
Last Updated on December 29, 2021 12:28 AM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। অধিবেশন কক্ষে নয়, কলকাতা পুরসভার অন্দরে ফাঁকা জায়গায় মঞ্চ করে চলে মেয়রের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান।মঙ্গলবার আর শপথ নেওয়ার ঠিক পরেই টিম করপোরেশনকে বিশ্বের সেরা শহর হিসাবে তুলে ধরার বার্তা দেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।এদিন দুপুর ১টা নাগাদ প্রোটেম স্পিকার রাম পেয়ারি রাম ফিরহাদ হাকিমকে প্রথমে শপথবাক্য পাঠ করান। এরপরই মালা রায় চেয়ারপার্সন হিসাবে শপথ নেন। শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ ও তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। ছিলেন লোকসভার দলনেতা সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক ও তৃণমূল উত্তর কলকাতার সভাপতি তাপস রায়, নগরউন্নয়ন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সাংসদ শান্তনু সেন।ডেপুটি মেয়র হিসেবে শপথ নেন অতীন ঘোষ।এরপর একে একে দেবাশীষ কুমার, দেবব্রত মজুমদার, তারক সিং সহ মেয়র পারিষদরা শপথ নেন।এরই সঙ্গে দায়িত্ববন্টনের কথাও জানানো হয়।এছাড়াও পুরসভার অন্যান্য বিভাগের দাইয়ত্বও ভাগ করে দেওয়া হয়।
যেমন, চিপ হুইপ পদের দায়িত্ব দেওয়া হল বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তকে।এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই ফিরহাদ হাকিম জানান,জীবন যদি যায় যাবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বাসকে ভঙ্গ হতে দেব না। তাঁর আদর্শ, বিশ্বাস নিয়েই এতদিন পুরবোর্ড চলেছে। এরপরও চলবে। অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো পথে হেঁটে আমরা শুধু কাজ করে যাব। আমৃত্যু ওনার বিশ্বাসের মর্যাদা দিয়ে উনি যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা পালন করব।তিনি আরও বলেন, আমরা সবাই সেবক।আর প্রধান সেবকের ফিরহাদ হাকিম।কলকাতা মানুষকে সেবা করব।তবে আগামীদিনের কাজ প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম সাংবাদিক বৈঠক করে জানান।যে কাজগুলিতে জোড় দেওয়া হবে, সেগুলি হল
বাতাস দূষণ রুখতেশ হরে বাড়ানো হবে সবুজ শহরের এয়ার কোয়ালিটিকে ভাল করতে সবুজায়ন প্রয়োজন। যেখানে ফাঁকা জায়গা পাওয়া যাবে, সেখানে ‘গ্রিন স্পেস’ তৈরি করতে হবে। আরবান ফরেস্ট এ নিয়ে দেখবে। যে সব জায়গায় খুব বেশি গাড়ি চলে সেখানে মিস্ট ক্যানন ব্যবহার করা হবে।বরাবরই পরিবেশের দিকে নজরদারি রয়েছে।তা আরও বাড়ানো হবে।
ডিজিটাল পরিষেবায় জোর
এবার থেকে ডিজিটাল পরিষেবায় জোর দেওয়া হবে। অ্যাপের মাধ্যমে বিল্ডিং প্ল্যানে অনুমোদন, ড্রেনেজ কানেকশনের অনুমোদন, জল পরিষেবা সমস্ত বিষয়ে জানানো যাবে। মিউটেশন হবে অনলাইন মোডে। এছাড়া কর প্রদানও অনলাইনে করা যাবে। সঙ্গে জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র, ট্রেড লাইসেন্সের বিমা অনলাইনে পুনর্নবীকরণ-সহ অনলাইনে আরও একাধিক জনহিতকর পরিষেবা দেবে কলকাতা পুরসভা।
কলকাতার জলযন্ত্রণা থেকে মুক্তির পথ
বিধানসভা কিংবা পুরভোট, সবক্ষেত্রেই বিরোধীদের অন্যতম হাতিয়ার হয়েছে মহানগরবাসীর জনযন্ত্রণা। মেয়র হিসাবে শপথ নেওয়ার পর ফিরহাদ এ বিষয়ে বলেন, “বিরোধী বন্ধুরা সবসময় বলেন লন্ডন হল না কলকাতা, ভেনিস হয়ে গেল। ভেনিস দেখতে হলে মাদ্রাজ যান, বম্বে যান, দিল্লি যান। প্যাটার্ন অব রেন বদলে গিয়েছে। মেঘ ভাঙা বৃষ্টি হচ্ছে। যে ছ’টা পকেটে মূলত জল জমে বেহালা, খিদিরপুর, আমহার্স্ট স্ট্রিট, ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি সেসব জায়গার জন্য পাম্পিং স্টেশন বাড়ানো হবে। জল পরিষেবার সমস্যাও দেখা হবে বিশেষ নজর দিয়ে। টালিগঞ্জ, যাদবপুর, কিছুটা বড়বাজার এলাকার জন্য আমরা ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট সেটিং করছি।
বিল্ডিং আইন
পুরনো বিপদজনক বাড়ি নিয়ে আইন আনবে পুরসভা। ফিরহাদ হাকিমের কথায়, বিপদজনক বাড়িগুলিতে যারা থাকেন তাদের সবরকম আইনি সুরক্ষা দিয়ে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে সেই বিল্ডিং ভাঙা হবে। শরিকের লড়াই থাকলে আদালতের কাছে সাহায্য চাওয়া হবে। ফিরহাদ হাকিম জানান, বহু শহরে বস্তি উন্নয়নের নামে বস্তি উচ্ছেদ করা হয়। কলকাতায় বাংলার বাড়ি প্রকল্পে থাকার জায়গা দেওয়া হবে।
শহরের হকারদের জন্য নয়া পলিসি
এদিন ফিরহাদ হাকিম জানান,আমি অনুরোধ করব কলকাতার সমস্ত হকারকে। সবার পেটে ভাত নীতিতে বিশ্বাস করি আমরা। কিন্তু একটা নীতি তৈরি করছি যাতে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে বসতে পারেন তাঁরা। যেখানে সেখানে কালো, নীল প্লাস্টিক, আগুন জ্বালানো এগুলি বিষয়ে নজর দেওয়া হবে। ইলেকট্রিক আভেন ব্যবহারে গুরুত্ব দেওয়া হবে। সরকারের একটা অনুমোদন এসেছে। আমরা পলিসি তৈরি করব।
মেয়র্স ক্লিনিকে জোর
ইসতাহারের প্রস্তাব মতো আর্বান হেলথ সেন্টার বাড়ানোয় নজর দেবে পুরসভা। যেখানে সম্ভব সেখানে চেতলার মতো মেয়র্স ক্লিনিক তৈরির করার কথাও বলেন ফিরহাদ হাকিম।