বাপ্পি ডিস্কো কিং প্রয়াত

0

Last Updated on February 16, 2022 4:46 PM by Khabar365Din

বাপ্পি লাহিড়ী
জন্ম: ২৭ নভেম্বর ১৯৫২ ■ প্রয়াণ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২

৩৬৫ দিন। সদাশিব রানা। মুম্বই প্রয়াত সুরকার এবং গায়ক বাপ্পি লাহিড়ি (Bappi Lahiri)৷ বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। ভারতীয় সংগীতের ডিস্কো কিং (Disco King) বাপ্পির আকস্মিক মৃত্যুতে শোকাহত সঙ্গীত থেকে চলচিত্র সব মহল। মুম্বইয়ের (Mumbai) জুহুর ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে (Breach Candy Hospital) মত্যু হয় তাঁর৷ গত বছর কোভিডে (COVID-19) আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু একাধিক শারীরিক অসুস্থতা অথাৎ কোমোরডিবিটি ছিল তাঁর। মঙ্গলবার মধ্যরাতে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া অথাৎ ঘুমের মধ্যে শ্বাসনালিতে বাধা ,যা নিশ্বাস প্রশ্বাসে বিরতি নিয়ে আসে, সেই এএস এতে আক্রান্ত হয়ে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে প্রয়াত হন তিনি। তাঁকে ডিস্কো কিং বললে ভুল বলা হবে না। আটের দশকে তাঁর ডিস্কো মিউজিক ও ডিস্কো ড্যান্সার, ডান্স ডান্স ছবির গান কেবল গোটা দেশকে মোহিত করেনি, একই সঙ্গে মুম্বাইয়ে মিঠুন চক্রবর্তীকে (Mithun Chakraborty) তারকা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেছিল। সত্তরের দশকের শেষ ও আটের দশকের শুরুতে ডিস্কো মিউজিক জঁর যখন আমেরিকায় ঝড় তুলেছে, তখন ভারতীয় সংগীতে সেই ডিস্কোকে ফিউশন করে ব্যবহার করেন বাপ্পি। দুর্দান্ত সাফল্য আসে। ভারতীয় চলচ্চিত্রের জগতে পপ-ডিস্কো গানের যে জোয়ার এসেছিল তাঁর অন্যতম পুরোধা ছিলেন বাপি। ডিস্কো ডান্সার, ডান্স ডান্স হয়ে একের পর এক ছবিতে করা তাঁর সুর সেই সময়ের তরুণ প্রজন্মকে মোহিত করেছিল। ভারতীয় সিনেমায় ‘সিন্থেসাইজড ডিস্কো মিউজিক’ নিয়ে আসেন তিনি।  ডিস্কো ডান্সার, নমক হালাল, শরাবি, ডান্স ডান্স, কমান্ডো, সাহেব, গ্যাং লিডার, স্যায়লাবের মতো ছবিতে দুরন্ত মিউজিক করেছিলেন তিনি। সেই সময়ের এক প্রতিনিধি হিসেবে বাপি লাহিড়ীর অবদান ভারতীয় সংগীতে  স্মরণীয় । পাশাপাশি বাংলা ছবিতে তাঁর সংগীত এক বিশেষ ভূমিকা রেখেছে।তিনিই একমাত্র ভারতীয় মিউজিক ডিরেক্টর যিনি জোনাথন রসের লাইভ পারফরম্যান্সে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন ১৯৮৯ সালে। তাঁর আইকনিক গান জিমি জিমি আজা আজা নিউইয়র্ক স্টেডিয়াম মাতিয়েছিল। মাইকেল জ্যাকসনের সঙ্গে সেই শো মাতিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ১৯৫২ সালে জলপাইগুড়িতে (Jalpaiguri) জন্ম তাঁর বাবা অপরেশ লাহিড়ি আর মা বাঁশুড়ি লাহিড়ী দুজনেই বাংলা সঙ্গীত জগতে ছিলেন পরিচিত নাম। গানের তালিমের শুরু বাড়িতেই। স্বপ্ন নিয়ে মাত্র ১৯ বছর বয়সে মুম্বই পাড়ি দেন বাপ্পি।১৯৭৩ সালে হিন্দী ভাষায় নির্মিত নানহা শিকারী ছবিতে তিনি প্রথম গান কম্পোজ করেন। কিশোর কুমারের (Kishore Kumar) গলায় জালতা হ্যায় জিয়া মেরে অথবা লতার গলায় বাপ্পির সুরে আভি আভি থি দুশমানি. হিট হয়। ১৯৭৫-এ বাপ্পির হিট হিসেবে প্রথম বড় ছবি কিন্তু জাখমিকেই বলা যায়। ওই ছবিরও প্রযোজক ছিলেন তাহির হুসেন। হিন্দির পাশাপাশি অমর সঙ্গী, গুরুদক্ষিণা, ওগো বধূ সুন্দরী, আশা ও ভালোবাসা, আমার তুমি, অমর প্রেম, তিনমূর্তি, মন্দিরা, বদনাম, প্রতিদান,রক্তলেখা, প্রিয়ার মতো বাংলা ছবিতে তাঁর গান ব্যাপক হিট । তাঁর ম্যাজিক যে শেষ হয়ে যায়নি তার প্রমান মিলল ২০১১ সালে ‘ডার্টি পিকচার’ ছবিতে ‘উ লা লা’ গানের মধ্যে দিয়ে। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, প্রজন্মের পর প্রজন্মকে বুঁদ করে রাখার কোন জাদুক্ষমতায় বলীয়ান তিনি। হঠাৎই রাজনীতির প্রতি আকর্ষিত হয়ে বিজেপির হয়ে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বাপ্পি। পরাজয়ের পরে বুঝতে পারেন রাজনীতির মানুষ নন তিনি। বাগি ৩ ছবির জন্য ২০২০ সালে সর্বশেষ সুর করেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here