JU: ছাত্র হত্যা প্রসঙ্গে আদালতে উঠল ধনঞ্জয়ের ফাঁসি, ধনঞ্জয় ধরা পড়ে ফরেন্সিক অন্যান্য প্রমাণে, যাদবপুর ছাত্র হত্যায় কমপক্ষে এক ডজন প্রত্যক্ষদর্শী ফোন, ল্যাপটপ ফরেন্সিকে

0

Last Updated on August 29, 2023 7:02 PM by Khabar365Din

৩৬৫দিন। যাদবপুর ছাত্র হত্যা কাণ্ডে এবার হেতাল পারেখ ধর্ষণ ও খুনের মামলার প্রসঙ্গ উঠে এল আদালতে। সাম্প্রতিক কালে স্কুল পড়ুয়া হেতাল পারেখ মামলাতে ফ্ল্যাটের কেয়ারটেকার ধনঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত হয়, পরে ফাঁসির সাজা হয় তার। সোমবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম বর্ষের ছাত্র হত্যার ঘটনায় ধৃত ছয় জনকে আলিপুর আদালতে তোলা হয়েছিল।আগামী ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।আলিপুর আদালতে বাদী ও বিবাদী পক্ষের সওয়াল জবাবে উঠে আসে ১৯৯০ সালের হেতাল পারেখ ধর্ষণ ও খুনের মামলা।

১. গ্রেফতার হওয়া ছাত্রদের আইনজীবীরা আদালতে ধৃতদের জামিনে মুক্ত করার আবেদন জানিয়ে বলেন,ঘটনার কোনো প্রত্যক্ষদর্শী নেই। ফলে র‍্যাগিং করে ছাত্রকে উপর থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছিল এর কোনো প্রমাণ নেই। এই ছাত্রদের এতদিন ধরে গ্রেফতার করে হয়রানি করা হচ্ছে।
পাল্টা সরকারি আইনজীবী সৌরিন ঘোষাল সওয়াল করেন, ঘটনার সময় অন্তত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হোস্টেলের এ টু ব্লকে অন্তত ১২ জনের উপরে ছাত্র-ছাত্রী ও প্রাক্তনীরা উপস্থিত ছিল। ফলে কোনো প্রত্যক্ষদর্শী ছিল না এই তথ্য একেবারেই ভুল। ভুললে চলবে না স্কুল পড়ুয়া হেতাল পারেখ ধর্ষণ ও খুনের মামলাতেও কোনো প্রত্যক্ষদর্শী ছিল না। শুধুমাত্র পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই দোষী সাব্যস্ত হয় ও ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হয়েছিল কেয়ারটেকার ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে। উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালেএ হেতাল পারেখকে ধর্ষণ করে , খুন করার অপরাধে ২০০৪ সালের ১৪ অগস্ট ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ফাঁসি হয়। এই মামলাতেও কোনও কোন প্রত্যক্ষদর্শী ছিল না। পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ ও ফরেনসিক রিপোর্টের ভিত্তিতেই ধনঞ্জয়ের অপরাধ প্রমাণিত হয়।

২.ছাত্র মৃত্যুর ৩ দিন পর মৃত ছাত্রের পরিবারের সদস্যরা থানায় মামলা দায়ের করে। ফলে ঘটনার ৩ দিন পরে খুনের মামলা রুজু করা হয়। এই ঘটনায় ফরেনসিক রিপোর্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সরকারপক্ষের আইনজীবী আদালতে সওয়াল করতে গিয়ে জানান,এই মামলায় ফরেনসিক রিপোর্টকে খুবই গুরুত্বপূর্ন। সরকার পক্ষে আইনজীবী সৌরিন ঘোষাল আদালতের বলেন , ধৃত সকলেই টেকনোলজিক্যালি এক্সপার্ট। তাইয়েদের মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপ পরীক্ষা করা খুবই জরুরী। ইতিমধ্যেই ধৃতদের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ ফরেন্সিকে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এখনো আসেনি। ফরেনসিক রিপোর্ট এবং ঘটনার পুনর্নির্মাণ দেখলেই বোঝা যাবে আদৌ ছাত্র তিনতলার বারান্দার থেকে নিজেই ঝাঁপ দিয়েছিল নাকি তাকে রেগিং করার পর ওপর থেকে ধাক্কা মারে ফেলে দেওয়া হয়।

৩. ১৩ থেকে ১৫ জন অভিযুক্ত ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিল বলেই মনে করছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর বাইরেও আরো কিছু ছাত্র ঘটনার সময় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এ২ ব্লকের বিল্ডিং উপস্থিত ছিল বলেই অনুমান। ৯ আগস্টের অভিশপ্ত রাতে ঠিক কি ঘটনা ঘটেছিল তা জানতে বাকি পড়ুয়াদের সঙ্গেও কথা বলে তাদের বয়ান রেকর্ড করার চেষ্টা করছে তদন্তকারী।সোমবার দ্রুত মহাম্মদ আরিফ, মহম্মদ আসিফ আজমল, অংকন সরদার, সপ্তক কামিলা, অসিত সরদার এবং সুমন নস্করকে আদালতে তোলা হয়েছিল। এদের গত ১৬ আগস্ট গ্রেফতার করে যাদবপুর থানার পুলিশ এবং হোমিসাইডের গোয়েন্দারা। ধৃত ১৩ জন পড়ুয়ার মধ্যে জয়দীপ ঘোষ ছাড়া প্রত্যেকের বিরুদ্ধে খুন, র‍্যাগিং এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিযুক্ত। আগামী ৩১ আগস্ট অর্থাৎ বুধবার ঘটনায় ধৃত আরো অভিযুক্ত ছাত্রদের আদালতে পেশ করা হবে। এখনো পর্যন্ত তদন্তে ঘটনার মূল অভিযুক্ত হিসেবে নাম উঠে এসেছে প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীর। যার নির্দেশেই গোটা ঘটনা ঘটে বলেই মনে করা হচ্ছে। এছাড়াও ওই ছাত্র তিনতলার বারান্দা থেকে নিচে পড়ে যাবার পর সত্যব্রত,মনোতোষ তথ্য প্রমান লোপাটের চেষ্টা করে। আর পুলিশকে হস্টেলে ঢুকতে বাধা দেয় জয়দীপ, দীপশেখর ও মনোতোষ।