Bangladesh bookfair: বিক্রি কমে যাওয়ার ভয়ে এপার বাংলার বই নিষিদ্ধ, এবার বিস্ফোরক শুভাপ্রসন্ন

0

Last Updated on February 17, 2023 6:20 PM by Khabar365Din

বাংলা ভাষাকে নিয়ে এত মাতামাতি অথচ
কেন ওদের বাংলায় আজও এত উর্দু শব্দ

৩৬৫দিন।ভয়ংকর, বিস্ফোরক শুভাপ্রসন্ন। বাংলাদেশের একতরফা বই বাণিজ্য নিয়ে এবার মুখ খুললেন শিল্পী শুভাপ্রসন্ন। বাংলা ভাষা থেকে আরম্ভ করে বাংলাদেশের বই বাণিজ্যের পদ্ধতি নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুললেন। এমনকি, অমর একুশে বইমেলায় পশ্চিমবঙ্গের প্রকাশকদের আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, সৌজন্য, সম্পর্ক, সংস্কৃতি, ভালোবাসা একমুখী হয় না, আমন্ত্রণ না জানানো মানে অপমান করা। সাক্ষাৎকারে শুভাপ্রসন্ন বলেন-

প্রশ্ন: বাংলাদেশ বইমেলায় পশ্চিমবঙ্গের অংশগ্রহণের ব্যাপারে গিল্ডের তরফে সুধাংশু ও ত্রিদিববাবুরা বলছেন, সৌজন্যে এক তরফা হয় না। আপনি কি মনে করেন?

শুভাপ্রসন্ন:ভালোবাসা একতরফা হয় না, সৌজন্য একতরফা হয় না। আমাদের ভাষার আন্দোলনের ভিত্তিতে একটা দেশ গড়ে উঠলো তার সার্বভৌমত্ব তার ভৌগোলিক রেখা সবটাই আমরা মেনে নিয়েছি।কিন্তু ভাষা, সংস্কৃতি সবদিক দিয়েই আমরা এক, সেখানে কোন সার্বভৌমত্বের বেড়া নেই। কিন্তু এই জন্য আমরা তাদের কাছ থেকে সৌজন্য আশা করব না , সেটা ঠিক নয়। আজ কলকাতার বইমেলা পৃথিবীর বইপ্রেমীদের কাছে একটা বিরাট স্বীকৃতি লাভ করেছে। দীর্ঘ বছর ধরে বাংলাদেশের বিশাল অংশে প্যাভেলিয়ান হয়। আমরা সেখানকার অতিখ্যাত সাহিত্যিকদের বই এখানে যেমন বিক্রি হয়, প্রচুর মানুষ সেখানে ভিড় করে আসেন। কিন্তু আমরাও আশা করি যে অমর একুশে বইমেলা আমাদেরও গর্বের, সেই বইমেলায় আমাদের স্থান থাকবে না কেন? কিন্তু সেই বইমেলায় পাইরেসি হয়। নকল সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে পাওয়া যায়। কিন্তু কোন প্রকাশক আমন্ত্রিত হন না। শুধু সৌজন্যের অভাব নয়, এটা এক ধরনের অপমান। সুতরাং সোচ্চারে একটাই কথা বলতে পারি, বাংলাদেশকে আমরা যতটা ভালবাসি, সংস্কৃতি, ভাষা এবং ভাইয়ের দেশ বলে মনে করি, বাংলাদেশ কার্যত সেটা মনে করে না।
এমনকি ভাষার দিক থেকেও অনেক মানুষ বলেন ঢাকার বাংলা ভাষাই নাকি প্রকৃত ভাষা। অথচ বহুদিন আগে বিবেকানন্দ বলে গিয়েছিলেন, কলকাতায় সমস্ত জায়গার মানুষের মিল হয়েছে শান্তিপুর, ঢাকা সব এক খাতে
জড়ো হয়েছে। কলকাতার ভাষাই, কিন্তু উপযুক্ত ভাষা বাংলা ভাষার উচ্চারণে। কিন্তু দেখা যায়, ওরা বলে প্রকৃত বাংলা ভাষা নাকি সেখানে। তাহলে সেই বাংলা ভাষায় কি করে আসে পানি, গোসল, আদাব, দাওয়াত। এই শব্দগুলোর কোনটাই প্রকৃত বাংলা শব্দ নয়। উর্দু অথবা হিন্দি থেকে আসা। আমরা পরবর্তীকালে তৎসমৎ থেকে তদ্ভব করেছি। এগুলো নিয়ে কখনো কেউ আলোচনা করে না। কিন্তু এখন সময় এসেছে। যদি সত্যিই আমরা বাংলা ভাষাকে ভালবাসতে পারি, বাংলা ভাষার মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে পারি তাহলে দাওয়াত দেব না, আমন্ত্রণ জানাবো।

