Last Updated on May 17, 2021 9:10 PM by Khabar365Din
খবর ৩৬৫ দিন টিম
যাবতীয় সাংবিধানিক রীতিনীতি অমান্য করে রাজ্যের নির্বাচিত সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলো ভাজপা নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার। বিধানসভার অধ্যক্ষের অনুমতি না নিয়েই রাজ্য মন্ত্রিসভার 2 গুরুত্বপূর্ণ ক্যাবিনেট সদস্য ফিরহাদ হাকিম এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায় এর পাশাপাশি তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র এবং কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করার পরেও হেফাজতে পেলোনা সিবিআই। বিশেষ সিবিআই আদালত চারজনকেই জামিন মঞ্জুর করেছেন। একইসঙ্গে সকাল থেকে প্রায় ৬ ঘন্টা নিজাম প্যালেস এর সিবিআই দপ্তর ডিআইজি সিবিআইয়ের সামনে বসে থাকাকেই মাস্টার স্ট্রোক মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। রাজ্যের মন্ত্রী ও বিধায়কদের কোনরকম নোটিশ না পাঠিয়ে গ্রেফতার করার পরে তাদের দিয়ে মিথ্যে জবানবন্দি নেওয়ার চেষ্টা করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করে প্রায় 6 ঘন্টা শুনানি শেষ হওয়া পর্যন্ত বসে ছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। তার ফলেই কার্যত গোলমাল হয়ে যায় ভাজপা নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার এবং অমিত শাহের নিয়ন্ত্রণাধীন সিবিআই এর যাবতীয় পরিকল্পনা।
বিশেষ সিবিআই আদালতে ভার্চুয়াল শুনানিতে কার্যত তিরস্কারের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকাণ্ড। একদিকে যেমন নারোদা কাণ্ডে টাকা নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত থাকার জন্য ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিজেদের হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চেয়েছিল সিবিআই, সেই পরিস্থিতিতে বিচারক পাল্টা জিজ্ঞাসা করেন একই অভিযোগে অভিযুক্ত বাকিদের বিরুদ্ধে কেন কোনো রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। যে প্রশ্নের কোন সদুত্তর ছিলনা সিবিআইয়ের আইনজীবীর কাছে। সেই সঙ্গে চার্জশিট যেখানে তৈরি হয়ে গিয়েছে সেখানে তদন্তের প্রয়োজনে তাদেরকে গ্রেফতার করে হেফাজতে রাখার কি প্রয়োজন তাও জিজ্ঞাসা করেন বিচারক। স্বাভাবিকভাবে এই প্রশ্নের কোন জবাব দিতে পারেনি সিবিআই।
কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ব্যাঙ্কশাল কোর্ট এর বিশেষ সিবিআই আদালতে বিচারকের কাছে ভার্চুয়াল শুনানির জন্য আবেদন করে সিবিআই। আদালতে সওয়াল করেন তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নেতৃত্বে আইনজীবী নীলাদ্রি ভট্টাচার্য এবং অনিন্দ্য রাউতের সওয়ালের সামনে এদিন কার্যত ধোঁপে টেকেনি সিবিআইয়ের আইনজীবিদের কোন যুক্তি।
নারদা কাণ্ডে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং ভাজপা বিধায়ক মুকুল রায়কে কেন গ্রেফতার করা হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তিনি ৪ জনের জামিনের আবেদন করেন। যদিও তার বিরোধিতা করে সিবিআই। সিবিআই পক্ষের আইনজীবী প্রভাবশালী তত্ত্ব খাড়া করে ধৃতদের জেল হেফাজতে রাখার আর্জি জানায়। সিবিআই পক্ষের আইনজীবী যুক্তি দেখান, ধৃতরা বাইরে বেরিয়ে প্রমাণ নষ্ট করে দিতে পারেন। তৃণমূলের পক্ষে আইনজীবীরা পাল্টা যুক্তি দেখান, ফিরহাদ কলকাতা পুরসভার প্রধান প্রশাসক। সাম্প্রতিক কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তাঁকে প্রয়োজন। অন্য দিকে ম্যাথু স্যামুয়েলের স্টিং অপারেশন নিয়েই প্রশ্ন তোলেন শোভনের আইনজীবী।