উত্তরবঙ্গে বিমানবন্দর তৈরি করেছি ডবল ইঞ্জিন বিমান পাঠান, বিধানসভায় ভাজপা বিধায়কদের মুখ্যমন্ত্রী

0

Last Updated on July 31, 2023 7:33 PM by Khabar365Din

৩৬৫ দিন। বিমানে সিঙ্গল ইঞ্জিন হলে মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়। আকাশে কার কী ভাগ্যে আছে, সেটা কেউ বলতে পারে না। কেন্দ্রের উচিত ডবল ইঞ্জিন বিমান যাতে চালু করা যায়, সেদিকটা ভেবে দেখতে। কয়েকদিন আগেই জলপাইগুড়িতে পঞ্চায়েতের নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে খারাপ আবহাওয়ার জন্য এমার্জেন্সি ল্যান্ডিং করতে হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টারকে, আজ সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ না করলেও ডবল ইঞ্জিন বিমান চালুর জন্য এভাবেই সুপারিশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য বিধানসভায় আজ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে রাজ্য সরকারের তৈরি করা বিমানবন্দর গুলি থেকে ডবল ইঞ্জিন বিমান চালুর জন্য ভাজপা বিধায়কদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিমানবন্দর তৈরির জন্য আপনারা দ্রুত দিল্লি থেকে ছাড়পত্রের বন্দোবস্ত করুন। ডবল ইঞ্জিন বিমান চলাচলের জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হোক। বিমানবন্দরের জন্য ইতিমধ্যেই ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। অন্ডালে একটি কার্গো বিমানবন্দর চালু করা হবে। বিমানবন্দর তৈরি হবে পুরুলিয়াতেও।

কোচবিহার, বালুরঘাটে বিমানবন্দর তৈরির কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। মালদহের কাজও শেষ পর্যায়ে। এর পর হাসিমারাতেও একটি বিমানবন্দর তৈরি করার কথা ভাবা হচ্ছে। আজ বিধানসভায় উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এয়ারপোর্ট তৈরির বিষয় স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আলিপুরদুয়ার এবং মালদহ ইংরেজবাজারের ভাজপা বিধায়করা হতে চেয়েছিলেন উত্তর বঙ্গের জেলাগুলিতে বিমান চলাচল নিয়মিত করার জন্য রাজ্য কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে কিনা। সেই প্রসঙ্গে এই তথ্য দিয়ে মমতা বলেন, অসামরিক বিমান চলাচলের জন্য বিমানবন্দর চালু করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক। সেই কারণে এই রাজ্যের ভাজপা বিধায়কদের বল ঠেলে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্র যত দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে, তত দ্রুত বাংলার বিমানবন্দরগুলিতে বিমান চলাচল শুরু করা যাবে।

আবাস যোজনায় বাংলাকে বঞ্চনা করছে কেন্দ্র

আবাস যোজনার টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। আমি নিজে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি। আমার বিধায়করা দেখা করেছেন। পঞ্চায়েত মন্ত্রী বলছেন যে আবাস যোজনার টাকার জন্য আমি নিজেও দেখা করেছি কিন্তু টাকা দেয়নি।

স্বাস্থ্যসাথী না নিলে লাইসেন্স বাতিল

রাজ্যের ডেঙ্গু সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার সময় যদি স্বাস্থ্য সাথী কার্ড কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, স্বাস্থ্যসাথী না নিলে লাইসেন্স বাতিল করব। সেই সঙ্গে ডেঙ্গু সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য ও পরিসংখ্যান পেশ করে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মেট্রোর কাজের জন্য সল্টলেকে বেশি হচ্ছে। জল যেন জমে না থাকে। এটা নজর রাখুন। গাপ্পি মাছ ছাড়া হচ্ছে। পুরসভা ও কর্পোরেশনকে বলব দেখতে। ভাষা ভাষা খবর ৮ মারা গেছে। এটা যদিও কনফার্ম নয়। টাকার দিকে না তাকিয়ে রোগী আসলেই ব্যবস্থা নিন। কোভিড মোকাবিলার মতো ব্যবস্থা নেব। ডেঙ্গু এবার ট্রেন্ড। গতবার কম হয়েছিল। কোনও বছর কম বা বেশি হয়। আমরা জোর দিয়েছি। কিন্তু পঞ্চায়েতে এখনও বোর্ড গঠন হয়নি। তারা কাজ করতে পারছে না। ফলে সমস্যা হচ্ছে। নিজের নিজের এলাকায় নজর রাখুন।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট ৪ হাজার ৪০১ জনের ডেঙ্গি আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত নদিয়ার মানুষ। তারপর উত্তর ২৪ পরগণা এবং হুগলি।

পাঞ্জাবের স্বর্ণমন্দির থেকে মমতাকে আমন্ত্রণ

পাঞ্জাবের অমৃতসর স্বর্ণ মন্দিরের পক্ষ থেকে আজ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে স্বর্ণ মন্দিরে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানালো স্বর্ণ মন্দির প্রবন্ধক কমিটি। আজ বিধানসভায় এসে আমন্ত্রণ গোটা দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং শান্তিরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার জন্য মমতাকে আমন্ত্রণ জানাতে আসেন স্বর্ণমন্দির প্রবন্ধক কমিটির পক্ষ থেকে জ্ঞানী রখবীর সিং, আকাল তখৎ, দরবার সাহীব, অমৃতসর স্বর্ণ মন্দির। মুখ্যমন্ত্রী তাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন এবং সময় পেলেই পাঞ্জাবের স্বর্ণমন্দির যাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রসঙ্গে

রাজ্যে সংখ্যালঘুদের উন্নয়ন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী জানান, ২২ জেলায় সংখ্যালঘু ভবন তৈরি করা হয়েছে। কেন্দ্র অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মৌলানা স্কলারশিপ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। ঐক্যশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের স্কলারশিপ দেয় রাজ্য সরকার। এতে ৩৫ হাজার ছাত্রছাত্রী উপকৃত হয়। সরকার এই স্কলারশিপের জন্য ১১০০ কোটি টাকা খরচ করে। সংখ্যালঘু স্কলারশিপের বিষয়ে বাংলা শীর্ষে আছে বলেও জানান তিনি। ২৩৫ অনুমোদনহীন মাদ্রাসাকে মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে এনেছে রাজ্য সরকার। এছাড়া অননুমোদিত মাদ্রাসাগুলো নিয়মিত করার জন্য একটি হাই পাওয়ার কমিটি গঠন করা হয়েছে।

৮৪৪ সাঁওতালি শিক্ষক নিয়োগ

বাংলায় কিছুদিনের মধ্যেই ৮৪৪ জন সাঁওতালি শিক্ষক নিয়োগ হবে। আজ বিধানসভায় এই তথ্য জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সাঁওতালি ভাষায় সার্টিফিকেট ডিপ্লোমা কোর্স,ও সরকার পোষিত বিএড কলেজ হবে। ফিজিক্স কেমিষ্ট্রি পড়ানোর ব্যাবস্হা হচ্ছে। চেষ্টা করা হচ্ছে শিক্ষক শিক্ষিকাদের যোগ্যতা বাড়ানোর।