বাংলায় গরু পাচারে CBI কি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা? গরুর গুঁতোয় আটকে ঢাকা-দিল্লি বাণিজ্য চুক্তি

0

Last Updated on August 21, 2022 4:56 PM by Khabar365Din

গৌতম লাহিড়ী। খবর ৩৬৫ দিন। নয়াদিল্লি।

গরু-মোষ নিয়ে বিপাকে দিল্লি। মাংস রপ্তানিতে অনঢ় হওয়ায় ঢাকার সংগে মুকতো বাণিজ্য চুকতি বিশ বাঁও জলে। বাংলাদেশ সম্প্রতি স্বল্প উন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। এই কারণেই প্রথম নয়াদিল্লি ঢাকাকে প্রস্তাব দেয় সার্ক ভুকতো দেশের অধীনের ‘সাফটা’ (দক্ষিণ এশিয়া মুকতো বাণিজ্য ঢুকতি) অকার্যকর হয়ে যাবে। সাফটা বাবদ বাংলাদেশ শুল্ক মুকতো পণ্য রপ্তানির যে সুযোগ পেয়ে আসছিল সেটা থাকবে না। তাই ‘সুসংহত আর্থিক অংশীদারি চুকতি বা সেপা স্বাক্ষর করা দরকার। বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রী সম্প্রতি ভারতে আসেন। তখন তিনি ‘সেপা’ চুকতি স্বাক্ষরের বাংলাদেশ সরকারের সরকারের সম্মতি দেন।

সবই চলছিল ঠিকঠাক। গোল বাঁধালো গরু। মার্চ মাসেই বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রকের এক অফিসার পর্যায়ের দল দিল্লি আসে। উভয় দেশ নিয়ে যৌথ সমীক্ষা দল গঠিত হয়। এঁরাই বিবেচনা করছিলেন কোন কোন পণ্য ভারত বাংলাদেশকে পাঠাবে এবং বাংলাদেশ বিনিময়ে কোন পণ্য পাঠাবে। এইসব পণ্যে শুল্ক মুকতো হবে। চলবে অবাধ বাণিজ্য । গুজরাট ও উত্তরপ্রদেশের মাংস ব্যবসায়ীদের স্বার্থ বিবেচনা করে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রক চুকতির মধ্যে গো-মোষ মাংস অর্ন্তভুকতো করার প্রস্তাব দেন।

ওতেই বাংলাদেশের মাথায় হাত। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে জেলায় জেলায় গো প্রজনননের স্টার্ট আপ তৈরি হয়েছে অসংখ্য। বহু যুবক এই ব্যবসায়ে নেমেছেন। খুব সহজেই ‘অ্যানিমাল ফার্মিং’ মুনাফা হওয়া শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে বাংলাদেশ গরু প্রজননে আত্মনির্ভর হয়ে উঠেছে। এই সময়ে যদি আইনী পথে ভারতের গরু ও মোষ মাংস বাংলাদেশে রপ্তানি হয়,তাও আবার বিনা শুল্কে,তাহলে গজিয়ে ওঠা স্টার্ট আপ গুলোর কি হবে? বাংলাদেশ সাফ জানিয়ে দিয়েছে ভারত চাইলে মাংস রপ্তানি করতে পারে। তবে তাঁরা কাউন্টার ভেলিং ডিউটি বা অতিরিকতো শুল্ক বসাবেন। যাতে বাংলাদেশের মাংস ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

গরুর লেজেই আটকে গেলো বহু প্রতীক্ষিত বাণিজ্য চুকতি। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি সফরে দিল্লি আসছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সংগে দ্বিপাক্ষিক

বৈঠক হবে। অন্যান্য অনেক বিষয়ের মধ্যে বাণিজ্য চুকতির গরুর গুঁতো নিয়েও কথা হবে। এটা নিশ্চিত এবারের হাসিনার সফরে চুকতি হওয়া সম্বভ নয়।

সম্প্রতি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর দ্বিপাক্ষিত দ্বিবার্ষিক বৈঠক গুলোতে ভারতের পক্ষ থেকে গরু পাচার অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে থাকে। আর প্রতিবারই বাংলাদেশ থেকে বলা হয় এসব বিষয় অতীতের কাহিনী। এখন বাংলাদেশের তো প্রয়োজন নেই। যদিও কিছু এখনও পাচার হয়ে থাকে। বিএসএফ কেন প্রয়োজনীয় নজরদারি করছে না সেই প্রশ্নও ওঠে। গরুর গুঁতোয় এখন সুসম্পর্ক তিকতো হতে চলেছে। বর্ষীয়ান গরু, মোষকে যদি আইনী পথে রপ্তানি করা যেতো তাহলে এই বেআইনী পথে পাচার হতো না। এই বিষয়ে কি কারণে কেন্দ্রীয় সরকার নীরব তা অজানা। কারণ সম্ববত একটাই গরু নিয়ে রাজনীতির দিন শেষ হয়ে যাবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here