Balasore Rail Accident: লাইনে ছড়িয়ে দেহ, রক্তে ভাসছে নয়ানজুলির জল, বিভীষিকাময় বালাসোর! নিহতের সংখ‍্যা বেড়ে ২৩৮, জখম ৯০০

0

Last Updated on June 3, 2023 1:12 PM by Khabar365Din

৩৬৫ দিন। ওপর থেকে দেখলে মনে হবে রেল লাইনের ওপর যেন খেলনার মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলা হয়েছে ২৩ খানা বগি। কয়েকটা আবার পড়ে রয়েছে লাইনের পাশে নয়ানজুলিতে। চারিদিকে শুধুই রক্ত, ইতিউতি পড়ে কামরার ভাঙা অংশ, দেহাংশ, যাত্রীদের সামাল। ক্রেন গ‍্যাস কাটার দিয়ে এক একটা বগি সরানো হচ্ছে আর থরে থরে বেরিয়ে আসছে নারী পুরুষ শিশুর দেহ। এই ছবি এতোটাই মর্মান্তিক যে উদ্ধারকারী দলের সদস‍্যরাও যেন হাফিয়ে উঠছেন। শুক্রবার রাত ১১ টা পর্যন্ত যে মৃতের সংখ‍্যা ছিল ১০০, শনিবার ভোরে সরকারি ভাবে সেই সংখ‍্যা পৌঁছে যায় ২৩৮। জখম ৬০০।

যদিও ওড়িশা সরকারের একাধিক সূত্রের দাবি, বালাসোরের বিভীষিকাময় এই রেল দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ‍্যা ৪০০ ছাড়াতে পারে, জখম ৯০০। এমন মারাত্মক ভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে যে কবে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে মৃত আহতের সংখ‍্যা নিশ্চিত ভাবে বলা যাবে তা বলতেই পারছেন না উদ্ধারকারীরা। তবে উদ্ধারে কোনও ফাঁক রাখা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন।তারা। আহতদের যাতে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায় তার জন‍্য শতাধিক অ্যাম্বুলেন্স তৈরী রাখা হচ্ছে। তবে সময় যত এগোচ্ছে আর জীবিত কোনও যাত্রীকে উদ্ধারের সম্ভবনা কমছে। সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হল করমণ্ডল এবং যশবন্তপুর দুটি ট্রেনের-ই অসংরক্ষিত কামরা দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। সেখানে কত জন ছিলেন তার কোনও হিসেব নেই রেলের কাছে। ফলে প্রকৃত মৃতের সংখ‍্যা নিয়ে বাড়ছে আশঙ্কা।

দুর্ঘটনাস্থলে নবীন-অশ্বিনী

শনিবার সকাল ৯ টা নাগাদ দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব, তার কিছু আগে পরিদর্শন করে যান ওড়িশার মুখ‍্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। কথা বলেন প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে। ওড়িশা সরকার উদ্ধারকাজে সবরকম ভাবে সহায়তা করছে বলে জানান তিনি। অন‍্যদিকে রেলমন্ত্রীকে দুর্ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কি ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা হবে। একেবারে গোড়াতে পৌঁছে তদন্ত হবে। প্রধানমন্ত্রী রিভিউ মিটিং ডেকেছেন সেখানেও দুর্ঘটনা নিয়ে আলোচনা হবে।

‘কবজ’ নিয়ে কুলুপ

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে দোমহনী রেল দুর্ঘটনার পর রেলের ‘কবজ’ নিয়ে যে প্রতিশ্রুতি করেছিলেন রেলমন্ত্রী তার কি হল! কবজ অর্থাৎ রেলের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে অত‍্যাধুনিক ব‍্যবস্থা। দুটি ট্রেন এক লাইনে চলে এলে অত‍্যাধুনিক সেন্সর পদ্ধতির মাধ‍্যমে তা আগে থেকেই চালক জানতে পারবেন এবং তিনি এমারজেন্সি ব্রেক কষলেও ট্রেন বেলাইন হবে না বা হলেও তার অভিঘাত হবে সামান‍্য আর চালক যদি ট্রেন নাও থামান তাহলেও অটোমেটিক ট্রেন থেমে যাবে। পূর্ব দক্ষিণ পূর্ব সহ রেলের সব শাখায় এই ব‍্যবস্থা চালু হবে বলে জানিয়েছিল রেল। তা যে হয়নি তার প্রমাণ বালাসোরের দুর্ঘটনা। যাত্রিবাহী ট্রেন ছাড়া মালবাহী ট্রেনে ‘কবচ’ পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে, এমন কোনও পরিকল্পনাও এখনও রেলের নেই। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস ওড়িশার বালেশ্বরের কাছে একই লাইনে দাঁড়িয়ে-থাকা একটি মালগাড়ির পিছনে ধাক্কা মেরে লাইনচ্যুত হয়েছে। তা-ই এক্ষেত্রে ‘কবচ’ প্রযুক্তি কাজ করার কথাও ছিল না। কিন্তু এই দুর্ঘটনার পরে মালগাড়িতেও ‘কবচ’ প্রযুক্তি ব্যবহার করা প্রয়োজনীয় কি না, সেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এই নিয়ে এ দিন প্রশ্ন করা হলেও কোনও উত্তর দেননি রেলমন্ত্রী।