Last Updated on March 9, 2022 10:10 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। গো গোয়া গন! উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার (Uttar Pradesh assembly election) সপ্তম দফার ভোট শেষ হতেই দেশজুড়ে একের পর এক এগজিট পোলের রিপোর্টে গোয়াতে ভাজপা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না বোঝার পরেই কংগ্রেস, তৃণমূল এবং তৃণমূলের জোট সঙ্গী এম জিপির সম্ভাব্য বিধায়কদের ভাঙানোর জন্য মাঠে নেমে পড়েছিল বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু কংগ্রেস এবং তৃণমূলের পাল্টা চালে ভাজপা অপারেশন লোটাস শুরু হওয়ার আগেই মুখ থুবড়ে পড়ল গোয়াতে। নির্বাচন শেষের পরে গোয়া নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার করা সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে, এবার গোয়ায় কোনও দলই নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পাবেন না। ৪০ আসনের বিধানসভায় কংগ্রেস এবং বিজেপি উভয়েই ১৫ থেকে ১৬ টি আসন পেতে পারে। তাই সরকার গঠনের ক্ষেত্রে বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে আপ এবং তৃণমূল।
মাস্টার স্ট্রোক তৃণমূলের
ভাজপা (BJP) যাতে কোনোভাবেই অপারেশন লোটাস বা ঘোড়া কেনাবেচা (Horse Trading)করে তৃণমূলের জোট সঙ্গী এমজিপি বিধায়কদের ভাঙিয়ে নিতে না পারে সেই লক্ষ্যে গতকাল সন্ধে বেলা গোয়া পৌঁছে গিয়েছেন তৃণমূলের (Trinamool) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। অভিষেকের সঙ্গে বৈঠকের পর এই আজ গোয়া তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি কিরণ কান্দোলকর রীতিমতো মাস্টার স্ট্রোক দিয়ে ঘোষণা করেন, তৃণমূল এবং এমজিপি জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে অথবা অন্যান্য ভাজপা বিরোধী দলের সঙ্গে যোগ করলে আমরা এমজিপি (Maharashtrawadi Gomantak Party) সুপ্রিমো সুধীন ধাবালিকরকে মুখ্যমন্ত্রী পদে সমর্থন জানাবো। যেখানে এমজিপি ভাজপার সঙ্গে গেলে কোনদিন মুখ্যমন্ত্রী পদ পাবেনা।
গতবারের ভুল আর নয়, দাবি কংগ্রেসের
২০১৭ সালে গোয়ার নির্বাচনে কংগ্রেস ১৭ আসন দখল করেও সরকার গঠন করতে পারেনি গড়িমসির কারণে। ভাজপা ১৩ আসন পেলেও তারা ৫ বছর ক্ষমতায় ছিল। এবার কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়েছে আগেরবারের ভুল আর হবে না। ফল বেরনোর পরে দুপুরের মধ্যে বিধানসভায় দলের নেতা নির্বাচন করে বিকেলেই রাজ্যপালের কাছে সরকার গঠনের দাবি জানানো হবে।
কংগ্রেস তাদের ৩৭ জন প্রার্থীকে উত্তর গোয়ার ব্যাম্বোলিমের একটি রিসর্টে নিয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবারে ফল বেরনো না হওয়া পর্যন্ত, তাঁদেরকে সেখানেই রাখা হবে। কংগ্রেসের তরফে গোয়ার ইনচার্জ দীনেশ গুণ্ডু রাও বলেছেন সব প্রার্থীদের একসঙ্গে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফল বেরনোর পরবর্তী সময়ে সব বিধায়করা একসঙ্গেই থাকবেন। গণনা কেন্দ্রেও কোন প্রার্থী যাবেন না। গণনা শেষ হওয়ার পরে সরাসরি রাজভবনে যাব আমরা সরকার গঠনের দাবি জানাতে।
২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও গোয়াতে বড় সংখ্যায় আসন পেয়েছিল কংগ্রেস৷ কিন্তু ভাজপার পক্ষ থেকে ঘোড়া কেনাবেচায় সেবারে আর সরকার গড়তে পারেনি কংগ্রেস। এবারও যাতে সেরকম কংগ্রেস ভাঙিয়ে ঘোড়া কেনাবেচা করে ক্ষমতায় আসতে না পারে ভাজপা সে জন্য আগে ভাগেই ব্যবস্থা নিচ্ছে কংগ্রেস। তাদের রাখা হয়েছে কড়া পাহারায়৷ যাতে ভাজপা বা অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে এই হবু বিধায়কদের সঙ্গে যোগাযোগ না করা যায়৷ গতকাল বিকেলে এবং আজ সকালে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস হাইকমান্ডের বৈঠকে গোয়া নিয়ে বারে বারে আলোচনার পরে হবু কংগ্রেস বিধায়কদের পাহারার দায়িত্বে রয়েছেন দেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম এবং ডি শিবকুমার। পি চিদম্বরম এবং ডি কে শিবকুমারকে রাজ্যের ছোট দল এবং নির্দল প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনার দায়িত্ব দিয়েছে। এমনকি গোয়ায় ভাজপাকে সরিয়ে সরকার গঠনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কংগ্রেস, তৃণমূল এবং অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে বলে জানা গিয়েছে। এ নিয়ে গোয়া প্রদেশ কংগ্রেসের গুন্ডু রাও বলেছেন, গোয়ায় বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করা সব দলের সঙ্গে জোট করার জন্য আমরা উন্মুক্ত। আমরা তৃণমূল কংগ্রেস এবং আপ বা গোয়াতে বিজেপির বিরুদ্ধে যারা আছে তাদের সঙ্গে জোট করার জন্য আগ্রহী।
কংগ্রেস ও তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলাতে প্রস্তুত আপ
গোয়ায় একটি অ-ভাজপা জোটের জন্য কংগ্রেসের (Congress) সাথে সহযোগিতা করার আগ্রহ দেখিয়েছে আম আদমি পার্টিও। আপ-এর মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী অমিত পালেকার বলেন, কংগ্রেসের কিছু লোক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, আমরা যেকোনো অ-ভাজপা জোটের জন্য দরজা খোলা রেখেছি। আমরা কোনো অবস্থাতেই ভাজপাকে সমর্থন করব না।
মরিয়া শেষ চেষ্টায় ভাজপা
অন্যদিকে ভাজপাও বসে নেই। তারাও ইতিমধ্যে গোয়ায় তৃণমূলের জোটসঙ্গী মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টি এবং নির্দলীয়দের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে। তবে সূত্রের খবর অনুযায়ী, এমজিপি প্রমোদ সাওয়ান্তকে মুখ্যমন্ত্রী পদে সমর্থন করবে না। ২০১৯-এ মনোহর পারিকরের মৃত্যুর পরে প্রমোদ সাওয়ান্ত মুখ্যমন্ত্রী হলে, সেই সময় এমজিপিকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়া হয়।