Last Updated on August 9, 2021 7:49 PM by Khabar365Din


৩৬৫ দিন। অভিষেকের জীবন বিপন্ন। ত্রিপুরায় অভিষেক যাওয়ার পর যে ভাবে ওর গাড়িতে মারা হয়েছে, তাতে ওর মাথায় আঘাত লাগতে পারত। পরে প্রশাসনের তরফে বুলেটপ্রুফ গাড়ি দেওয়া হয়েছিল। এমনি গাড়ির কাঁচ হলে চুরমার হয়ে যেত। সঙ্গে চুরমার হয়ে যেতে পারত ওর মাথাও। আর সবটাই পুলিশের সামনে হয়েছে। নানা রকম পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অভিষেক বিমানে কোথাও গেলে, ওর পাশের পাঁচটা আসন বুক করে গুন্ডা তুলে দেওয়া হচ্ছে। এভাবেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর প্রাণহানির আশংকা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ করলেন মমতা। সেই সঙ্গে গোটা চক্রান্তের পিছনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাত রয়েছে বলে সরাসরি অভিযোগ করে মমতা বলেন, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী নন, হামলা চালানো হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নির্দেশে। অভিষেককেও টার্গেট করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত গত সপ্তাহে পরপর দুবার ত্রিপুরায় জান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত সপ্তাহের সোমবার ত্রিপুরায় পৌঁছে ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে যাওয়ার পথে ত্রিপুরা পুলিশের চোখের সামনেই ভাজপার ঝান্ডা নিয়ে বাঁশ এবং রড হাতে অভিষেকের গাড়ির বনেটে উঠে ভাঙচুর চালানোর চেষ্টা চালায় ভাজপা নেতা ও কর্মীরা। কয়েক ঘণ্টার বেশি সময় রাস্তায় আটকে থাকতে হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তা সত্ত্বেও ত্রিপুরা পুলিশ অথবা ভাজপা শাসিত ত্রিপুরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে কোনো রকম আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এর আগেও বিধানসভা নির্বাচনের সময় মমতা একাধিকবার প্রকাশ্য জনসভায় থেকে অভিযোগ করেছেন ভাজপা চক্রান্ত করছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রাণে মেরে ফেলার। আগেই অভিযোগ করেছিলেন ভাজপা চক্রান্ত করে গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটিয়ে অভিষেকের একটা চোখ নষ্ট করে দিয়েছে। অভিষেক সম্পর্কে মমতার অভিযোগ যে একেবারেই অবান্তর নয় তা প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে সম্প্রতি গোটা বিশ্ব জুড়ে ইজরায়েলের পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে অভিষেকের ফোনে আড়িপাতার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরে।
ত্রিপুরায় তৃণমূলের উপরে আক্রমণ প্রসঙ্গে
আজ ঝাড়গ্রাম যাওয়ার আগে এসএসকেএম হাসপাতালে যান মুখ্যমন্ত্রী। গতকাল ও পরশু ত্রিপুরায় তৃণমূলের যুব সংগঠনের নেতা-নেত্রীদের উপর ভাজপা আশ্রিত দুষ্কৃতীদের আক্রমণে গুরুতর আহত হন ছাত্রনেতা সুদীপ রাহা, জয়া দত্ত ও দেবাংশু ভট্টাচার্য। পরে ত্রিপুরা পুলিস গ্রেফতার করে ১৪ জনকে। এর পরেই গতকাল অভিষেক ত্রিপুরা এগিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে লড়াই করে আদালত থেকে জামিনে মুক্ত করে আনেন প্রত্যেককে। রাতেই আহত নেতাদের ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। আজ সকালে আহত নেতাদের দেখতে হাসপাতালে যান মমতা। সকাল ১১টা ১৫ নাগাদ হাসপাতালে পৌঁছন মমতা। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। হাসপাতালে পৌঁছে সোজা চলে যান উডবার্ণ ওয়ার্ডে। যেখানে ভর্তি রয়েছেন সুদীপ-জয়ারা। এদিন এসএসকেএম-এ সুদীপ, জয়াকে দেখার পাশাপাশি দেবাংশুকেও ফোন করে তাঁর কাজের প্রশংসাও করেন তিনি। এরপরে হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে মমতা বলেন, এক্ষুণি ঝাড়গ্রাম যেতে হবে। হাতে সময় কম। সুদীপ, জয়া ও দেবাংশুদের উপর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিসের সামনে দাঁড় করিয়ে রেখে মেরেছে। মারার পর ৩৬ ঘণ্টা কোনও চিকিৎসা হয়নি, কাউকে এক গ্লাস জল দেয়নি। ওরাই মেরেছে ওরাই গ্রেফতার করেছে। বিজেপি একটা দানবীয় দল। ত্রিপুরায় অভিষেকের উপর যেভাবে আক্রমণ হয়েছে তা নিন্দনীয়। এটা সম্পূর্ণ হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে, নাহলে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর এত সাহস হতে পারে না। বিমানের টিকিট না দেওয়ার চক্রান্ত হয়েছে। ছাত্রের উপর হামলায় পড়ুয়াদের গর্জে ওঠা উচিত। যেভাবে পাথর মেরে গাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়েছে তাতে, ওদের সবার মাথায় গুঁড়ো হয়ে যেতে পারত।