Last Updated on January 20, 2022 11:37 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। পানাজি। কংগ্রেসকে (Congress) ভোট দেওয়া মানেই বিজেপি (BJP)-কে ভোট দেওয়া। গোয়ায় কংগ্রেস পরীক্ষিত। ক্ষমতায় এসেও ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেনি ওরা। কংগ্রেস বিজেপিকে আটকাতে ব্যর্থ। একমাত্র পার্টি যে বিজেপির সঙ্গে টক্কর দিতে পারে , তা হল তৃণমূল কংগ্রেস (All India Trinamool Congress)। গত নির্বাচনে গোয়ায় (Goa) ১৭ আসন জিতেই সরকার গড়তে পারেনি কংগ্রেস। তাদের বিধায়করা বিজেপির পতাকা ধরেছিল। কংগ্রেস তাঁদের আটকাতে পারেনি। তাই কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে ভোট দেওয়া। এভাবেই আজ গোয়ায় ভাজপা বিরোধী মহাজোট গঠনের কংগ্রেসের অনীহার কারণ সম্পর্কে কংগ্রেস হাইকমান্ডের বিরুদ্ধে অলআউট আক্রমণ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।
সত্যি বলছেন না চিদম্বরম
গোয়ায় ভাজপাকে হারানোর জন্য তৃণমূলের পক্ষ থেকে কোনো জোট প্রস্তাব কংগ্রেসের কাছে যায়নি বলে আগে দাবি করেছিলেন কংগ্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ পি চিদাম্বরম (P. Chidambaram)। আজ রীতিমতো আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে স্টেপ আউট করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চিদাম্বরম কার্যত মিথ্যেবাদী বলে দাবি করেন, গোয়ার নির্বাচনে কংগ্রেস একটা ভাষ্য তৈরির করার চেষ্টা করছে যে, তৃণমূলের লক্ষ্য বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ করা। কিন্তু বিজেপিকে হারাতে সবাইকে হাত মেলাতে আহ্বান জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) নিজে। কিন্তু সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি কংগ্রেস। এছাড়াও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি পবন বর্মা ২৪ ডিসেম্বর দুপুর ১.৩০ মিনিটে পি চিদম্বরমের বাড়ি গিয়েছিলেন। তিনি গোয়ায় কংগ্রেস-তৃণমূল কংগ্রেসের জোট করে লড়ার প্রস্তাব নিয়েই গিয়েছিলেন। কিন্তু চিদম্বরমের তরফে কোনও সাড়া পাননি তিনি। এরপরেই কংগ্রেসের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেছেন, এই বিষয়ে আমি মিথ্যে কথা বললে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মানহানির মামলা করুন। আদালতে প্রমাণ করে দেব কে ঠিক আর কে ভুল। কে সত্য গোপন করছে, কে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, তা হাতেনাতে প্রমাণ হয়ে যাবে। নিজের রাজনৈতিক স্বার্থে এধরনের কথা বলছেন চিদাম্বরম। আগে তো নীতি নিয়ে সহমত হতে হবে, তার পর তো তথ্যভিত্তিক আলোচনা। পি চিদাম্বরম তো অত্যন্ত অভিজ্ঞ আইনজীবি। উনি কংগ্রেসের পক্ষ থেকে গোয়ায় বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন কারণ উনারা এতটাই আত্মবিশ্বাসী যে কংগ্রেস একাই বিজেপিকে হারাতে পারবে বলে মনে করছেন। যদি আগামী ১০ মার্চ বিজেপি বিজেপিকে কংগ্রেস হারাতে না পারে তাহলে সেই দিন এই ঘটনার দায়ভার নিয়ে চিদম্বরম জির পদত্যাগ করা উচিত।
মাঠে নেমে লড়ছে তৃণমূল
গোয়ায় ভাজপাকে হারানোর জন্য সোশ্যাল মিডিয়া এবং প্রেস কনফারেন্স করে বড় বড় বক্তব্য রাখলেও কংগ্রেসের কোন নেতা মাঠে নেমে ভাজপার বিরুদ্ধে লড়াই করছেন না বলে আজ অভিযোগ করেন অভিষেক। তিনি বলেন, বিজেপিকে হারাব – এটা মুখে বলা এবং বিজেপির বিরুদ্ধে মাঠে নেমে লড়াই করে হারানোর মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত আছে। কেউ যদি মুখে বলে আমি এই করব, আমি এই করব কিন্তু সর্বশক্তি দিয়ে তা করে না দেখায় তাহলে সেই কথার কোনও গুরুত্ব থাকে না। যারা মিথ্যে কথা বলছেন তাদের সত্যিটা আম জনতার সামনে আসা দরকার।
কংগ্রেস ভাজপার বড় জোট সঙ্গী
ভাজপাকে হারাতে ভাজপা বিরোধী দলগুলির মহাজোট গঠনের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের পিছিয়ে যাওয়ার কারণ হলো গোটা দেশে ভাজপার সবথেকে বড় জোট সঙ্গী কংগ্রেস। এমন বিস্ফোরক অভিযোগ করে অভিষেক বলেন, কংগ্রেসকে ভোটে দেওয়া মানে বিজেপিকে ভোট দেওয়া। এমনই অবস্থা হয়েছে, এখন সাংবাদিক বৈঠকে প্রকাশ্যেই বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস (Devendra Fadnavis) বলছেন, তাঁরা কংগ্রেস নেতা প্রতাপসিংহ রাণেকে গেরুয়া শিবিরে স্বাগত জানিয়েছেন।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে
সম্প্রতি তৃণমূলের একমাত্র মমতাকে নেত্রী হিসেবে মানেন বলে তৃণমূল সাংসদ কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Kalyan Banerjee) মন্তব্য নিয়ে যে বিতর্ক করার চেষ্টা করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি, সেই প্রসঙ্গে কোনো রাখঢাক না করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক আজ বলেন, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছেন ঠিক বলেছেন। উনি বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার নেত্রী, তাঁকে ছাড়া কাউকে মানি না। আমিও একই কথা বলছি। কোনো দ্বন্দ্ব নেই। আর এর থেকেই প্রমাণিত যে তৃণমূলে গণতন্ত্র আছে, হাই কমান্ড কালচার নেই।