Last Updated on September 14, 2023 7:18 PM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করেছেন মাননীয় আচার্য তথা রাজ্যপাল। রাতের অন্ধকারে রাতের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্যদের অপসারণ করে নিজের পছন্দসই ব্যক্তিদের বসানোর পাশাপাশি আমাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং অনেকের বিরুদ্ধে ছাত্রী হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যপাল। সেই অভিযোগ তথ্য প্রমাণ সহ প্রমাণ করতে না পারলে রাজ্যপালকে সর্বসমক্ষে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে অথবা প্রত্যেক অপসারিত উপাচার্যের মাথাপিছু ৫০ লক্ষ টাকা করে জরিমানা দিতে হবে। এভাবেই বাংলার রাজ্যপালকে খোলা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন রাজ্যের বিভিন্ন সরকার পোষিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অপসারিত উপাচার্যরা।
নিজেদের সম্মান বাঁচাতে অভূতপূর্ব ও নজিরবিহীনভাবে রাজ্যপাল তথা পদাধিকারবলে আচার্য সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে মানহানির নোটিশ পাঠালেন প্রাক্তন উপাচার্যদের সংগঠন সেভ এডুকেশন ফোরাম ভুক্ত উপাচার্যরা | তাদের দাবি হয় ক্ষমা চান নয়তো উপাচার্যদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছেন তা প্রমান করুন | না হলে প্রত্যেক উপাচার্য ৫০ লাখ টাকা করে সিভিল মানহানি ও ফৌজদারি মানহানির মামলার মোকাবিলা করুন |
কী অভিযোগ ছিল রাজ্যপালের
৭ সেপ্টেম্বর একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে রাজ্যপাল অভিযোগ করেন, আপনারা জানতে চাইবেন, কেন সরকারের মনোনীত ভিসিদের নিয়োগ করতে পারিনি। তাঁরা কেউ ছিলেন দুর্নীতিগ্রস্ত, কেউ ক্যাম্পাসে রাজনীতির খেলা খেলেন, কেউ আবার ক্যাম্পাসে কোনও ছাত্রীকে হেনস্থা করেছেন। তাঁদের কী ভাবে মেয়াদ বৃদ্ধি করব? আজ প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক বৈঠকে সংগঠনের মুখপাত্র ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন যে তাদের পথে নামতে বাধ্য করেছেন আচার্য | উপাচার্য অপসারণ থেকে স্পিড নামে নতুন শিক্ষক নিয়োগের এর বেআইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাজ্যের উচ্চশিক্ষাকে ধ্বংসের মুখে নিয়ে যেতে চাইছেন রাজ্যপাল ও পদবলে আচার্য সি ভি আনন্দ বোস| এরবিরুদ্ধেই রুখে দাঁড়াতে তারা এবার তাদের প্রতিবাদ আরও জোরদার করবেন |
প্রসঙ্গ মানহানি
বৃহস্পতিবারের এই বৈঠকে কলকাতা ও রানী রাসমণি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ জানান তারা কেন এই মানহানি করেছেন | তিনি বলেন কয়েকদিন আগে আচার্য একটি ভিডিও বার্তাতে জানিয়েছেন
যে তিনি উপাচার্যদের নবীকরণ করেননি কারণ তাদের অনেকেই রাজনৈতিক খেলা খেলছে নয়তো দুর্নীতিগ্রস্থ বা ছাত্রী হেনস্থাতে অভিযুক্ত | এতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন প্রত্ন ঊপচার্যরা | আশুতোষ বলেন এতো দিন তারা জানতেন যে রাজভবনে সরাসরি রিপোর্ট না পাঠাবার জন্য ২৪ জনকে আর পুনর্নিয়োগ দেয়নি আচার্যের অফিস | কিন্তু এই ভিডিও বার্তাতে কারণ জেনে স্তম্ভিত | আরেক প্রাক্তন উপাচার্য দীপক কর জানালেন নিজের পরিবার, ছাত্রছাত্রী সহ দেশ বিদেশে ছড়িয়ে থাকা বন্ধু বান্ধবদের কৈফিয়ত দিচ্ছেন যে এই তিনটের কোনোটাই তারা করেননি যার জন্য তাদের উপাচার্য পদ থেকে সরতে হয়েছে | ওমপ্রকাশ হুঙ্কার দিয়ে বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এই কলঙ্কিত অভিযোগ তাঁরা সহজে গায়ে মাখবেন না | এর বিহিত করে ছাড়বেন |
বাংলার শিক্ষা ধ্বংসের চক্রান্ত
উপাচার্যদের দাবি মধ্য রাতে জেগে উঠে নির্দেশ দেওয়া আচার্যের মূল লক্ষ্য এইভাবে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পঙ্গু করে দেওয়ার | ওমপ্রকাশ জানান ইতিমধ্যেই উপাচার্য না থাকায়মোট ৩১ টির মধ্যে ৯ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে দারুন অব্যবস্থা দেখা দিয়েছে | ১৬ টিতে কোনোমতে চলছে | কিন্তু প্রাক্তন উপাচার্যরা জানান তারা কোনোমতেই এই চক্রান্ত সফল করতে দেবেননা |ফলে তাদের ওপর অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব থাকে নিজেদের সম্মান ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে রক্ষা করার |
তবে এছাড়াও রাজ্যপালের নজির বিহীন সিদ্ধান্ত নিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ শিক্ষামন্ত্রীও । গত বৃহস্পতিবার সেই রাতেই রাজভবনের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে রাজ্যের যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ হয়নি সেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আচার্য নিজেই সেই দায়িত্ব পালন করবেন । এই সিদ্ধান্তে চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বিধানসভায় বলেন, বাংলার একটি প্রবাদ রাজ্যপাল অক্ষরে অক্ষরে পালন করছেন। যাহা চালভাজা তাহাই মুড়ি! যিনি আচার্য, তিনিই উপাচার্য! কোন আইনে এটা হয়, জানি না। আমরা এর বিরুদ্ধে আইনি পথে যাওয়ার কথাও ভাবছেন তারা ।