭ ফুটের প্রতিমা, নিজেরাই তৈরি করি।
তিনি যোগ করে বলেন, যদিও, নরওয়েতে পুরোহিত না মিললেও কলকাতেই থেকেই ভিডিও কলের মাধ্যমে দুর্গার ঘটে ফুল পড়ে। কলকাতার পুরোহিত মশাই নিজের বাড়ি বসেই ভিডিও কলের মাধ্যমে পৌঁছে যান নরওয়ের এই পুজো মণ্ডপে। একেবারে নিয়ম মেনে পুজোর নির্দেশ দিয়ে যান। ষষ্ঠীর বোধন হোক কিংবা অষ্টমীর অঞ্জলি সবটাই অনলাইনের কলকাতার থেকে বলে যান পুরুত মশাই। উল্লেখ্য, প্রবাসে বাঙালিদের মধ্যে উইকএন্ড পুজোর প্রচলন বেশি।
তবে, সেই ধারা থেকে বেরিয়ে এখানে একেবারে পঞ্জিকা ধরে সমস্ত নিয়ম মেনেই করা হয় দেবী আরাধনা। সন্ধিপুজোর থেকে আরম্ভ করে মহাষ্টমীর অঞ্জলি কিংবা বিসর্জনের আগে প্রতিমা বরণ। বাদ যায় না পুজোর কোনও নিয়মই। পাশাপাশি, থাকে উৎসবের মাঝে বাঙালি ভোগ। সঙ্গে পুজোর সন্ধ্যায় সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
সবমিলিয়ে, প্রবাসের বাকি সব পুজোগুলি থেকে একেবারে আলাদা। বিদেশের মাটিতে পূজিত দুর্গার বেশিরভাগই বায়না হয় কলকাতার কুমারটুলি থেকেই। যদিও, উচ্চতায় কাটছাঁট থাকে। আর, সেই প্রতিমা জাহাজে করে পাড়ি দেয় বিদেশের মাটিতে।