Last Updated on December 18, 2021 12:43 AM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। উত্তরের মতো দক্ষিন কলকাতার রাস্তায় ভাসল জনজোয়ারে। কারণ, আসন্ন কলকাতা পুরসভার নির্বাচন এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে হওয়া রোড শো। শুক্রবার বালিগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে কালীঘাট পর্যন্ত এই মিছিলে রাস্তার বিভিন্ন মোড় থেকে জুড়েছে অসংখ্য মানুষ।শুধু তাই নয় দেখা গিয়েছে কাতারে কাতারে যুব সমাজের ভিড়।আর রাস্তার দু ধারের বাড়ি থেকে ঝরেছে ফুলের বন্যা। বৃহস্পতিবারের দৃশ্যই যেন ছিল এদিন।মিছিলের শেষে তৃণমূলের ট্যাবলো গাড়ির উপরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আবেগের সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ত ভালোবাসা দেখে আমি আপ্লুত। বলাই বাহুল্য দক্ষিণ, উত্তর একে অপরকে টেক্কা দিচ্ছে। এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে যেখানে সামনে তাকালে মায়ের মন্দির, পিছনে বাংলার অগ্নিকন্যার বাড়ি। এর থেকে পূণ্যভূমি আর নেই। ফিরহাদ হাকিম, দেবাশিস কুমার,মালা কাজরি বন্দ্যোপাধ্যায় এরা প্রার্থী না। প্রার্থী একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাববেন আপনার একটা ভোট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত আরও শক্ত করবে। আর আগামী ১৯ ডিসেম্বরের নির্বাচন ভারতের কাছে কলকাতাকে সেরা প্রমাণ করার নির্বাচন।এদিনও আত্মবিশ্বাসের সুরে অভিষেক বলেন, ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩৫টিতেই জোড়া ফুল ফুটবে।দক্ষিণে কয়েকটি আবর্জনার মতো পদ্মফুল আছে সেগুলিতেও জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। শেষ হাসি তৃণমূলই হাসবে।
এছাড়া অভিষেকের আরও দাবি,গোয়ায় আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে হয় তৃণমূল সরকার প্রতিষ্ঠা করবে,নয় প্রধান প্রতিপক্ষ হবে। মাঝখানে আর কিছু নেই।তিনি আরও বলেন,এই নির্বাচন ভারতবর্ষের মানচিত্রে কলকাতাকে সর্বশ্রেষ্ঠ করার নির্বাচন।২০১০ সালের কলকাতা আর এখনকার কলকাতার মধ্যে অনেক ফারাক রয়েছে। তুলনা করেই ভোট দেবেন।তাই কানে শুনে নয় চোখে দেখে ভোট দিন।তবে এদিন বিজেপিকে কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন,আমি চ্যালেঞ্জ করছি,কোথায় বসবেন বসুন।উন্নয়নের খতিয়ান নিয়ে আপনাদের সঙ্গে বসব। ১০-০ গোলে হারাব।ওরা শুধু ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে জানে। এই বিষয়ে অভিষেক আরও বলেন,বহিরাগতরা বলেছিল বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না। নিজেদের হিন্দু ধর্মের ধারক, বাহক বলে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন এই পুজোর প্রসারে ৫০ হাজার টাকা করে ক্লাবগুলিকে সাহায্য করতে চেয়েছেন, এরা হাই কোর্টে গিয়েছিল। ইউনেস্কো দুর্গাপুজোকে স্বীকৃতি দেওয়ায় তাদের বাড়া ভাতে ছাই পড়েছে। তাছাড়াও আমায় অনেক চাপ দিয়েছে যাতে মাথা নামিয়ে নিই। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ্য সৈনিক। গলা কেটে দিলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেরোবে।এদিন অভিষেক আরও বলেন,বিজেপি-কে কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন,ভোটের আগে যাঁরা বড় বড় কথা বলেছিল,আট মাস পর তাঁদের টিকি খুঁজে পাওয়া যায় না। বিজেপি-র বাস ৭০-এ আটকে গিয়েছে।

তৃণমূল খেলাতেও আছে, মেলাতেও আছে, আন্দোলন-উন্নয়নেও আছে। কালীঘাটে টালির ছাদের নীচে যে মহিলা থাকেন, সারা দেশ এখন তাঁর দিকে তাকিয়ে। সব ওয়ার্ডের প্রার্থী একজনই। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তৃণমূল এখন আর শুধু বাংলায় রাজনৈতিক দল নেই। গোটা দেশের পার্টি।এছাড়াও শেষদিনের প্রচারে তাঁর হুঁশিয়ারি, কোনওরকম গা- জোয়ারি চলবে না। কারও কোনও অপকর্মের জন্য দল যদি বিন্দুমাত্র কুলুষিত হয়, তাহলে পরের দিনই বহিষ্কৃত হবে, সে যত বড় নেতার ছাত্রছায়া থাকুন না কেন। বলেন, আমার কাছে স্পেসিফিক ইনফর্মেশন এসেছে, পাঁচ-সাতটা ওয়ার্ডে ওরা বদমায়েসি করার চেষ্টা করবে। পায়ের তলা মাটি নেই, তাই কিছুটা একটা করতে হবে।গোল পাকিয়ে মিডিয়াকে দেখাতে হবে। আমাদের সচেতন থাকতে হবে। চোখ-কান খোলা রাখতে হবে।তবে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে,বলেই বার্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।।এদিন তাঁর সঙ্গে প্রচারে ছিলেন ফিরহাদ হাকিম,দেবাশিস কুমার,মালা রায়, কাজরি বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূলের অন্যান্য নেতারা। এদিন ফিরহাদ হাকিম বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, এই মিছিল করে দেখিয়ে দিয়েছে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁরা রয়েছে।