Last Updated on August 5, 2022 6:00 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। নয়াদিল্লি। সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হিসেবে মনোনীত হয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের প্রবীণতম বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত। চলতি মাসের ২৭ অগাস্ট দেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন ইউ ইউ ললিত। কিন্তু তার আগেই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে তাঁর মনোনয়নে ভাজপা শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিচার ব্যবস্থার দখল নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বিগত প্রায় ৪ দশক ধরে সুপ্রিম কোর্টে কংগ্রেসের এক প্রথম সারির আইনজীবী নেতা। তাঁর অভিযোগ, দেশের সাংবিধানিক সংস্থাগুলিতে যেভাবে নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ দখল করছেন তার নবতম সংযোজন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদ।
শুধুমাত্র অমিত শাহকে সোহরাব উদ্দিন শেখ ও এনকাউন্টার মামলা এবং তুলসী রাম প্রজাপতি মামলায় বাঁচিয়ে দেওয়া এবং বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় আর এস এস নেতা ও উত্তরপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংয়ের আইনজীবী হিসেবে কাজ করার রেকর্ড থাকার জন্যই যাবতীয় নিয়ম ভেঙে সরাসরি আইনজীবী থেকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হয়ে গিয়েছিলেন ললিত। এবারের হয়ে গেলেন প্রধান বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, ২০০৪-এর এপ্রিলে তিনি সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে নিযুক্ত হন। নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার মাস তিনেকের মধ্যেই ২০১৪ সালের ১৩ অগাস্ট কৌঁসুলি ইউ ইউ ললিত সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হন। তিনি একেবারে আইনজীবী থেকে প্রধান বিচারপতির আসনে বসেছিলেন। ২০১৯ সালে অযোধ্যা মামলার রায়দানের জন্য যে বিচারবিভাগীয় বেঞ্চ গঠিত হয়, সেই বেঞ্চ থেকে স্বেচ্ছায় সরে আসেন ললিত। উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংহ-এর সঙ্গে একটি বিশেষ মামলায় সম্পর্কিত হওয়ার জন্য বেঞ্চে তাঁর উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী-সমাজকর্মী রাজীব ধবন। দেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হলেও সেই পদে বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের মেয়াদ খুব বেশিদিন নয়। তিনমাসের কিছু কম সময় তিনি সেই পদে বহাল থাকবেন। কারণ এই বছরের ৮ নভেম্বর তিনি অবসর নেবেন।
হিটলারের কায়দায় একনায়কতন্ত্র মোদির
অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ আইনজীবী এবং পরবর্তীকালে বিচারপতি হওয়া ললিত সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে মনোনীত হওয়ায় আজ কেন্দ্রের ভাজপা সরকারের বিরুদ্ধে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, হিটলারও তো নির্বাচন জিতেছিল। কীভাবে তিনি সেই নির্বাচন জিততেন? কারণ জার্মানির প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের উপরে তাঁর নিয়ন্ত্রণ ছিল। আমার হাতে নির্বাচন ব্যবস্থা তুলে দিন, আমি দেখিয়ে দেব কীভাবে নির্বাচন জিততে হয়। প্রত্যেকটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান বর্তমানে ভাজপা ও আরএসএসের অধীনে রয়েছে। আমার কাজ হল আরএসএস-কে আটকানো এবং তা করবই। আমি যত এই কাজ করব, ততই আমার উপরে আক্রমণ বাড়বে।
রাহুল গান্ধী বলেন, বর্তমানে দেশে কোনও গণতন্ত্র নেই। আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি না, বিক্ষোভ দেখাতে পারছি না, বিক্ষোভ দেখালেই লোকসভা-রাজ্যসভা থেকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের দেশে একনায়কতন্ত্র চলছে। গণতন্ত্র মারা গিয়েছে।
আমরা গণতন্ত্রের মৃত্যু দেখছি। সাত দশক ধরে আমরা এক একটা ইট জুড়ে গণতন্ত্র তৈরি করেছিলাম, তা পাঁচ বছরেই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের চোখের সামনে গণতন্ত্রকে ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। যারাই একনায়কতন্ত্রের চিন্তাধারার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে, তাদের উপরই নৃশংসভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে, গ্রেফতার করা হচ্ছে, জেলে ভরা হচ্ছে এবং মারধর করা হচ্ছে। বিরোধী দলগুলিকে তাদের দাবি-দাওয়া ও বক্তব্য তুলে ধরতে দেওয়া হচ্ছে না কারণ সরকার সাধারণ মানুষের সমস্যা যেমন মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্বের কথা শুনতে চায় না। তারা কেবল ৪-৫ জনের স্বার্থসিদ্ধির জন্য কাজ করছে এবং দুইজনের নেতৃত্বে বড় বড় ২-৩ জন শিল্পপতির জন্য সরকার কাজ করছে।