অভিযোগ। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে বেআইনিভাবে মেলার মাঠ ঘেরার কাজ শুরু

0

Last Updated on September 28, 2020 4:08 PM by Khabar365Din

৩৬৫ দিন: বোলপুর। মুক্ত পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে স্বপ্ন নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বভারতী গড়ে তুলেছিলেন সেই ধারণাকে বদলে দিয়ে আজ সকাল থেকেই শুরু হলো বিশ্বভারতী এবং সংলগ্ন মেলার মাঠ ঘিরে ফেলার কাজ। বোলপুরের সাধারণ মানুষ এবং এই মেলার মাঠে বহু যুগ ধরে পৌষ মেলার সময় ব্যবসা করে আসা ব্যবসায়ী সমিতির কোন আপত্তিকে পাত্তা না দিয়েই কার্যত একতরফাভাবে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী পৌষ মেলার মাঠকে ফেন্সিং দিয়ে ঘেরার কাজ শুরু করলেন। আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে বাংলার সংস্কৃতির ঐতিহ্যের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে যাওয়া এই মেলার মাঠ ঘিরে ফেলার কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে।

তবে যেভাবে রবীন্দ্রনাথের গড়ে তোলা বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য ভেঙে এবং পাঁচিল তোলা যাবে না বলে সুপ্রিম কোর্টের রায় কে সম্পূর্ণ অমান্য করে কলকাতা হাইকোর্ট নিযুক্ত চার সদস্যের হাই পাওয়ার কমিটির অনুমোদনকে হাতিয়ার করে বিশ্বভারতী বর্তমান কর্তৃপক্ষ মেলার মাঠ কে জনসাধারনের নাগালের বাইরে নিয়ে যেতে চাইছে বলে তীব্র প্রতিবাদ করে ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুব্রত ভকত কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।
তিনি জানান, বিশ্বভারতীর এই স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি আমরা, যাতে পৌষ মেলার মাঠ কোনমতেই ঘিরে ফেলা না হয় এই আবেদন জানাতে। শনিবার মেলার মাঠকে কিভাবে ঘেরা হবে সে নিয়ে হাইকোর্ট নিযুক্ত চার সদস্যের কমিটি এবং বিশ্বভারতীর উপাচার্য, আশ্রমিকদের, ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যদের নিয়ে বৈঠক হয়। কিন্তু সেই বৈঠকে উপাচার্যের সাথে সহমত পোষণ করে চার সদস্যের কমিটি জানিয়ে দেয় মেলারমাঠ ঘেরা হবে। এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ব্যবসায়ীরা মাঝপথেই বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান। যাদের জন্য গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় সৃষ্টি করেছিলেন সেই ছাত্র-ছাত্রীদের কোন প্রকার মতামত নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি চার সদস্যের কমিটি সহ বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বৈঠকের খবর পেয়ে সেখানে হাজির হয় বিশ্বভারতীর বেশকিছু ছাত্র-ছাত্রী। সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ছাত্র-ছাত্রীরা সাফ জানিয়ে দেয় মেলার মাঠ ঘেরা হবে এটা তারা কোনোভাবেই সমর্থন করছে না। কিন্তু কারো আবেদন কে গ্রাহ্য না করে নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থেকে সোমবার থেকে মাঠ ঘিরে ফেলার সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে ফেলল বিশ্বভারতী। প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর জানিয়েছেন, চার সদস্যের কমিটি যা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তাই হচ্ছে। নতুন করে কিছু বলার নেই। যদিও এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছেন আশ্রমিক সুবোধ মিত্র। তিনি জানিয়েছেন গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বপ্নকে পদদলিত করে মেরে ফেলছে বর্তমান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত জানিয়েছেন, হাইকোর্ট বিষয়টি নিয়ে চার সদস্যের কমিটি নিযুক্ত করেছে সমস্ত বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে বিচারপতিকে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য। কিন্তু এই কমিটি কখনোই ফেন্সিং দিয়ে মাঠ ঘিরে ফেলতে হবে বলে সিদ্ধান্ত দিতে পারেনা। কেন এত তাড়াহুড়ো করা হলো তা বোধগম্য হচ্ছে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here