বিনা পারমিটে বিপুল সংখ্যায় জঙ্গলে যাওয়াতেই বাঘের হানায় মৃত্যু বাড়ছে সুন্দরবনে

0

Last Updated on September 19, 2020 6:40 AM by Khabar365Din

সৌগত মন্ডল। ৩৬৫ দিন। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সুন্দরবনের বাঘের হানায় প্রাণ গেছে অন্তত 28 জনের। সরকারি হিসেবে সংখ্যাটা 18। মূলত সরকারি পারমিট বিহীন চোরা শিকারিদের বিচ্ছিন্নভাবে বাঘের হানায় মৃত্যু হলে সরকারি খাতার সঙ্গে বাস্তব পরিসংখ্যানটা আলাদা। গত তিন দিনেই সুন্দরবনের বাঘের হানায় মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।
সাধারণত সুন্দরবন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে জঙ্গলের মধ্যে বাঘের আক্রমণে কিছু মৎস্যজীবীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও শীতের সময় জঙ্গলে পর্যাপ্ত খাবারের অভাবে লোকালয়ে চলে আসতো রয়েল বেঙ্গল টাইগার। কিন্তু এবারে যাবতীয় পরিসংখ্যান তছনছ করে দিয়ে বাঘের হানায় মৃত্যু সংখ্যাটা বেড়ে গিয়েছে অস্বাভাবিক হারে। কারণ খুঁজতে গিয়ে উঠে আসছে বেশ কয়েকটি বাস্তব সমস্যা।
এই প্রসঙ্গে সুন্দরবন এলাকায় মৎস্যজীবী এবং বাঘের হানায় মৃত মৎস্যজীবীদের বিধবাদের সামাজিক প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসা শিক্ষারত্ন পুরস্কারে ভূষিত অমল নায়েক বলেন, এবারে বাঘের হানায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার সবথেকে বড় কারণ হল করোনা এবং তার ফলে দেশজুড়ে লকডাউন এ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে কাজ হারিয়ে সুন্দরবনের বিভিন্ন গ্রামে ফিরে আসা মানুষ বনদপ্তরের পারমিট এর তোয়াক্কা না করেই পেটের দায় ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে চলে যাচ্ছেন জঙ্গলের কোর এলাকাতে। সাধারনত জঙ্গলে যাওয়ার প্রধান নিয়ম হচ্ছে অন্তত দুজন জঙ্গলের দিকে মুখ করে পাহারায় থাকে এবং বাকি দুইজন বা তিনজনে অথবা মউলে নিজেদের কাজ করে। কিন্তু গত কয়েক মাসে বড়জোর দু’জন বা তিনজন করে ছোট্ট ছোট্ট ডিঙ্গি নৌকা নিরাপত্তা বালাই না করেই জঙ্গলে চলে যাচ্ছে কাঁকড়া ধরতে অথবা মধু পাড়তে। তাই লোক কম থাকায় এবং অভিজ্ঞতার অভাবে জঙ্গলের দিকে তারা নজর রাখছে না। সেই সুযোগে সহজ শিকার পেয়ে যাচ্ছে বাঘ।
এছাড়াও পারমিট না নিয়ে লুকিয়ে জঙ্গলে ঢোকার ফলে মৎস্যজীবীদের জন্য নির্দিষ্ট জঙ্গলে যেভাবে জাল দিয়ে ঘেরা থাকে, সেই এলাকায় না গিয়ে বনকর্মীদের ফাঁকি দিতে এরা চলে যাচ্ছে জঙ্গলের একেবারে গভীর এলাকায় যেখানে কোন জাল ঘেরা নেই।
তাই এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক স্তরে সুন্দরবন এলাকার গ্রামগুলিতে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য চেষ্টা করতে হবে আরও বেশি করে। এছাড়াও আমফানের সুন্দরবন প্রচুর হরিণ কমে যাওয়ার পাশাপাশি চলতি বছরে সমীক্ষায় বাঘের সংখ্যা বাড়ার তথ্য উঠে এসেছে। তাই বাঘের খাবারের অভাব একটা বড় কারণ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here