Last Updated on July 27, 2023 8:58 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। নয়াদিল্লি। মণিপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিবৃতি দাবির পাশাপাশি আজ সকাল থেকেই দিল্লি অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতাতেও তীব্র প্রতিবাদে নামল ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা। ইন্ডিয়া জোটের বেশিরভাগ দলের সাংসদরা কালো পোশাক পরে সংসদে পৌঁছে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শামিল হন। মণিপুর ইস্যুতে বাদল অধিবেশনের শুরু থেকেই উত্তাল সংসদের দুই কক্ষ। এর মধ্যে আজ রাজ্যসভায় দিল্লি অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতায় ফের জোটবদ্ধ বিরোধী শিবির। এই বিল পাশ হলে দিল্লিতে আধিকারিকদের নিয়োগ ও বদলির ক্ষমতা চলে যাবে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে। সংবিধান বহির্ভূত ভাবে দিল্লির নির্বাচিত সরকারের হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার জন্য আনা এই দিল্লি অর্ডিন্যান্সের বিরোধিতায় প্রথম থেকেই তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল দিল্লির শাসক দল আম আদমি পার্টি, তৃণমূল, রাষ্ট্রীয় জনতা দল, জনতা দল ইউনাইটেড সহ দেশের অধিকাংশ ভাজপা বিরোধী দল। প্রথমদিকে কংগ্রেস এই বিলের বিরোধিতা করবে না বলে জানালেও পরে সোনিয়া গান্ধীর নির্দেশে কংগ্রেস কেজরিওয়াল সরকারের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
কংগ্রেস ও তৃণমূলের নেতৃত্বে ইন্ডিয়ার স্ট্রাটেজি
আজ সংসদের কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগে, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গের চেম্বারে বিরোধী দলগুলির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে সংসদে এগিয়ে যাওয়ার কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। বৈঠকে ১৭টি দলের সংসদ সদস্যরা অংশ নেন। মণিপুরের বিষয়ে, বিরোধীরা আলোচনায় অনড় এবং এই কারণেই অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে।
আজ সংসদের অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে মল্লিকার্জুন খাড়্গের চেম্বারে উপস্থিত ছিল কংগ্রেস, তৃণমূল, ডি এম কে, আর জেডি সমাজবাদী পার্টি এনসিপি, এস এস, আম আদমি পার্টি, আই ইউ এম এল, সিপিআইএম, সিপিআই, আর এল ডি, ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা, জনতা দল ইউনাইটেড, আরএসপি, কে সিএম ও ভিসিকে। তবে গত কয়েকদিনের মতোই আজকের বৈঠকেও সংসদের ভিতর ও বাইরে ইন্ডিয়া জোটের স্ট্রাটেজি কি হবে তার নির্ধারণ করার বিষয় নেতৃত্ব দেয় কংগ্রেস ও তৃণমূল। জানা গিয়েছে মূলত কংগ্রেস এবং তৃণমূলের সংসদীয় কমিটির নেতারা এবারের বাদল অধিবেশনে ইন্ডিয়া জোট কোন পথে প্রতিবাদ করবে এবং লড়াই করবে সেই সমস্ত বিষয় ব্লু প্রিন্ট ঠিক করছে নিজেদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রেখে। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের দুই কক্ষের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিভিন্ন বিরোধী সাংসদেরা।
কেন্দ্রের মোদি সরকারকে আক্রমণ করে শিবসেনা সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী বলেন, আমরা কালো পোশাক পরে প্রতিবাদ করতে এসেছি, আজ সংসদীয় গণতন্ত্রকে গলা টিপে মারা হচ্ছে। মণিপুর ইস্যুতে নীরবতা ভাঙছেন না প্রধানমন্ত্রী।
অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটাভুটির প্রস্তুতি ইন্ডিয়া-র
মনিপুর ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব গতকাল গ্রহণ করার কথা জানিয়েছিলেন লোকসভার অধ্যক্ষ। অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে ভোটাভুটি হলে দলের সংসদরা যেন অনুপস্থিত না থাকে তার জন্য ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সরকারপক্ষ এবং বিরোধী জোট। ইতিমধ্যে কয়েকটি দল তাদের দলের সাংসদদের এই বিলের বিরুদ্ধে ভোট দিতে হুইপ জারি করেছে বলে খবর। জেডিইউ সংসদের বাদল অধিবেশনে কেন্দ্রের এই বিলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার জন্য দলের রাজ্যসভার সাংসদদের কাছে তিন লাইনের হুইপ জারি করেছে। লোকসভায় সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসা গৌরব গগৈ সরাসরি মোদীকে আক্রমণ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী মণিপুরের জনগণের ক্ষতে লবণ মাখাচ্ছেন। দেশের একটি অংশ পুড়ছে আর প্রধানমন্ত্রী শুধু বক্তৃতায় ব্যস্ত। মনিপুর ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি চেয়ে রাজ্যসভা থেকে বাদল অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড হওয়া আম আদমি পার্টি সাংসদ সঞ্জয় সিং বলেন, টিম ইন্ডিয়ার প্রতিবাদ চলছে। আমাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টে আসুন এবং মণিপুর ইস্যু নিয়ে কিছু বলুন, মণিপুর জ্বলছে এবং সাধারণ মানুষ ক্যাম্পে আশ্রয় নিচ্ছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইন্ডিয়া টিমকে সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে তুলনা করছেন। তাঁর অন্তত কিছুটা সংবেদনশীলতা দেখানো উচিত।