Last Updated on March 18, 2023 6:31 PM by Khabar365Din
৩৬৫দিন। ভাজপা শাসিত রাজ্যগুলির মধ্যে স্কুল ছুটের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তালিকার শীর্ষে রয়েছে যোগী আদিত্যনাথের উত্তর প্রদেশ, হিমন্ত বিশ্ব শর্মার অসম ও ভূপেন্দ্র প্যাটেলের গুজরাট। অন্তত এমনই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে খোদ কেন্দ্রীয় সরকারের স্ট্যাটিকস অ্যান্ড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশন। বাংলায় স্কুল ছুটের সংখ্যা নাকি প্রতিদিন বেড়েই চলেছে বলে যখন বামরাম এক জোটে কোমর বেঁধে মমতার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করতে ব্যস্ত ঠিক তখনই প্রকাশ্যে এল দেশের স্কুল ড্রপ আউট নিয়ে সরকারি রিপোর্ট। যাতে কার্যতো মুখ পুড়ল মোদি শাহর। কেন্দ্রীয় সরকারের স্ট্যাটিকস অ্যান্ড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশন মন্ত্রক এবং ন্যাশনাল স্যাম্পেল অফ সার্ভে ২০২০-২১ সালের স্কুলছুট নিয়ে একটি সমীক্ষা করে।সেই জাতীয় সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে।রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রায় ২ বছর করোনা মহামারীর জন্য দেশে লকডাউনে ঘোষণা করায় স্কুল, কলেজ অর্থাৎ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। ওই সময়কালে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে স্কুল ড্রপ আউটের পরিস্থিতি কি ছিল তা পরিষ্কার করে জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের এই রিপোর্টে। এই সমীক্ষা করা হয় দেশের প্রতিটি রাজ্যের ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সি ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে।
যেখানে দেখা গিয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যাওয়ার হার সবচেয়ে বেশি উত্তরপ্রদেশে। যোগীর রাজ্যে শহর ও গ্রাম মিলিয়ে স্কুল কলেজে না যাওয়া মেয়েদের হার ৫২.৫ শতাংশ। যা দেশে সর্বোচ্চ। এরপরেই রয়েছে ভাজপাসাশিত অসম। যেখানে স্কুল ছুটের শতাংশ ৫০.৯। এরপরই তালিকার রয়েছে উড়িষ্যা। স্কুল ছুটের শতাংশ ৫০.৯ ও মোদির রাজ্য গুজরাতেও ৫০ শতাংশের উপরে স্কুল ড্রপ আউটের হার। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে এই সকল রাজ্যের স্কুলের প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার আগেই মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে ভাজপাশাসিত প্রশাসন মেয়েদের প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়ার জন্য নতুন করে স্কুলমুখী করে তুলতে পারেনি। বলতে গেলে কার্যত ব্যর্থ হয়েছে যোগী আদিত্যনাথ থেকে আরম্ভ করে ভূপেন্দ্র সিং পাটেল। শুধু তাই নয়, শহরের তুলনায় গ্রামে মেয়েরা বৃত্তিমূলক শিক্ষা পেয়েও ঘরে বসে রয়েছে বলেই দাবি করা হয়েছে এই কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্টে। মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের স্কুলে যাওয়ার হার খানিকটা হলেও বেশি। দেশে মেয়েদের স্কুল ড্রপ আউটের হার ৪৩.৮ শতাংশ, ছেলেদের হার ১৬.১ শতাংশ।
তবে, ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সি যেসব ছেলে ও মেয়ে উভয় মিলিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ ছাড়াই বাড়িতে রয়েছে তাদের হার দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ওড়িশায় ৩৬.৮ শতাংশ, তারপরে রয়েছে অসম ৩৫.২ শতাংশ। এর পরেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ৩৩.৯ শতাংশ। তারপরে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ ৩৩.৫ শতাংশ। তবে, কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে হার সবচেয়ে বেশি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ৩৯.৪ শতাংশ। যদিও বাংলায় মুখ্যমন্ত্রী ছেলেমেয়েদের স্কুলমুখী করতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছেন, একই সঙ্গে বেশ কিছু প্রকল্প রয়েছে। বিনামূল্যে স্কুলের বই, খাতা,জামা, জুতো দেওয়া থেকে আরম্ভ করে পড়াশোনার সুবিধার্থে ট্যাব ও স্টুডেন্ট ক্রেডিট লোন এর মত বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের। পাশাপাশি উচ্চশিক্ষার জন্য স্কলারশিপ রয়েছে। উল্লেখ্য, তৃণমূলের অভিযোগ, ভাজপা শাসিত বেশ কয়েকটি রাজ্যতে ইচ্ছাকৃতভাবেই সরকারের স্কুল পরিকাঠামোকে নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে। যাতে ছাত্র-ছাত্রীরা সরকারি স্কুলমুখী না হয়। তার বদলে বেসরকারি স্কুলে যেতে বাধ্য হয় পড়ুয়ারা। যাতে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলি থেকে মোটা টাকা তোলা যায়। উত্তর-পূর্ব ভারতের ভাজপা শাসিত রাজ্য ত্রিপুরায় সম্প্রতি এমনই অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল।