Last Updated on September 19, 2023 6:05 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। ফের স্থগিতাদেশ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের উপরে। এবারে জাস্টিস গাঙ্গুলির দেওয়া রায়ের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আলিপুরদুয়ারের একটি সমবায় সমিতিতে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার প্রেক্ষিতে সিআইডির হাত থেকে মামলার তদন্তভার কেড়ে নিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট এবং সিবিআইকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা দপ্তর সিআইডি সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ায় রীতিমত বিরক্ত হন জাস্টিস গাঙ্গুলি। সঙ্গে সঙ্গে কোন রকম শুনানি ছাড়াই সিআইডি তথা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিরক্তি প্রকাশ করে জরিমানা করেন ৫০ লক্ষ টাকা।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল গঙ্গোপাধ্যায় যে ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছিলেন তা আপাতত স্থগিত থাকবে। গত এক বছরে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া রায় খারিজ হওয়া অথবা স্থগিতাদেশ জারি হওয়া নতুন কোন ঘটনা নয়। তাঁর দেওয়া রায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে খারিজ হয়ে গিয়েছে, নয় স্থগিত হয়ে গিয়েছে।
মামলার প্রেক্ষিত
জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে আলিপুরদুয়ারের এই মহিলা সমবায় ঋণদান সমিতির দায়িত্বে থাকা বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরূপের অভিযোগ ওঠে। আমানতকারীদের বক্তব্য ছিল, বহু কষ্টে আয় করা টাকা এখানে সঞ্চিত করেছিলেন তাঁরা। অথচ আমানতকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে সমিতির চেয়ারম্যান উপাসনা সেনগুপ্ত-সহ ৫ জন দায়িত্বপ্রাপ্তকে গ্রেফতার ছাড়া আর কিছুই করেনি। আলিপুরদুয়ারের জেলা আদালতে এই মামলা চলাকালীনই আমানতকারীরা সিবিআই তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করে। কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশও দেয়। এরইমধ্যে ১২ সেপ্টেম্বর রাজ্য সরকারের তরফে সিআইডি আবারও একটি পিটিশন দাখিল করে। যদিও আদালত হাইকোর্টের আগের রায়ই বহাল রাখে। একইসঙ্গে রাজ্যকে ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানাও করা হয়। পাশাপাশি তদন্তের সমস্ত নথি ১৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিবিআইকে দিতে বলা হয়।
সেই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের আগের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন জানায় সিআইডি। তাতেই চরম বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
শুধু বিরক্তি প্রকাশ নয়, নিজের স্বভাব সিদ্ধ ভঙ্গিতে নিজেই বিচারপতি এবং নিজেই তদন্তকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্য পুলিশের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডিকে বলেন, আপনারা ছেলেখেলা করছেন? কারা এই টাকা নিয়েছে সিআইডি এতদিনেও জানে না। কিন্তু আমি জানি।
আজ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির সব্যসাচী ভট্টাচার্যের শুনানি হওয়ার পরে ডিভিশন রেঞ্জ জানিয়ে দেয় কোন তদন্তকারী সংস্থা এই ঘটনার তদন্ত করবে সেই বিষয়ে রায় পরে জানানো হবে। তবে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যে ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন তার ওপরে স্থগিতাদেশ জারি করা হলো।