Last Updated on July 28, 2021 7:19 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। সিপিআইএম (এল)এর সম্পাদক, কট্টর মাওবাদী কমিউনিস্ট, ব্যক্তি হত্যা, মূর্তি ভাঙা ও সশস্ত্র আন্দোলনে বিশ্বাসী এই বিপ্লবী প্রয়াত হন কলকাতার জেলে। পার্টিতে চারু মজুমদারকে ডাকা হত কমরেড চেয়ারম্যান বলে। ১৯৬৭ সালে উত্তরবঙ্গে নকশালবাড়িতে পুলিশের হত্যার পরে কৃষকদের সংগঠিত করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলনের ডাক দেন চেয়ারম্যান চারু। হত্যা চিহ্নিত করে ব্যক্তি হত্যার নীতিও তিনি প্রতিষ্ঠিত করেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের বিশেষজ্ঞদের মতে, চারুবাবু পুরোটাই চিনা কমিউনিস্ট পার্টির মডেল অনুসরণ করেন। প্রসঙ্গত মাও’এর আগে চেয়ারম্যান শব্দটি ব্যবহৃত হত। মাও এর রেড বুক অবলম্বনে বেশ কিছু স্লোগানও চারুবাবু বাংলায় জনপ্রিয় করেন। যেমন, ‘চিনের চেয়ারম্যান আমাদের চেয়ারম্যান’, ‘বন্দুকের নলই শক্তির উৎস’, ‘শ্রেণি শত্রুকে হত্যাই একমাত্র সশস্ত্র বিপ্লবের পথ’ ইত্যাদি। সিপিএমকে শোষণবাদী বলে আলাদা দল তৈরি করার ব্যাপারে চারুবাবুই ‘নকশালবাড়ি’ আন্দোলনের প্রধান মুখ ছিলেন। সেই সময় গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী ছিলেন কানু সান্যাল ও ছাত্র নেতা অসীম চট্টোপাধ্যায় (কাকা)। পরে চারুবাবুর পার্টি লাইনকে অসীমবাবু চ্যালেঞ্জ করেন এবং সেটাই নকশালবাড়ি আন্দোলন ভেঙে যাওয়ার প্রধান কারণ। কুখ্যাত কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের আমলে জেলে চারুবাবু প্রয়াত হন। বৃষ্টি ভেজা এক রাতে গভীর অন্ধকারে ডুবে থাকা কলকাতায় কার্ফু করে সশস্ত্র পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীর ঘেরা টোপে পুলিশ মর্গের গাড়িতে আতঙ্কগ্রস্ত প্রশাসন বিপ্লবী কমরেড চারু মজুমদারের মরদেহ কেওড়াতলা মহাশ্মশানে নিয়ে আসা হয়। শ্মশানে স্ত্রী ও দুই নাবালক সন্তান ছাড়া আরও কাউকে ঢোকার অনুমতি দেয়নি গুন্ডা সিদ্ধার্থ’র হার্মাদ পুলিশ। কমরেড চেয়ারম্যানের প্রয়াণে বাংলায় কমিউনিস্ট বিপ্লবের সম্ভাবনা সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়ে যায়।