Last Updated on September 24, 2020 6:33 PM by Khabar365Din
“অদ্ভুত মামলা! যিনি গাঁজা খেতেন তিনি তো প্রয়াত, আর ৫৯ গ্রাম গাঁজা কেনার অপরাধে একজন জেল খাটছে। অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল ব্যাখ্যা করুন, কেন এটা মাদকচক্রের মামলা?”
অরুণাংশু চক্রবর্তী, আইনজীবী
এ তো ভয়ানক অদ্ভুত মামলা। একটা গাজা খাওয়ার মামলা। যে গাঁজা খেত সে মারা গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই গাঁজা কেনা অথবা খাওয়ার অভিযোগে তাকে অপরাধী করে আর শাস্তি দেওয়া যাবে না। আবার যে বা যারা নাকি গাঁজা কিনে তার কাছে পৌঁছে দিত তারও কোনো প্রমাণ নেই। পরিমাণটাও এতটাই নগণ্য যে তা নিয়ে পাড়ার পুলিশ ফাঁড়িও মাথা ব্যথা করে না। তাই রিয়া চক্রবর্তী-সহ তার ভাই এবং অন্যান্যদের সুশান্ত সিং রাজপুতকে গাঁজা সরবরাহের মামলায় গ্রেফতার করে জেল খাটানোর পরিকল্পনা যে খুব একটা ধোপে টিকবে না, তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।
রিয়া চক্রবর্তী-সহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ওঠা মাদক চক্রে যুক্ত থাকার মামলায় শুক্রবার অভিযুক্ত আব্দুল পরিহার, স্যামুয়েল মিরান্ডা ও দীপেশ সোয়ান্তের জামিনের আবেদন শোনে বোম্বে হাইকোর্ট।বিচারপতি এস ভি কোটয়াল বলেছেন এটা একটা অদ্ভুত মামলা। ভবিষ্যতেও বহু মামলার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এই তদন্ত এবং তার মামলা। অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেলকে ডেকে বিচারপতি জবাব চেয়ে বলেছেন, এই মামলায় যে সমস্ত ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তা আদৌ প্রযোজ্য কীনা তার ব্যাখ্যা দিতে হবে।
এই মামলায় বলা হচ্ছে সুশান্ত সিং রাজপুত গাঁজা খেতেন আর তাকে গাঁজা পৌঁছে দেওয়া এবং মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন রিয়া-সহ বাদবাকিরা। কিন্তু যে গাঁজা টাকা দিয়ে কিনেছেন কিংবা গাঁজা খেয়েছেন সেই সুশান্ত সিং রাজপুত এখন নেই। মারা গেছেন। এবং যে পরিমাণ গাঁজার কথা বলা হচ্ছে সেটা মাত্র ৫৯ গ্রাম। যা অত্যন্ত যৎসামান্য। শুধু তাই নয় সবচেয়ে বড় ব্যাপার এই ৫৯গ্রাম পরিমাণ গাঁজাও উদ্ধার হয়নি। প্রশ্ন এখানেই তাহলে কিসের ভিত্তিতে মামলাটি দাড়ালো । যিনি গাঁজা খেতেন তিনি মারা গেছেন, আর যে সামান্য পরিমাণ গাঁজার কথা বলছে তা কখনোই কমার্শিয়ালি কগনিজেবল কোয়ান্টিটি নয়। ১ কেজির নিচে।তাহলে কি করে ২৭ এ ধারা দেওয়া হল? অভিযুক্তদের আইনজীবী বলছেন, যে মাদক খেলো সে বেঁচে নেই, কি করে মাদক খাওয়া প্রমাণ করবে? আইন অনুযায়ী মাদক খেলে ১ বছরের জেল হয়। আর এই মামলায় যারা মাদক পাচারের সঙ্গে অভিযুক্ত বলে বলা হচ্ছে তাদের ১০ বছরের জেল হওয়ার ধারা কি করে দেওয়া হল। এটা তো হতে পারে না।
এভাবে মাদক চক্র প্রমাণ করবে কি করে? আর যাকে ঘিরে মাদক পাচারের মামলাটি হয়েছে সেই তো জীবিত নেই। প্রমাণ করা মুশকিল। নারকোটিকস এর মামলার মাদক বাজেয়াপ্ত না হলে কোন কিছু প্রমাণ করা প্রায় অসম্ভব। এই মামলা যে কখনো ধোপে টিকবে না, বিচারপতির মন্তব্যেই তা স্পষ্ট হয়ে গেছে ।