জ্যোতি বসু রিসার্চ সেন্টারে কী শেখানো হবে? বানতলা,আনন্দমার্গীর মতো গণহত্যা,গণধর্ষণের পাঠ?

0

Last Updated on July 8, 2022 9:06 PM by Khabar365Din

৩৬৫দিন। পৃষন গুপ্ত। ১. সিপিএম নিয়ে কথা বললেই কিছু পাঠক আর প্রিয়জন রে রে করে তেড়ে আসে। ওদের থিওরি হল যে পার্টিটা অপ্রাসঙ্গিক হতে হতে, হিরো থেকে জিরোতে পরিণত হয়েছে, তাদের নিয়ে আবার কথা কিসের! ৩৬৫ দিন ছাড়া আর কেউ সিপিএমকে মনে রেখেছে বলে মনে হয় না। এই অভিযোগটা আমি মানি না। হতে পারে, সিপিএমের ভোট ৪ পারসেন্টে এসে ঠেকেছে। হতে পারে পর পর দুটো ভোটে শূন্য পেয়েছে। হতে পারে একটার পর একটা ভুল সিদ্ধান্তের পর শুধু বাংলা থেকে নয়, ত্রিপুরা থেকেও মুছে যাচ্ছে। হতে পারে পার্টিটার আপাদমস্তক নেতৃত্বে ভুলভাল। হতে পারে সুজন সেলিম ও অধীর-মান্নান চক্র পার্টিটাকে আস্তাকুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে। হতে পারে তীব্র মমতা বিদ্বেষের ফলে এই সিপিএমই ভাজপা ও ভাইজানের ভোট বাড়িয়েছে। হতে পারে এদের বামরাম জোটের হাত ধরে একদিকে ভাজপা কাঁধে চড়েছে, অন্যদিকে বামভাই ল্যাং মেরে ভাঙড়ের সিটটা জোব্বার ভরেছে। হতে পারে ১১ বছরে এদের নখ, দাঁত সবই ভেঙে গেছে, কিন্তু ক্ষমতার লোভটা তো যায়নি। সিপিএমের ৪. ভোতা মুখ দিয়ে দেখুন এখনও লালা গড়াচ্ছে। এসব কিছুই হতে পারে, তবু আমি বাংলায় সিপিএমকে ভাজপার মতোই সমান গণতন্ত্রের এবং মনুষ্যত্বের শত্রু বলে মনে করি। যেকোনও শুভবুদ্ধি মানুষকে ভাজপাকে ঘেন্না করতে হবে। ঠিক যেমন একইভাবে সিপিএমকেও ঘেন্না করতে হবে। এটাই সুস্থ সচেতন সমাজের প্রথম প্রাসঙ্গিক কাজ।

२. গণতন্ত্রের স্বার্থে বা শর্তে দেশে বা রাজ্যে সরকার পরিবর্তন হতেই পারে। বিশ্বের ইতিহাসে সরকারের মুল্য কতদিন ক্ষমতায় আছে তা দিয়ে পরিমাপ হয় না, হয় কতজন মানুষের উপকার করতে পেরেছে সেই মানদণ্ডে। ১১ বছর সরকারে আছে তৃণমূল, আর ৩৪ বছর সরকারে ছিল সিপিএম। আমায় বলতে হবে না, বাংলার মানুষ প্রমাণ করে দিয়েছে, কেন তারা তৃণমূলকে চায়, সিপিএমকে আর ফেরত চায় না। তৃণমূল সরকার মানুষের অন্তরে ঢুকতে পেরেছে, সেই সরকার কতটা কাজ করেছে তার মানদন্ডে। তিনগুণ বেশি সময় ক্ষমতায় থেকেও বাংলার মানুষ শূন্য করে দিল সিপিএমকে আর দুহাত ভরে উপহার দিল মমতাকে। কেউ কেউ বলেন, সিপিএম তো দাঙ্গা করে না, ভাজপা করেছে। আমি বলি দাঙ্গা শুধু হিন্দু মুসলমানে হয় না, দাঙ্গা সিপিএম–অসিপিএমেও হয়। মহামান্য বিলেত ফেরত ব্যারিস্টার হবে। জ্যোতিবাবুর আমলে (অত পাট ভাঙ্গা, ধবধবে সাদা ধুতি পাঞ্জাবি দেখে সন্দেহ হত, ভেতরটা কুচকুচে ৫. কালো, কৃষ্ণকায় অমানবিকতাকে ঢাকতে অত বেশি ফর্সা ধুতি পাঞ্জাবি) মরিচঝাঁপি একটি দাঙ্গা, যেখ ানে গণহত্যা হয়। আনন্দমার্গীদের জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা একটি দাঙ্গা, যেখানে গণহত্যা হয়। বানতলা একটি দাঙ্গা, যেখানে গণহত্যা হয়। একুশে জুলাই একটি দাঙ্গা, যেখানে গণহত্যা হয়। সুটিয়া একটি দাঙ্গা, যেখ ানে গণধর্ষণ হয়। নানুর একটি দাঙ্গা যেখানে গণহত্যা হয়, কেশপুর একটি দাঙ্গা, যেখানে গণহত্যা হয়। এগুলির প্রতিটি রাষ্ট্রীয় মদতে করা হয়। জ্যোতিবাবুর রাষ্ট্রীয় মদত ছাড়া বাকি কীর্তি হল ক্ষমতায় আসার আগেই সাইবাড়ি গণহত্যা, নেতাই গণহতা এবং নন্দীগ্রাম গণহত্যা। উত্তরাধিকার সূত্রে বুদ্ধবাবু পরবর্তী গণহত্যাগুলি করে উঠতে পেরেছিলেন। এগুলো কি গোধরা বা উত্তরপ্রদেশের গণহত্যা গুলির থেকে একবিন্দু কম অপরাধ? ইতিহাসের বিচারে মোদি-অমিত-যোগী যদি দাঙ্গাবাজের শিরোপা পান, তবে একই কাঁটার মুকুট উঠবে জ্যোতিবাবু বুদ্ধবাবুর মাথায়।

