Last Updated on December 21, 2020 5:06 PM by Khabar365Din
বাংলায় বিজেপির কোন হাওয়া নেই। সবটাই মিডিয়ার বানানো চমক। সরকার মমতার।
৩৬৫ দিন। অনুগত সংবাদমাধ্যম যতই কৃত্রিম হাইপ তুলুক, প্রকৃতপক্ষে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে দুই সংখ্যা পার হতেই হিমসিম খাবে। এই টুইট সেভ করে রাখুন, যদি বিজেপি এর থেকে ভাল করে আমি নিজের জায়গা ছেড়ে দেব! এভাবেই বিজেপির উদ্দেশ্যে খোলা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন তৃণমূলের ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর।
আসলে গত কিছুদিনে দুয়ারে সরকার কর্মসূচি এবং স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের সমস্ত মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী করার পরেই বিজেপির জনসংযোগ টিম রাজ্য জুড়ে তৃণমূল বিরোধী একটা হাওয়া তুলে দেয়। যে হাওয়াতে বাংলার সাধারণ মানুষের পাশাপাশি অনেকেই রীতিমতো বিশ্বাস করতে শুরু করেন শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়া মাত্রই তার সঙ্গে আরো অন্তত ৭০-৭৫ তৃণমূল বিধায়ক বিজেপিতে চলে যাবেন এবং সংখ্যালঘু হয়ে ভেঙে পড়বে মমতার সরকার। এই প্রচারকে মিডিয়া হাইপের মাধ্যমে সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য দায়িত্ব নেয় কয়েকটি অনুগত টিভি চ্যানেল এবং সংবাদমাধ্যম। থেকে যে কারণে কলকাতায় এসে বিজেপির সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে বিশেষ ডিনার পার্টিতে গোপন বৈঠকে বসেন বাংলার এক মিডিয়া ব্যারন।
মূলত রাজনীতিতে যত বেশি সম্ভব নাটকীয়তা এনে সাধারন মানুষকে সেই নাটক দেখার জন্য কার্যত বাধ্য করেছে বিজেপির পিআর টিম। কারণ বাস্তবের বদলে মানুষ এখন অনেক বেশি অবাস্তব ম্যাজিক গ্রহণ করার দিকে ঝুঁকেছে। গোটা দেশে যেখানে বিজেপি বা মোদী ম্যাজিক উড়ে গেছে, বিহারে কোন মতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে সরকার গঠন করতে হয়েছে সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বাংলায় বিজেপি সুনামি আসছে বলে দাবি করা হচ্ছে। বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় দাবি করেছেন, বাংলায় বিজেপি সুনামি চলছে। তাই আগামী নির্বাচনের পরে দেশ একজন ভোট প্রকৌশলীকে হারাবে।
তবে আজ তৃনমূলে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরকে এইভাবে মিডিয়া হাইপের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়তে হচ্ছে একটাই কারণে, কারণ গত কিছুদিনে বাংলায় বিজেপির তৈরি করা রাজনৈতিক নাটকীয় প্রচারকে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়নি। যেখানে শুধুমাত্র একটা স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প বা একটা দুয়ারে সরকার কর্মসূচির সাফল্যকে সামনে রেখেই যে কোন সরকার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে যেতে আসতে পারে, সেখানেও বাংলা জুড়ে একটা ধারণা বিজেপির তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে যে যে কোন মুহূর্তে সংখ্যালঘু হয়ে পতন হবে মমতা সরকারের।
এই যে কত মাস খানেক ধরে শুভেন্দু অধিকারী পদত্যাগ করে বিজেপিতে যাবেন বলে প্রচার চালানো হচ্ছিল, তাও অত্যন্ত পরিকল্পিত। এই যে শুভেন্দু অধিকারী কে ঘিরে তিনি আজ বিধায়ক পদ ইস্তফা দিলেন বা দল ছাড়লেন, ধারাবাহিকভাবে একেক দিনে ভিন্ন ধরনের প্রচারের পেছনে রয়েছে বিজেপির সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা।