৩৬৫ দিন। একটা রাজবাড়ী! সামনেই দালান, রয়েছে কামান, দেওয়াল ঘড়ি। একটু এগিয়ে বাড়ির চত্বরে প্রবেশ করলেই দেখা যাবে একটি মন্দির। আর সেই মন্দিরেই অস্টধাতুর এক বিরাট মূর্তি। চলছে আদির আহ্বান। শোভাবাজার বেনিয়াটোলা সার্বজনীনের পুজোয় এবার এমনটাই দেখবেন দর্শক।
এই প্রসঙ্গে পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিত বাবু জানান, প্রতিমার ওজন ১ টনের বেশি। সোনা, রূপা, পিতল, তামা, ব্রঞ্চ সব দিয়েই এই মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। গোটা মূর্তিতেই রয়েছে সোনালী আভা। উচ্চতা ১১ ফুট। শিল্পী মিন্টু পালের নির্দেশে তৈরি করা হয়েছে এই মূর্তি। মেদিনীপুরের মহিশাদল থেকে আনা হয় প্রতিমা। তিনি যোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই চিন্তাভাবনা করা হচ্ছিল। কিন্তু, করোনার কারণে বাধা পড়ে।

এবার ৭৮ তম বর্ষ। বেনিয়াটোলা সার্বজনীনের নিজস্ব মন্দির রয়েছে। সেখানেই মহালয়ার পরের দিন প্রতিষ্ঠা করা হবে এই দেবী মূর্তি। এখন শুধুমাত্র পুজোর সময় নয়। সারা বছরই দর্শকরা পুজো দিতে পারবেন। সারা বছরই দুর্গা বন্দনা চলবে। পুজো চারদিনের মধ্যে আটকে থাকবে না। গত দু বছর করোনা থাকায় সেভাবে থিম পুজো হয়নি। সবেকিভাবেই পুজো হয়। পুজোর থিমের ভাবনায় রয়েছেন সুদীপ্ত কুন্ডু চৌধুরী। তিনি জানান, থিমের নাম আদি আহ্বান।
পুরোনো দিনের বাড়ি, জমিদার বাড়ির আদলে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। পুরোনো দিন একসঙ্গে থাকার প্রবণতা, হৈ চৈ হুল্লোড় সেটাকেই ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। শিল্পীর স্বতন্ত্র ভাবনায় তৈরি হয়েছে এই জমিদার বাড়ি। ঢুকেই দালান, সেখানে কামান, দেওয়াল ঘড়ি। বসার জায়গা। ভিতরে থাকবে ঠাকুর থান। দোতলা বাড়ি, কড়ি বরগা দেখানো হবে। একবারে ভিতরে রাখা থাকছে প্রতিমা। মূলত থর্মকল, ফাইবার, কাপড়, প্লাই ইত্যাদি ব্যবহার করা হচ্ছে মণ্ডপে।
উল্লেখ্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর শহরে আনা হয়েছে এই দেবী প্রতিমা। আবেগের এই উৎসবের প্রারম্ভেই পাড়ার আট থেকে সকলেই মেতে ওঠেন শারদ আনন্দে। ক্রেনের সাহায্যে মন্দিরে প্রবেশ করানো হয় মূর্তি। জানা গিয়েছে, মহালয়ার পরের দিন অর্থাৎ প্রতিপদে এই মূর্তি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকেই নিত্যদিনের আরাধনা মতই বিধি মেনে চলবে পুজো। সাধারণ মানুষ সারা বছরই পুজো দিতে পারবেন।