Last Updated on July 6, 2021 8:23 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। সামনেই কঠিন লড়াই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে। অথচ দেশের ভাজপা শাসিত প্রতিটি রাজ্যের দলের নেতাদের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ব্যাকুল বাসনায় ভাঙ্গনের মুখে একাধিক রাজ্যের সরকার। সেই দিকে তাকিয়ে এবারে একসঙ্গে ৮ রাজ্যের রাজ্যপাল বদল করলো মোদি সরকার। তবে রাজভবনের মর্যাদা নষ্ট করে ভাজপা রাজনৈতিক এজেন্ট হিসেবে রাজভবনে বসে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছেন বলে কেরালা এবং বাংলার সরকারের পক্ষ থেকে আরিফ মহাম্মদ খান এবং জগদীপ ধনকর এর অপসারণের দাবি করা হলেও এ যাত্রায় কোনমতে চাকরি বাঁচিয়েছেন তাঁরা। যদিও তা অত্যন্ত সামরিক এবং শর্তসাপেক্ষ বলে নয়াদিল্লির রাজনৈতিক মহল সূত্রে জানা গিয়েছে।
আজ সকালেই রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে একটি তালিকা প্রকাশ করে নয়া রাজ্যপাল নিয়োগের কথা জানানো হয়। তালিকায় তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে রয়েছে এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নাম। কর্ণাটকের রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োগ করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাওয়ারচাঁদ গেহলোটকে। মিজোরামের রাজ্যপাল পিএস শ্রীধরন পিল্লাইকে গোয়ার রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োগ করা হল। এদিকে বর্তমানে হরিয়ানার রাজ্যপাল পদে থাকা সত্যদেব নারায়ণ আর্যকে নিয়োগ করা হল ত্রিপুরার রাজ্যপাল পদে। এদিকে হিমাচলপ্রদেশের রাজ্যপাল বন্দারু দত্তত্রেয়কে করা হল হরিয়ানার ননতুন রাজ্যপাল। এছাড়া বিশাখাপট্টনমের ভাজপা সাংসদ তথা অন্ধ্রপ্রদেশ ভাজপার প্রাক্তন সভাপতি হরি বাবু কামভাপতিকে নিয়োগ করা হচ্ছে মিজোরামের রাজ্যপাল হিসেবে। মাঙ্গুভাই ছগনভাই প্যাটেলকে নিয়োগ করা হল মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল হিসেবে। এছাড়া গোয়া ভাজপার নেতা রাজেন্দ্র বিশ্বাথ আরলেকরকে নিয়োগ করা হল হিমাচলপ্রদেশের রাজ্যপাল পদে।
যে রাজ্যগুলিতে তড়িঘড়ি রাজ্যপাল পদে বদল আনা হলো সেই রাজ্যগুলিতে সম্প্রতি ভাজপা সংগঠনের নেতারা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন বলে মনে করছে ভাজপা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। হরিয়ানা, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, ত্রিপুরা – প্রতিটি ভাজপা শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্যের ভাজপা নেতারা যেভাবে একে অন্যের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছেন তার জন্য কার্যত রাজ্যে ভাজপা কার্যকরী সভাপতি হিসেবে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ করা হলো বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ঠিক যেমনভাবে হরিয়ানায় সমপ্রতি সংকটে পড়েছে ভাজপা নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার।
অন্যদিকে বাংলার রাজ্যপাল এবং কেরালার রাজ্যপাল দুজনেই সংশ্লিষ্ট দুই রাজ্যের শাসকদলের মুখ্যমন্ত্রীদের বিরুদ্ধে লাগাতার রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা চালানোর অভিযোগে দেশ জুড়ে তীব্র সমালোচনার পাশাপাশি তৃণমূল এবং বামেদের পক্ষ থেকে বারেবারে প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির কাছে তাদের অপসারণের দাবি তোলা হয়েছিল। তবে এই দুই রাজ্যপাল এবারে অপসারণের তালিকা একেবারে উপরের দিকে থাকলেও সম্প্রতি পরিস্থিতির কিছুটা বদল হয় বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের তিনদিনের দিল্লি সফরে। দিল্লিতে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এর কাছে পরপর দুদিন হাজিরা দেওয়ার পাশাপাশি অসংখ্য ভাজপা কেন্দ্রীয় নেতা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি শুধুমাত্র বাংলার রাজ্যপাল পদে নিজের চাকরি টিকিয়ে রাখার তাগিদে। এই পরিস্থিতিতে ভাজপা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সূত্রে জানা গিয়েছে তাঁকে কিছুদিনের সময় দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত মমতা বিরোধিতা ছেড়ে বিপুল ম্যান্ডেট নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য বাংলার ক্ষমতায় আসা মমতা এবং তৃণমূলের সঙ্গে বোঝাপড়া করে চলতে নির্দেশ দেওয়া হয় তাকে। এর পরেই মমতার সরকারের লিখে দেওয়া ভাষণ করতে বিন্দুমাত্র আপত্তি জানাননি তিনি। ভাজপা সূত্রে জানা গিয়েছে বাংলা এবং কেরালার রাজ্যপাল কে অপসারণ করে তাদের জায়গায় নতুন ভাজপা ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের রাজ্যপাল করে পাঠানোর জন্য স্ট্যান্ডবাই তালিকা তৈরি রাখা আছে।