প্রাকৃতিক নিয়মে আশ্রম এগিয়ে আসছে সাগর এর দিকে, কপিলমুনির আশ্রমকে সাগরের গ্রাস থেকে বাঁচাচ্ছে টেট্রাপড

0

Last Updated on November 15, 2023 7:55 PM by Khabar365Din

৩৬৫ দিন। আগে দু কিলোমিটার দূরে ছিল সাগরের দূরত্ব। গঙ্গাসাগরে কপিলমুনি আশ্রমের থেকে দু কিলোমিটার দূরে অবস্থান করতো সাগর। কিন্তু যত সময় এগোচ্ছে ততই ততই সাগরের থেকে কপিলমুনি আশ্রমের দূরত্ব কমছে। সাগর থেকে কপিলমুনি আশ্রমের ব্যবধান কমে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০০ মিটারের কাছাকাছি। এত দ্রুত সময় যদি সাগরের জল কপিলমুনির আশ্রমের দিকে এগোতে থাকে তাহলে খুব দ্রুতই কপিলমুনি আশ্রম জলের তলায় চলে যাবে। এই অবস্থায় যেন পড়তে না হয় সেদিকে তীক্ষ্ণ নজর রেখেছে রাজ্য প্রশাসন। দুভাবে এই সমস্যার সমাধান করতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। এক, ৯’ কোটি টাকা ব্যয় করে টেট্রাপট নামের একটি মেশিন বসানো হয়েছে কপিলমুনির আশ্রমের সামনে। যদি জল ওই মেশিনের ওপর এসে ধাক্কা মারে তাহলে মেশিনটি সাগরের ঢেউকে ভেঙে দেবে এবং জলকে সাগরের দিকে ঠেলে দেবে।

একইসঙ্গে মেশিনটি যেই এলাকায় সাগরের ঢেউ আসবে সেই এলাকায় পলি জমতে সাহায্য করবে। অতিরিক্ত পলি জমার ফলে ওই এলাকায় আর যতই সাগরের জল এসে ধাক্কা মারুক না কেন, পলির বাঁধ সেই জলকে প্রতিরোধ করবে। জল কোনোভাবেই কপিল মুনির আশ্রমের দিকে আসতে পারবে না। দ্বিতীয় উপায়টি হল, কপিলমুনির আশ্রমে পুজো দেওয়ার আগে সকলেই গঙ্গাসাগরে চান করেন, এবং তারপর কপিল মুনির আশ্রমে পূজা দেন। কপিলমুনির আশ্রম থেকে সাগর পর্যন্ত সরলরেখার মতো পথটি হল দু’নম্বর পথ। এই পথে আর যাতায়াত করা যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্য নতুনভাবে যে অঞ্চলে টেট্রাপট রয়েছে সেই অঞ্চল দিয়ে সাগর থেকে কপিলমুনির আশ্রমে যাতায়াত করা যাবে। দুই এবং তিন এই পথ দিয়েও কপিল মুনির আশ্রমে যাতায়াত করা খুব দ্রুত বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর।

অর্থাৎ ১,৪,৫,৬ রাস্তা দিয়ে সাগর থেকে কপিল মুনির আশ্রমে আসা যাবে। এইবার আগামী ২৬ জানুয়ারি থেকে গঙ্গাসাগর মেলা শুরু হচ্ছে। ইতিমধ্যেই পুজোর আগে সেচ মন্ত্রী এসে এক প্রস্থ বৈঠক করে গিয়েছেন। মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা এই প্রসঙ্গে বললেন, ‘সাগরে চান করে কপিল মুনির আশ্রমে যাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। তা না হলে খুব দ্রুত কপিল মুনির আশ্রম জলের তলায় চলে যাবে। একদিকে যেরকম কপিল মুনির আশ্রমের সামনে টেট্রাপট ক্রমাগত তার কাজ করে চলেছে অন্যদিকে মুড়িগঙ্গায় সম্প্রতি ড্রেজিং এর কাজ শুরু হয়েছে। এবার গঙ্গাসাগর মেলার পরিকাঠামো আরো সুদৃঢ় করা হচ্ছে যাতে আরো বেশি সংখ্যায় পুণ্যার্থী গঙ্গাসাগর মেলায় আসতে পারেন।’ প্রসঙ্গত, কয়েক বছর আগেও গঙ্গাসাগর মেলায় কপিল মুনির আশ্রম থেকে সাগর পর্যন্ত বালির ওপর ইট ফেলে কৃত্রিমভাবে রাস্তা তৈরি করা হয়। রাস্তার পাশে স্থায়ী ভাবে দোকান তৈরি করা হয়েছে। গোটা গঙ্গাসাগর অঞ্চল জুড়ে একাধিক জায়গায় নানান হোটেল কিংবা থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের একটা অংশ মনে করছে, বালির ওপর পাথর ফেলে কিংবা জল বুজিয়ে কিংবা নিচু জায়গাকে উঁচু করে তাতে থাকার ব্যবস্থা করে গঙ্গাসাগরের ভারসাম্য খানিকটা হলেও নষ্ট হয়েছে। তাই সেদিকে এখন তীক্ষ্ণ নজরদারি শুরু করেছে প্রশাসন। গঙ্গাসাগর থেকে কপিল মুনির আশ্রমে যেতে যাতে প্রাচীন আমলের মত খানিকটা হলেও বেশি সময় লাগে সেজন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার।