Last Updated on May 27, 2022 10:10 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশনায় নতুন ফেলুদা সিরিজ ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’-র প্রথম ভাগ তৈরি হচ্ছে ‘দার্জিলিং জমজমাট’ (Darjeeling Jawmjawmat) কাহিনিকে ঘিরে। ফেলুদার দুই উপন্যাস ছিন্নমস্তার অভিশাপ, ও গ্যাংটকে গন্ডগোল অনলাইন প্ল্যাটফর্মে দারুন সাফল্য পাওয়ার পরই সৃজিত (Srijit Mukerjee) পরবর্তী দুই উপন্যাস নিয়ে কাজ শুরু করার পরিকল্পনা করেন। সিরিজের নাম ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি। যার প্রথম গল্পটি দার্জিলিং জমজমাট। ১৯৮৬ সালে এটি প্রকাশিত হয়। এবারে পটভূমি দার্জিলিং। ফেলুদাকে (Feluda) আমরা রূপালী পর্দার জগতে প্রথম দেখি বোম্বাইয়ের বোম্বেটেতে, যখন বলিউডের চিত্রনির্দেশক পুলক ঘোষাল লালমোহন বাবুর গল্প থেকে একটি চলচ্চিত্র বানানোয় হাত দেন। সেই গল্পে ফিল্মও বানানো হয়, আর ফেলুদা তারই মাঝে বোম্বাইয়ের এক বড় চোরাচালানকারীকে জব্দ করে। যাই হোক, তার বছরখানেক পরে পুলকবাবু আবারও লালমোহনবাবুর আরেকটি গল্প থেকে নতুন একটি সিনেমা বানানো শুরু করেন, আর দৃশ্যধারণের জায়গা হিসেবে বেছে নেওয়া হয় দার্জিলিং শহরটিকে। ফেলুদা ও তোপসের ইচ্ছে ছিল যে শুটিং দেখার সাথে সাথে তাদের প্রথম গোয়েন্দাগিরির জায়গাটিতে আরেকবার ঘুরে আসার, কিন্তু সেখানে গিয়ে যে তাদের আরেকবার তদন্তে নামতে হবে, তা কে জানত?

পুলক ঘোষাল আমাদের সঙ্গে তার ছবির হিরো রাজেন্দ্র রায়না, হিরোইন সূচন্দ্রা আর ভিলেন মহাদেব বর্মার আলাপ করিয়ে দিলেন। ইন্টারেস্টিং লাগল মহাদেব বর্মাকে। যাকে বলে ইংরেজিতে পালিশ করা ভিলেন। চোখ ঢুলু ঢুলু, ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি,নাকের নীচে সরু গোঁফ।

প্রথম দিন ম্যালে এসে ভদ্রলোকের সঙ্গে আলাপ হয়ে গেল। ফেলুদাকে দেখেই পুলকবাবু এগিয়ে এলেন, সঙ্গে একজন ফেল্ট হ্যাট ও স্যুট পড়া ভদ্রলোক। ইনি হলেন মিস্টার বিরূপাক্ষ মজুমদার। এনার বাড়িতেই শুটিং হচ্ছে। চলুন, একদিন দেখে আসি।

আমি নয়নপুর ভিলার উত্তরে থাকি। বাড়িটার নাম দ্য রিট্রিট, আর আমার নাম হরিনারায়ণ মুখার্জি। নমস্কার। নমস্কার। ইয়ে, আপনারা কি তদন্তের কাজে এসেছেন? অজ্ঞে না, ছুটি কাটাতে।

পায়ের শব্দটা এগিয়ে আসছে। তারপর হটাৎ কুয়াশার ভিতর থেকে একটা ছায়ামূর্তি বেরিয়ে এল। মুখটা ভালো করে দেখার আগেই ফেলুদাকে সজোরে ধাক্কা মারল খাদ্যের দিকে। ফেলুদা টাল সামলাতে না পেরে,পাহাড়ের গা দিয়ে গড়িয়ে মুহূর্তের মধ্যে নিচে অদৃশ্য হয়ে গেল।

একটা গাছের গুড়ির পাশে একটা ঝোপ। আর সেই ঝোপের পিছনে একজোড়া জুতো পড়া পা দেখা যাচ্ছে। এগিয়ে গিয়ে দেখবে? ফিসফিস গলায় জিজ্ঞেস করল লালমোহনবাবু। ঝোপটা পেরোতেই বুঝতে পারলাম। একটা লাশ পড়ে আছে মাটিতে। একে আমরা চিনি। লোকনাথ বেয়াড়া।

ভেতরের ঘর থেকে এক বিচিত্র খাতা এনে ফেলুদার হাতে দিলেন। বিচিত্র খাতা, তাতে সন্দেহ নেই। আপনি দেখছি লন্ডনের কাগজ থেকেও কাটিং সংগ্রহে রেখেছেন? খুন, রাহাজানি, হত্যা, ডাকাতি কিছুই বাদ নেই দেখছি। আজে হ্যাঁ, আমার এক বন্ধু লন্ডন থেকে পাঠাত।

মগজাস্ত্র আর কোল্ট. ৩২ নিয়ে ফের একবার ওটিটি মঞ্চে ফিরতে চলেছেন ফেলুদা। সৌজন্য পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। গত চারমাস আগেই দার্জিলিং জমজমাট সিরিজের শুটিং শুরু হয়। নিজেই সোশাল মিডিয়ায় ছবি শেয়ার করে খবর জানিয়েছিলেন।যথারীতি ফেলুদার ভূমিকায় থাকছেন টোটা রায়চৌধুরী (Tota Roy Chowdhury), লালমোহন বাবু এবং তোপসের ভূমিকায় যথাক্রমে হাজির অনির্বাণ চক্রবর্তী (Anirban Chakraborty)এবং কল্পন মিত্র। আগের বারও সৃজিত টেক্সট বই ফলো করেছিলেন। এবারও ব্যতিক্রম নয়। তিনি জানেন সত্যজিতের উপন্যাস, গল্প চিত্রনাট্যের ভাবনা থেকেই লেখা। সিনেমাটিক একটা স্টাইল যেন সারাক্ষন লেখনীতে তিনি সচল রেখেছেন। সৃজিত সেটাই অনুসরণ করেছেন। অত্যন্ত বুদ্ধিমানের মতোই ফেলুদাপ্রেমী সৃজিত তাই উপন্যাসের ইলাস্ট্রেশনগুলোকেও খুব গুরুত্বপূর্ণ সিনেমাটিক এলিমেন্ট হিসাবে ট্রিট করেছেন তাঁর শুটিংয়ে। যে স্টিল ফটো আমরা পেলাম,তা যেন সত্যজিতের স্কেচকেই অনুসরণ করছে। এখানে দুর্দান্ত ভাবে সফল সৃজিত। প্রথম পর্বের শুটিং হয়েছে কলকাতায়। তারপর বাকি দার্জিলিঙে সিরিজের বাকি দৃশ্য শুটিং হয়েছে।প্রথম দিনের শুটিং হয়েছিল কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। অপেক্ষাকৃত ফাঁকা অংশে শুটিং হয়েছিল, সৃজিত শেয়ার করেছিলেন সেই ছবি ।