Last Updated on February 20, 2022 12:47 AM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। প্রথমে চূড়ান্ত অসাংবিধানিকভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিধানসভার অধিবেশন সমাপ্ত করার নির্দেশিকা জারি করার পরে এবারে সাংবিধানিক সৌজন্যের চূড়ান্ত অপব্যবহার করে রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশন ডাকতে অস্বীকার করলেন বাংলার ভাজপা (BJP West Bengal) নিয়ন্ত্রিত পদ্মপাল।বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের আবেদন জানিয়ে রাজ্যপালের কাছে ফাইল পাঠিয়েছিল রাজ্য সরকার। রাজ্যপাল (Jagdeep Dhankhar) সেই ফাইল ফিরিয়ে দিলেন। যা রীতিমতো রাজ্যের নির্বাচিত সরকারের প্রতি একজন মনোনীত রাজ্যপালের সৌজন্য বহির্ভূত ব্যবহার বলে মনে করছে দেশের অধিকাংশ রাজ্যের শাসক দল।
রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন ৭ মার্চ থেকে শুরু করতে চাইছে বাংলার সরকার । কিন্তু ওই দিন থেকে আদৌ বিধানসভার অধিবেশন শুরু করা যাবে কি না, তা নিয়ে ফের এক জটিলতা দেখা দিয়েছে। পদ্মপালের বক্তব্য, ৭ মার্চ থেকে বিধানসভা অধিবেশন শুরু করার যে সুপারিশ রাজভবনে (Raj Bhavan) পাঠানো হয়েছে, তা সংবিধান মেনে করা হয়নি। সেই কারণে অধিবেশন ডাকার জন্য ওই সুপারিশ ফেরত পাঠানো ছাড়া রাজ্যপালের কাছে নাকি আর কোনও উপায় খোলা নেই। টুইটারে (Twitter) এমনটাই দাবি করেছেন বাংলার পদ্মপাল।
পদ্মপালের বক্তব্য, সংবিধান অনুযায়ী, একমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) নেতৃত্বাধীন রাজ্য মন্ত্রীসভার অনুমোদন পাওয়ার পরেই বিধানসভার অধিবেশন ডাকার জন্য সুপারিশ করতে পারেন পরিষদীয় মন্ত্রী। অথচ, পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় যে সুপারিশ রাজভবনে পাঠিয়েছেন, তাতে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের বিষয়টি কোথাও উল্লেখ করা হয়নি। রাজ্যপালের বক্তব্য, বিষয়টি সংবিধানের ১৬৬ (৩) ধারার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। রাজ্যপাল কেবল রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন মিললে তবেই বিধানসভার অধিবেশন ডাকতে পারেন। সেই কারণে, ওই সুপারিশ রাজ্য সরকারের কাছে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি।
এমনিতেই রাজ্যের ১০৮ পুরসভা ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হবে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি। যার ফল প্রকাশ হবে আগামী ২ মার্চ। পুরসভা ভোটের ফল প্রকাশ হওয়ার পরই রাজ্যের বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন শুরু হবে। তারপর পেশ হবে বাজেট। এখনও তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। ফলে মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিয়ে ফাইল পাঠানোর সময় পাবে রাজ্য সরকার। কিন্তু রাজ্যপাল প্রথমবারে ফাইল ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার পরে দ্বিতীয়বার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যদি আবার একই বিষয়ক ফাইল পাঠানো হয় তবে সাংবিধানিক নিয়ম মেনে রাজ্যপাল সেই ফাইলে সই করতে বাধ্য। এই নিয়মের কথা রাজ্যপাল নিজে জানলেও শুধুমাত্র মিডিয়ায় ভেসে থাকার তাগিদে এভাবে ফাইল ফেরত পাঠালেন বলে মনে করছে অনেকেই।
প্রসঙ্গত কয়েকদিন আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারি চিঠি প্রকাশ করে রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন সমাপ্ত করার ঘোষণা করে যে সাংবিধানিক রীতি এবং সৌজন্য ভাঙার নতুন নজির তৈরি করেছিলেন বাংলার পদ্মপাতার তীব্র নিন্দা করেছিলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী।তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন একটি টুইটে লেখেন, পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন সমাপ্তির কথা যেভাবে ঘোষণা করেছেন রাজ্যপাল, তা তাঁর মতো সাংবিধানিক প্রধানের কাছে অনাকাঙ্খিত। এবং তাঁর কাছ থেকে এমন নীতিবিরুদ্ধও আচরণ আশা করা যায় না বলেও তিনি টুইটে লেখেন।