মোদীর আমেরিকা সফরের দিনেই বাইডেন কে চিঠি অনাবাসী বাংলাদেশীদের, হাসিনার আমলে গণতন্ত্র বিপন্ন, হাসিনা ঘনিষ্ঠ মোদির দালালি শুনবেন না

0

Last Updated on June 20, 2023 8:18 PM by Khabar365Din

৩৬৫দিন। বাংলাদেশের প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে ভারত অনুরোধ করতে পারে, ভারত এমন কোনো অনুরোধ করলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যেন তা তৎক্ষণাৎ প্রত্যাখ্যান করেন। নরেন্দ্র মোদির আমেরিকা সফরের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে এমনই বিস্ফোরক চিঠি দিয়েছেন ১০১ জন বাংলাদেশের বংশোদ্ভুত আমেরিকার নাগরিক।গত ১৯ জুন এই খবর প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম সারির সংবাদপত্র মানবজমিনে।গতবারের বাংলাদেশের নির্বাচনে বিরোধী দলের নেতা নেত্রীদের জেলবন্দি করে নির্বাচন করার অভিযোগ উঠেছিল শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে। দুর্নীতি মামলায় বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া জেলে থাকা অবস্থায় দেশের জাতীয় নির্বাচন হয়। বিরোধীশূন্য অবস্থায় নির্বাচন করার জন্য মুজিব কন্যা হাসিনার বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে আন্তর্জাতিক মহলে।

এবার যেন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় তার জন্য এই চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। নির্বাচনের আগে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির ব্যাপারে হাসিনা সরকার মোটেই ইচ্ছুক নন বলেই চিঠিতে পরিষ্কার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। আজ থেকেই মোদির আমেরিকার সফর রয়েছে। গত রবিবার হোয়াইট হাউজের ঠিকানায় পাঠানো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকার নাগরিকদের ওই চিঠির শিরোনাম হল, মি. প্রেসিডেন্ট, অনুগ্রহ করে বাংলাদেশের স্বৈরতান্ত্রিক সরকারকে সহযোগিতা করতে নরেন্দ্র মোদির অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করুন।চিঠিতে বলা হয়েছে,বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার প্রতি বিপুল জনসমর্থন রয়েছে। অন্যদিকে চিন কর্তৃত্ববাদ সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রবলভাবে এগিয়ে এসেছে। আমেরিকার কঠোর সমালোচনা করে চিন ঘোষণা করেছে, তারা স্বৈরতান্ত্রিক সরকারকে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সাহায্য করতে এখনই প্রস্তুত। এছাড়া চিন বলছে বাংলাদেশ তার নিজস্ব বাস্তবতায় পথ ঠিক করবে।

চিঠির শেষদিকে বলা হয়েছে, নরেন্দ্র মোদি যখন ওয়াশিংটন সফর করছেন, তখন ভারতের মিডিয়াগুলোতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাছে সুপারিশ করার ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে। মোদির এই অনুরোধ বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন যদি মোদির এই অনুরোধে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের উপর থেকে সৃষ্ট চাপ থেকে বিরত থাকেন। তাহলে তা পুরো ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের মানুষের কাছে একটি ভুল বার্তা যাবে।

সেই বার্তাটি হল যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সুরক্ষার ব্যাপারে আন্তরিক নয়; আর এই বার্তাটি চিনের অবস্থানকে প্রবলভাবে সমর্থন জানাবে। উল্লেখ্য, ভারতের বন্ধু রাষ্ট্র বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে আগামী বছর জানুয়ারি মাসের মধ্যে। গত সাধারণ নির্বাচনে দেশের ৩০০টি আসনের অধিকাংশতেই প্রশাসনিক মদতে ঢালাও কারচুপির অভিযোগ করে ছিল বিরোধী দলগুলি। আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ্যে বিষয়টি তুলে আগামী ভোট সুষ্ঠু ভাবে করানোর দাবি তুলেছেন। তার মাঝেই বাংলাদেশ নিয়ে এই চিঠি মোদির আমেরিকার সফরের মধ্যে হোয়াইট হাউজের উপর কতটা প্রভাব ফেলে। সেটাই এখন দেখার।

চিঠিতে সাক্ষরকারী কয়েকজন হলেন- সেলিম রেজা, নিউইয়র্ক রুহুল আমিন নাসির, নিউইয়র্ক আব্দুল কালাম আজাদ, নিউইয়র্ক মোকাররম চৌধুরী, নিউইয়র্ক আশিক মাহমুদ, নিউইয়র্ক আবদুর রহিম, পেনসিলভেনিয়া রাইজ উদ্দিন, ক্যালিফোর্নিয়া জাহিদুর রহমান, ওয়াশিংটন ডি.সি আসাদুল্লাহ গালিব, নিউইয়র্ক নাজিম উদ্দিন, নিউইয়র্ক সহ মোট ১০১ জন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত আমেরিকার নাগরিক।