Last Updated on October 22, 2020 9:55 PM by Khabar365Din
গৌরকিশাের ঘােষের বিখ্যাত পাহাড়ি চরিত্র সাগিনা মাহাতাে, যাকে কমিউনিস্টরা নেতা বানিয়ে, ব্যবহার করে, শ্রেণিশত্রুতে পরিণত করে, সেই একই ছায়া বিমল গুরুঙে। বিজেপি গুরুংকে সাগিনা বানিয়ে ছিবড়ে করে ফেলে দেওয়ার পথে…
সৌগত মণ্ডল
পাহাড়ের ক্ষমতা করায়ত্ত করতে গোর্খাল্যান্ডের ললিপপ ঝুলিয়ে বিমল গুরুংকে সাগিনা মাহাতো বানিয়ে নিংড়ে ছেড়ে দিল বিজেপি টার্গেট বাংলা। কিন্তু বাংলার শাসনভার মমতার হাতে থাকাকালীন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহর এই স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে বুঝতে পেরে গত কয়েক বছর ধরে বাংলা ভাগের খেলার পাশাপাশি শুধুমাত্র পৃথক জাতিসত্ত্বার ভিত্তিতে মমতার বিকল্প নেতৃত্ব তৈরির খেলায় নামে বিজেপি। দার্জিলিং পাহাড়ের একটা ছোট অংশের গোর্খা জনজাতির নিজস্ব দাবি-দাওয়া নিয়ে লড়াই করা বিমল গুরুংকে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের রাজ্য বানিয়ে দেওয়া মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিনের-পর-দিন দিয়ে তাঁকে কার্যত নতুন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্ন দেখাতে শুরু করে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। পাহাড়ি গোর্খা জনজাতির ছোট ছোট সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে লড়াইতে ব্যস্ত বিমল গুরুং বিজেপির এই সুচতুর ফাঁদে পা দিয়ে গৌরকিশোর ঘোষের তৈরি সেই অবিস্মরনীয় চরিত্র সাগিনা মাহাতোর মতো একই ভুল করে বসেন। সাগিনা মাহাতো যেভাবে উত্তরবঙ্গের খেটে খাওয়া কুলিক আমিন মজদুরদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা দুঃখ কষ্টের ভাগীদার হতে হতে ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সত্বেও ক্ষমতালোভী কমিউনিস্টদের ধান্ধাবাজির শিকার হয় নেতৃত্তের চূড়ায় ওঠার প্রক্রিয়ায় শেষ হয়ে গিয়েছিল, একইভাবে পৃথক রাজ্য, মুখ্যমন্ত্রীত্ব, কেন্দ্রীয় সরকারের শরিক দল বা বড় বড় লার্জার দ্যান লাইফ স্বপ্ন দেখিয়ে বিমল গুরুং কেউ সেই পুরনো বাঁধাধরা ছকে ফেলে কার্যত শেষ করে দিয়েছে বিজেপি। তার আগে অবশ্য বিজেপির প্রধানতম উদ্দেশ্যটি সাধন করা হয়ে গিয়েছে। বিমল গুরুংকে নানা ভুজুং ভাজুং দিয়ে পাহাড়ের প্রায় সবকটি পৌরসভার পড়ে ধীরে ধীরে গুরু পন্থীদের সাহায্য নিয়ে ভোটে জিতে তাদেরকেই আবার দল ভাঙিয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। দার্জিলিংয়ের পাহাড় থেকে শুরু করে উত্তরবঙ্গের অন্তত চারটি সংলগ্ন জেলায় লোকসভা নির্বাচন এবং বিধানসভা উপনির্বাচন গুলিতেও তৃণমূলকে হারিয়ে একচেটিয়াভাবে বিজেপি প্রার্থীদের জেতানোর কার্য সম্পন্ন।তাই বিজেপির কাছে এখন বিমল গুরুংয়ের আর কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।