Last Updated on April 16, 2022 11:07 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। বালিগঞ্জ বিধানসভা উপ নির্বাচনে প্রত্যাশিতভাবেই জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে নিজেদের ভোট শতাংশ কিছুটা হলেও বাড়িয়ে নিতে পেরেছে সিপিএম। তার ফলে বালিগঞ্জে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন সিপিএম প্রার্থী। স্বাভাবিকভাবেই দীর্ঘক্ষণ চতুর্থ স্থানে থাকার পরে কোনরকমে তৃতীয় স্থানে এসে দৌড় শেষ করেছে ভাজপা। কিন্তু বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কলকাতা পুরসভার যে দুটি ওয়ার্ডের নিরিখে সিপিএম প্রার্থী তুলনামূলকভাবে ভালো ফল করেছেন, সেই ৬৪ ও ৬৫ ওয়ার্ডে মাত্র মাস তিনেক আগেই প্রায় জামানতের অবস্থায় ছিল সিপিএম প্রার্থীরা। তাই এই ফলাফলের পরে সিপিএম নিজেদের কর্মী ও নেতাদের মনোবল চাঙ্গা করার জন্য বলতে শুরু করেছে তৃণমূলের বিকল্প নাকি সিপিএম তথা বামেরা। প্রসঙ্গত, কলকাতা পুরসভার ৬৪ ও ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম যথাক্রমে ১৫৩ ভোটে ও ৩৫৬ ভোটে তৃণমূলের থেকে এগিয়ে রয়েছে। গত পুরভোটে ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম সাকুল্যে পেয়েছিল ৫০০ ভোট, তৃণমূল এগিয়ে ছিল ১৮ হাজারের বেশি ভোটে। ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল এগিয়ে ছিল ২২ হাজারের বেশি ভোটে। সিপিএম মনে করছে, ভাজপার প্রতি মোহভঙ্গ হয়েছে। ফলে রামে চলে যাওয়া ভোট আবার ফিরতে শুরু করেছে বামে। যদিও বাস্তবিক অর্থে ঘটনাটা তেমন নয়।
কংগ্রেসের হাত ছেড়ে সিপিএমের নয়া রাজ্য সম্পাদক বাংলায় সাম্প্রদায়িক রাজনীতির নীতি অনুসরণ করে সিপিএমের দিক নির্দেশ করার পথপ্রদর্শক মোহাম্মদ সেলিম এই ভোট পাওয়ার জন্য ঋণী ভাইজানের দল আই এস এফ-এর কাছে। একদিকে যেমন গত কয়েক মাস ধরে লাগাতার রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় সাম্প্রদায়িক অশান্তি তৈরি করার মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে সিপিএম এবং ভাইজানের দল, ঠিক তেমনভাবে এবারের ভোট প্রচারে সিপিএমের প্রধানতম ইস্যু ছিল বাবুলের ভাজপা-অতীত। সিপিএম এবং ভাইজানের দল আইএসএফ নেতারা লাগাতার পার্ক সার্কাসের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বক্তব্য রেখে গিয়েছেন লাগাতার। তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়ের গায়ে সাম্প্রদায়িক তকমা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তিনি ভাজপা থেকে তৃণমূলে এসেছেন। তাঁর কিছু পুরনো বিবৃতিকে সামনে এনে প্রচার চালানো হয়েছে। তার ফলে মানুষের কাছে ভুল বার্তা গিয়েছে। ফলে কিছু ভোট সিপিএমের দিকে ঘুরে গিয়েছে। বালিগঞ্জ বিধানসভায় প্রায় ৪৫ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট। সেই কথা মাথায় রেখে তারা সংখ্যালঘু প্রার্থী দিয়েছিল বালিগঞ্জ উপনির্বাচনে। যদিও ২০২১-এর নির্বাচনেও সংখ্যালঘু প্রার্থী দিয়েছিল সিপিএম। প্রার্থী করা হয়েছিল ফুয়াদ হালিমকে। কিন্তু মাত্র কয়েক মাস আগের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি পেয়েছিলেন মাত্র সাড়ে আট হাজার ভোট। তাই রাতারাতি সংখ্যালঘু ভোটাররা তৃণমূলকে ছেড়ে সিপিএমকে বিকল্প মনে করেছেন বলার কোনো কারণ নেই।