JU: মুখ্যমন্ত্রী শতকরা ১০০ সঠিক, সিপিএম নকশাল মিলেই স্তালিন আদর্শে কালেক্টিভ, আতঙ্কিতা সিপিএম দায় এড়াচ্ছে

0

Last Updated on August 24, 2023 6:07 PM by Khabar365Din

৩৬৫ দিন। আমরা নই। ওরা। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ডায়লগ এখন যাদবপুরের এসএফআই নেতাদের মুখে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল থেকে প্রথম বর্ষের ছাত্রের রহস্যজনক হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই যাবতীয় ইস্যু ছেড়ে সিপিএম তথা যাদবপুরে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই মরিয়া হয়ে মাঠে নেমে প্রমাণ করার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা খুন করেনি। এমনকি যাদবপুরে ছাত্র হত্যার ঘটনায় প্রথম গ্রেফতার হওয়া সৌরভ চৌধুরী যাদবপুরের ছাত্র সংগঠন কালেক্টিভের সদস্য বলে প্রকাশ্যে আসার পর থেকে এসএফআই দাবি করে আসছে এই কালেক্টিভের সঙ্গে তাদের নাকি কোনো রকম সম্পর্ক নেই। তার উপরে আবার গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার এসএফআইয়ের পাশাপাশি আলিমুদ্দিনে বসে মোহাম্মদ সেলিম থেকে শুরু করে সিপিএমের পাকা চুল কমরেডরাও মরিয়া হয়ে এই তত্ত্ব ছড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন, কালেকটিভ এর সঙ্গে তাদের নাকি জন্ম জন্মান্তরেও কোন সম্পর্ক নেই।
পাশাপাশি এদের প্রত্যেকের সম্মিলিত দাবি অরিত্র মজুমদার ওরফে আলুকে গ্রেফতার করলেই ছাত্র হত্যার ঘটনার সমাধান হয়ে যাবে। তার জন্য কখনো যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসএফআই প্রেস কনফারেন্স ডাকছে আলুর বিরুদ্ধে আলিমুদ্দিন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট পেশ করার জন্য, আবার কখনো বা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের ধরে ধরে প্যামফ্লেট বিলি করছে নিজেদের সাফাই দেওয়ার জন্য।

যাদবপুরে কালেক্টিভ কারা?

ভারতে বা বিশ্বের প্রায় প্রত্যেকটি দেশের যেমন সরকারি গুপ্তচর সংস্থা থাকে, ভারতে যেমন র, ব্রিটেনের এম আই ৫ ও এমআই ৬, ইজরায়েলের যেমন মোসাদ – ঠিক তেমনভাবেই মার্কসবাদী কমিউনিস্টরা বরাবর নিজেদের মূল সংগঠনের সঙ্গে আপাত সম্পর্কহীন অসংখ্য সংগঠন তৈরি করে রাখে বিভিন্ন ধরনের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য। রাশিয়ায় বলশেভিক বিপ্লবের সময় লেনিন প্রথম অবস্থায় তাত্ত্বিক আদর্শ ছড়িয়ে বিদ্রোহের পথে হাঁটতে চাইলেও কিছুদিনের মধ্যেই জোসেফ স্ট্যালিন অসংখ্য গণসংগঠন তৈরি করে সেগুলিকে মূলত বলশেভিক বিরোধী ও সরকার পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক তৈরি করার জন্য বিভিন্ন নামে অসংখ্য সংগঠন তৈরি করেছিলেন। স্ট্যালিনের তৈরি এই অসংখ্য সংগঠনের মধ্যে একেবারে প্রথম সারিতে ছিল কালেক্টিভ। যাদের কাজ ছিল উচ্চবিত্ত কৃষক বা কুলাকদের হত্যা করে তাদের সম্পত্তি লুটপাট করে নিয়ে দলীয় ফান্ডে জমা দেওয়া। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই কালেক্টিভরা ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। বিভিন্ন নামে। অর্থাৎ কালেক্টিভের সেই সমস্ত সন্ত্রাস ছড়ানোর গোপন ফর্মুলা। বা স্তালিনীয় সন্ত্রাস ফর্মুলা।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ও এসএফআই নিজেদের সংগঠনের ব্যানারে কোনরকম র‍্যাগিং বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত না থেকে নবাগত ছাত্র-ছাত্রীদের উপরে শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার চালানোর জন্য এবং যাদবপুরের হস্টেলগুলিকে মার্কসবাদীদের আখড়াতে পরিণত করার জন্য বিভিন্ন গোপন ট্রেনিংয়ের অগ্নিপরীক্ষায় পাশ করা কমরেডদের দায়িত্ব দিয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কালেক্টিভ ইউনিট গড়ে তোলার জন্য।

যাদবপুরে কালেক্টিভের মোডাস অপারেন্ডি

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় যে সমস্ত নবাগত ছাত্রছাত্রীরা হোস্টেলে আবাসিক হিসেবে আসতো এসএফআইয়ের কমরেডদের নিয়ে তৈরি কালেক্টিভের নেতারা তাদের এমনভাবে মানসিক নির্যাতন চালাতো যা অনেকটা হীরক রাজার দেশের মগজধোলাই কারখানার মতো। অর্থাৎ সদ্য ১৮ বছরে পা দেওয়া বা স্কুলের গণ্ডি পেরোনো একটি ছেলে বা মেয়েকে ক্রমাগত মানসিক নির্যাতন চালিয়ে চালিয়ে তাদের মনে আতঙ্কের বীজ বপন করত এই কালেক্টিভরা।

আলিমুদ্দিনের নেতাদের অ্যাসাইনমেন্টে সুজন চক্রবর্তীর তৈরি করে দেওয়া ব্লু প্রিন্ট অনুযায়ী এই কালেক্টিভ যে কোন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ুক না কেন তার সঙ্গে কোনোভাবেই প্রকাশ্যে আসবেনা সিপিএম অথবা এসএফআইয়ের নাম। ঠিক যেমনটা যে কোন দেশের গুপ্তচর সংস্থার গুপ্তচররা অন্য দেশে গিয়ে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বা হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে পড়লে তাদের সম্পর্কে যাবতীয় দায় ঝেড়ে ফেলার প্রচলন রয়েছে পৃথিবীতে।

সেই একই ছক মেনে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বসে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মোঃ সেলিম বা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই নেতারা নিজেদের ঘাড় থেকে যাবতীয় দায় ঝেড়ে ফেলে সব চাপাতে চাইছে কালেক্টিভের ঘাড়ে। তবে একজন ছাত্র হত্যার মতো ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে এরা বেশ কিছুটা মানসিক স্থিরতা হারিয়ে ফেলেছে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যে সমস্ত হ্যান্ডবিল বিল করা হচ্ছে সেখানে কোথাও দাবী করা হয়েছে এরা তৃণমূল পন্থী সংগঠন, আবার কোথাও বা দাবী করা হয়েছে এরা নকশাল! অনেকটা সোনার পাথর বাটির মতো ব্যাপার আর কি! সেই সঙ্গে আবার দাবি করা হচ্ছে তারা নাকি জানতো যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘকাল ধরেই র‍্যাগিং চলে।