প্রশ্ন: জামদানি আসছে,ইলিশ আসছে, ওদের বইও আসছে। আমরাই কিছু পাঠাতে পারছি না। এরম ভাবে দুইদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক হবে কেন?

শুভাপ্রসন্ন: গোড়া থেকেই বলছি, উভয় ভালো না বাসলে কোন সম্পর্কই হয় না। সেটা বাণিজ্য হোক সংস্কৃতি হোক কিংবা যেকোনো আদানপ্রদান দুই দেশ থেকে আসতে হবে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশের পশ্চিমবঙ্গের কোন বই পাওয়া যায় না। এখানকার কোন প্রকাশককে বাংলাদেশে ব্যবসা করতে দেওয়া হয় না। কেন এরকম হবে? ওরা প্রতিবছর বইমেলায় কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করে যাচ্ছে।

শুভাপ্রসন্ন: ঠিক তো। বহুবার পাইরেসির ব্যাপারে বলেছি। রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলি অব্দি পাইরেসি পাওয়া যায় ওখানে। রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলি ওখানে ছাপা হয় এতটুকু অন্য কোথাও দেওয়া হয় না।আর শীর্ষেন্দু, সুনীল, বনফুল, তারাশঙ্কর ছেড়েই দাও। অথচ নকল করছে, ছাপছে, বিক্রি করছে। গানের রেকর্ডও তাই। যদি এখন নানারকম সোশ্যাল মিডিয়া হয়ে গিয়ে সবকিছুই চালাচালি হয়। তাহলেও আমরা বই মেলাতে তো হার্ড কপি চাই। হার্ড কপির পাইরেসি হবে কেন?

প্রশ্ন: বাংলাদেশের সরকার পশ্চিমবঙ্গের বাংলা বইয়ের ওপর অলিখিত নিষেধাজ্ঞা করে রেখেছে কেন? কি মনে হয়? ওদের ব্যবসা নষ্ট হবে বলে?


শুভাপ্রসন্ন: এটা একটা চাল। এটা একটা হীনমন্যতার জায়গা থেকে আসে। কলকাতা এলে তারা নিউমার্কেটে আসবেই। নিউমার্কেট ছাড়া তারা জাতে ওঠে না। কিন্তু মুখে বলবে না। কিছু কিছু হাসপাতাল আছে , যার ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ রোগী হচ্ছে বাংলাদেশী। এগুলো নিয়ে প্রসঙ্গত আমরা অভিযোগ করছি। তারা করুক না তাদের যদি ভালো চিকিৎসা হয় তাতে আমাদের কোন অসুবিধা নেই। কিন্তু এটা এক পক্ষ কেন হবে। তুমি জামদানি রপ্তানি করবে, আমাদের কি কিছুই রপ্তানি করার নেই? আসলে আমরা যতই যা বলি না কেন ওই দু একজন আসানুজ্জামান ইলিয়াস বা আমুখ তমুখ আছেন, তাই বলে এপার বাংলার সঙ্গে তো তুলনা হয় না। কবি ধরো অসংখ্য কবি তারা এখনো লিখছেন। সুতরাং এটাতো একটা অবশ্যই ভয়। আজকে যদি এরা যায়, তাহলে তো ওদের বই বিক্রি কমে যাবে। তার জন্য পাইরেসি করে লুকিয়ে চুরিয়ে করে, প্রকাশ্য করেনা।এটা প্রতিবাদ হওয়া দরকার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here