७. কমিউনিস্টদের চরিত্র সারা পৃথিবীতে একই হয়। স্তালিন মাও-কিম যে পদ্ধতিতে রাষ্ট্রের ক্ষমতায় থেকে যান সেই একই পদ্ধতি যে জ্যোতিবাৰু অনুসরণ করবে, তা স্বাভাবিক ও প্রত্যাশিত। বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের মুশকিল হল ভেতরে মা কালী ভক্ত হলেও গায়ে একটা প্রগতিশীলতার নামাবলি চড়িয়ে রাখে। এই ভন্ড বুদ্ধিজীবীরা সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে ভয় পায়। এদের অধিকাংশই বাম আমলে সিপিএম ছিলেন এখন তৃণমুল হয়েছেন বাইচান্স যদি ভাজপা ক্ষমতায় আসত তাহলে এরা ভাজপা হত। প্রগতিশীল থাকতে হলে গৈরিকীরণের বিরুদ্ধে কথা বলা যায় (এটা ওদের বাইবেল আনন্দবাজার শিখিয়েছে) কিন্তু ফাসিস্ট ও দাঙ্গাবাজ জ্যোতিবাবুর প্রকৃত মূল্যায়ণ করে একটি প্রবন্ধও লেখা যায় না। লিখলে দাদারা চোখ রাঙাবেন, পুরস্কার পেতে হলে বাম প্রগতিশীল হতে হয়। তাই এই ভন্ডদের ভাজপা বিরোধিতা দেখে বিবমিয়া হয়।

৪. বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করছি দলের সর্বস্তর থেকে বিমান বোস, রবীন দেবদের তাড়িয়ে দেওয়ার পরও জ্যোতি বসুর জন্মদিন উপলক্ষে বার্ষিক বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠানে সেই বৃদ্ধাশ্রম থেকেই কমরেড ভাড়া করে আনতে হচ্ছে। মুশকিল হল যে, টুম্পা সোনাদের দিয়ে ফ্ল্যাশ ডান্স হয়, দ্বান্দিক বস্তুবাদ বক্তৃতা হয় না। আর লোক দেখিয়ে গাছ পোঁতার ভড়টা আর কেন? ওটা ঠিক জ্যোতিবাবুর স্টাইল নয়। জ্যোতিবাবুর সেন্টার যখন, গণহত্যার দিন ফিরিয়ে আনুন, টম্পা সোনাদের হাতে মেশিন ধরিয়ে দিন, লাল, সাদার ফর্মুলা শেখান, মহিলা সমিতিদের সংগঠিত করে বিরোধী বুদ্ধিজীবীদের বাড়িতে হামলা চালান, বামরাম জোট তো আছে, অসুবিধা কী? কমরেড বিকাশকে নিয়ে কোর্টে যান, সেন্ট্রাল ফোর্স নামান, রাজ্যের পুলিশ ফোর্সকে ছুটি করে দিন, বুথ দখল করুন, সেলিমের ভাইজান গ্রুপকে কাজে লাগান। মহারাষ্ট্র স্টাইল তো এখানে হবে না, এখানে জ্যোতিবাবুর স্টাইল দরকার। ভায়োলেন্স, ভায়োলেন্স। টেরর, টের চাই টেরর। খেটেখুটে করতে পারলে কমরেড আপনাদের শূন্য থেকে মহাশূন্যে যাওয়ার অভিযানটা ডেফিনিটলি খানিকটা অন্য চেহারা নেবে। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি। রামেরা একটু কোণঠাসা আছে, এইসময় ওদের হাত ধরে জ্যোতিবাবুর স্টাইলকে মাথায় রেখে বাংলায় ভূতের কেত্তনে নেমে পড়ুন। কুছু তো হবে।

৫. ওগো সিপিএম, এতদিনে নিশ্চয়ই বুঝেছো, মমতা তোমাদের হাত থেকে বাম ব্যাটনটা কেড়ে নিয়েছেন। ওখানে ঢুঁ মেরে আর লাভ হবে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here