Last Updated on July 24, 2022 4:53 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। আহমেদাবাদ। নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের গড় গুজরাটে বসে এবারে নরেন্দ্র মোদীর অর্থনীতিকে তীব্র আক্রমণ করলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধান মোহন ভাগবত। একদিকে যেমন নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে মুখে আত্মনির্ভর ভারতের স্বপ্ন দেখিয়ে চললেও সর্বকালীন রেকর্ড ভেঙে চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ গুলি থেকে আমদানির পরিমাণ কয়েকশো গুন বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমেছে ভারত থেকে বিদেশে রপ্তানি জাত পণ্যের পরিমাণ এবং স্বাভাবিকভাবেই তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমতে শুরু করেছে ভারতের ভাঁড়ারে রপ্তানি জাত ডলারের পরিমাণ।
প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কা যেমনভাবে অর্থনৈতিক দেউলিয়া হয়ে গোটা দেশে জরুরি অবস্থার মুখে পড়তেও হয়েছে ঠিক তেমন পরিস্থিতি খুব তাড়াতাড়ি ভারতে তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও মত প্রকাশ করলেন আরএসএসের একাধিক শীর্ষ তাত্ত্বিক নেতা।
দেশে আকাশ-ছোঁয়া বেকারত্ব নিয়ে এবার উদ্বেগ প্রকাশ করলো রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস। গতকাল আহমেদাবাদে আরএসএস-এর সর্বভারতীয় প্রতিনিধি সভার বৈঠক হয়েছে। সেখানেই বেকারত্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সঙ্ঘের শীর্ষ নেতৃত্ব। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ এবং আরএসএস অনুমোদিত লঘু উদ্যোগ ভারতী নামক সংগঠনের সর্বভারতীয় সভা উপলক্ষে উপস্থিত ছিলেন মোহন ভাগবত। সেখানে ভারতের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী জমানায় দেশের বর্তমান অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন যে পথে দেশের অর্থনীতিকে পরিচালনা করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তা কার্য তো ভ্রান্ত বলে মত প্রকাশ করেন ভাগবত। আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদি সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনায় মুখ খোলার জন্য নরেন্দ্র মোদি র রাজনৈতিক ধাত্রীভূমি গুজরাত কে বেছে নেওয়ার পেছনে আরএসএস বনাম ভাজপা লড়াইয়ের চরম ক্ষণ উপস্থিত বলে মনে করছে দেশের রাজনৈতিক মহল।
মোদী জমানায় রেকর্ড বেকারত্ব নিয়ে লাগাতার সরব ছিলেন বিরোধীরা। উত্তরপ্রদেশ সহ পাঁচ রাজ্যের ভোটের পর এবার বিরোধীদের সুরেই সুর মেলালেন আরএসএস। সম্ভবত এই প্রথম আরএসএস-এর শীর্ষ নেতৃত্ব দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে।
বেকারত্বের সমস্যাকে গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করে আরএসএস-এর প্রতিনিধি সভায় একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে, যেখানে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার জন্য সমগ্র সমাজকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে বলা হয়েছে। প্রস্তাবে দেশের চাহিদা অনুযায়ী ভারতীয় অর্থনৈতিক মডেল তৈরীর কথা বলা হয়েছে, যা মানবকেন্দ্রিক, লেবার ইনটেনসিভ এবং ইকোফ্রেন্ডলি হবে। দেশে আরও কর্মসংস্থান তৈরির জন্য দেশীয় শিল্প এবং সেক্টরগুলিতে ফোকাস করার কথা বলা হয়েছে। গ্রামীণ কর্মসংস্থান, অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং কৃষিভিত্তিক শিল্পে জোর দিতে হবে। এছাড়াও মহিলাদের কর্মসংস্থান এবং অর্থনীতিতে মহিলাদের সামগ্রিক অংশগ্রহণের মতো ক্ষেত্রগুলোকে বাড়ানো দরকার বলে বলা হয়েছে প্রস্তাবে।
সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৮.১ শতাংশ যা গত ৬ মাসে সর্বোচ্চ। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অর্থাৎ দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর ঠিক আগের মুহূর্তে বেকারত্বের হার ছিল ৭.৭৬ শতাংশ।