Last Updated on November 14, 2020 1:27 PM by Khabar365Din

৩৬৫ দিন। একমাত্র ভগবান ছাড়া কেউ সিপিএম পার্টি তলিয়ে যাওয়া আটকাতে পারবে না। তারাপীঠ মন্দিরে গিয়েছিলেন বলে পার্টি সেন্সর করেছিল সুভাষ চক্রবর্তীকে তিনি তখন রাজ্যের মন্ত্রী, ডাকসাইটে নেতা। সেদিনের রেজিলিউশনে সুভাষবাবুকে সেন্সর করার পক্ষে যিনি হাত তুলে ছিলেন সেই বিমান বসু তাঁর শরীর থেকে মার্ক্সবাদী পৈতেখানি খুলে এদিন চলে গেলেন সােমেন মিত্রের পাড়ায়, কালী পুজোর মন্ডপে মাথা ঠুকতে। দিনকাল পাল্টেছে, বামপন্থীরা মার্ক্সকে বাদ দিয়ে এখন মরনকালে হরিনাম গাইতে শুরু করেছে। একদা নিরীশ্বরবাদী ও দোর্দন্ডপ্রতাপশালী বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান এখন তাই ভিজে বেড়াল। তাঁকে আর সেন্সর করে নিজেকে কে আর হাস্যকর করে ? পার্টি যে এখন কংগ্রেসের ন্যাওটা। কংগ্রেসকে পাশে পেতে যে তারা জাহান্নামেও যেতে প্রস্তুত। বরং, বিমান বাবুর রাজনৈতিক বিচক্ষনতার জন্য পলিটব্যুরাে সাধুবাদ জানাতেও পারে। প্রয়াত সােমেন মিত্রের পুজোয় সূর্য সেন স্ট্রিটে এদিন সন্ধ্যায় বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান গিয়েছিলেন সিপিএমের বইয়ের স্টল উদ্বোধন করতে। এর আগেও গেছেন তিনি বহুবার। কিন্তু উদ্বোধন করেই গাড়িতে উঠেছেন। এবার হাসিমুখে তিনি এগিয়ে যান মন্ডপের দিকে। ২০০৬ সালে তারাপীঠে গিয়েছিলেন সুভাষ চক্রবর্তী। সেখানে কিন্তু তাঁকে আজকের বিমানবাবুর মতাে এমন সশ্রদ্ধ প্রমান করতে কেউ দেখেনি। তাতেই গেল গেল বলে রব উঠেছিল নিরীশ্বরবাদী মার্ক্সবাদীদের। রাজ্যের মন্ত্রী এবং জনপ্রিয় নেতা হিসেবে সেইদিন কোনও সুবিচার পাননি তিনি। সেন্সর করা হয়েছিল তাঁকে।

আজ সূর্য সেন স্ট্রিটে সিপিএমের বইয়ের স্টলে উদ্বোধন করে কালী দর্শনে যখন তিনি মন্ডপে যান তখন সেখানে ছিলেন কংগ্রেসের নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য, সােমেনবাবুর ছেলে সহ আরও অনেক। বিগ্রহে আগেই তাদেরই সশ্রদ্ধ প্রণাম জানান বিমান। অবশ্য এরাই এখন পার্টির কাছে বিগ্রহতুল্য। তিনি বেশ কিছুক্ষণ তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন এবং মন্ডপ লাগােয়া সােমেন মিত্রের স্মৃতি মঞ্চে যান। দুর্দশাগ্রস্ত পার্টির নেতারা এখন কংগ্রেসের সঙ্গে শুধু নয় তৃণমূল হটাতে বিজেপির সঙ্গেও আঁতাত করতে তৈরি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর, গত লােকসভা ভােটে বামরাম আতাত এ রাজ্যে শক্তপােক্ত হয়েছিল প্রায় সমস্ত কেন্দ্রেই। তাই এখন আর সেন্সর করার কেউ নেই। আলিমুদ্দিন স্ট্রিট আলাে করে থাকা বামপন্থী নেতারা এবার যদি রাম মন্দিরে গিয়েও ঘন্টা বাজান, তাহলেও পলিটব্যুরােতে কেউ তাদের বিপক্ষে ঘন্টা নড়বে না। কারণ কেউ নেই সেখানে। সবাই এখন নেবে পড়েছে কংগ্রেস আর বিজেপির সঙ্গ নিতে।