Last Updated on August 6, 2022 10:52 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। রাজ্যের পাওনা বিপুল অঙ্কের টাকা বকেয়া রেখেছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। বারবার এই টাকা মেটানোর কথা জানালেও এখনও পর্যন্ত সেই টাকা কেন্দ্র মেটায়নি। বাংলার বকেয়া অর্থ মেটানোর দাবিকে সামনে রেখেই শুক্রবার দিল্লি সফরের দ্বিতীয় দিনে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
সূত্রের খবর, দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে এদিন দুজনের মধ্যে প্রায় ৪৫ মিনিটের বৈঠক হয়। বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের বকেয়া টাকার বিস্তারিত হিসেব তুলে ধরলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। আর সেই হিসেবের অঙ্কটা প্রায় ১ লক্ষ ৯৬৮ কোটি টাকা। একইসঙ্গে নাম বিতর্কে আটকে থাকা প্রকল্পগুলি নিয়েও কথা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বলে সূত্রের খবর। বৈঠকের পরে তৃণমূলের তরফে প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া মুখ্যমন্ত্রীর লেখা চিঠি প্রকাশ করা হয়।
চিঠির প্রথম পরিচ্ছদেই প্রধানমন্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ১০০ দিনের কাজ (এমজিএনআরইজিএ), প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা-এই তিনটি ক্ষেত্রে বরাদ্দ বন্ধ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।সেটি বাংলার ক্ষেত্রে ফের চালু করবার জন্য আমি গত ১২ মে এবং ৯ জুন আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) এই সংক্রান্ত বিষয় চিঠি দিয়েছিলাম। একশ দিনের কাজ, আবাস যোজনা এবং গ্রামীণ সড়ক যোজনা মিলিয়ে মোট ১৭৯৯৬.৩২ কোটি টাকা(শুধুমাত্র এই তিনটি প্রকল্প বাবদ বাংলার বকেয়া) বকেয়া রয়েছে বাংলার। প্রসঙ্গত, এদিন, প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের নির্ধারিত সময় ছিল
শুক্রবার ৪.৩০ নাগাদ। তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই ৪টে ২০ নাগাদ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে পৌঁছন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, যত দ্রুত সম্ভব ১০০ দিনের কাজে রাজ্যের বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকল্পের নামকরণ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাত চলছে। তার জেরে কার্যত থমকে বাংলা আবাস যোজনা ও সড়ক যোজনার কাজ। এই সকল প্রকল্প পুনরায় যাতে রাজ্যে চালু করা হয় তার জন্যও দাবি জানান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
পাশাপাশি এদিন রাজ্যের বকেয়া টাকার বিস্তারিত হিসেব লিখিত আকারে প্রধানমন্ত্রীকে দেন মুখ্যমন্ত্রী। যেখানে দেখা যাচ্ছে ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা, সড়ক যোজনা, মিডমে মিল, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান সহ আরও একাধিক প্রকল্প বাবদ কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের বকেয়া ৩৯,৩২২.৬০ কোটি টাকা।
অতীতে আমফান, যশ, বুলবুল ঝড়ে ক্ষতিপূরণ বাবদ রাজ্যের বকেয়া ৬০,৬২৯.২৮ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে মোট বকেয়া ১ লক্ষ ৯৬৮ কোটি টাকার হিসেব দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীকে। দ্রুত এই বকেয়া অর্থ যেন মেটানো হয়, প্রধানমন্ত্রীকে তার আবেদন জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর দিল্লির ৭, লোককল্যাণ মার্গ অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে আলোচনা সেরে বেরিয়ে সোজা রাষ্ট্রপতি ভবনে চলে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। নতুন রাষ্ট্রপতিকে হলুদ গোলাপের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান মমতা। সাক্ষাতের পর সর্বভারতীয় তৃণমূলের তরফে টুইট করে সেই খবরও জানানো হয়েছে।