JU Student Death: নিহত ছাত্রের মা-বাবাকে দেওয়া মমতার প্রতিশ্রুতি পালন ২৪ ঘন্টায়, বগুলায় স্বপ্নদ্বীপ হাসপাতাল, মায়ের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিলেন কলকাতার সিপি

0

Last Updated on September 6, 2023 6:48 PM by Khabar365Din

৩৬৫ দিন। প্রতিবারের মতো এবারও দৃষ্টান্তমূলক ভাবে প্রতিশ্রুতি রাখলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাগিংয়ে মৃত ছাত্রের নামে তার বাড়ির সংলগ্ন এলাকায় নদীয়ার বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালের নাম পরিবর্তন করে ‘স্বপ্নদীপ গ্রামীণ হাসপাতাল’ নাম রাখলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দৃষ্টান্তমূলক ভাবে নবান্নের তরফে জারি করা হল বিজ্ঞপ্তি। একইসঙ্গে প্রতিশ্রুতির ২৪ ঘন্টার মধ্যে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের উপস্থিতিতে মৃত ছাত্রের মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হল স্বাস্থ্য দফতরের অ্যাটেনডেন্টের চাকরির নিয়োগপত্র। এমনকি মৃত ছাত্রের ছোট ভাইয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছে রাজ্য সরকার। যে তৎপরতার সঙ্গে দৃষ্টান্তমূলক ভাবে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি রেখেছেন তাতে স্বপ্নদ্বীপের পরিবার সহ নদিয়া জেলার বগুলার বাসিন্দারা অত্যন্ত খুশি। নবান্ন সূত্রের খবর, ‘স্বপ্নদীপ গ্রামীণ হাসপাতালে’ স্বপ্নদীপের মূর্তি বসার কাজেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরকে।

গত সোমবারের সাক্ষাৎ পর্ব
গত সোমবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত ছাত্রের পরিবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসেন। সেদিনই মৃত ছাত্রের পরিবারের পাশে দাঁড়ান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। যেভাবে স্বপ্নদীপকে রাগিং এর নাম করে খুন করা হয়েছে, এই ঘটনায় যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে বলে মৃত পড়ুয়ার পরিবারকে প্রতিশ্রুতি দেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিবারের সঙ্গে বৈঠকের সময়ে নবান্নে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে ডেকে নেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বপ্নদীপের মা-বাবা, মামা এবং দুর সম্পর্কে এক ভাই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। ছেলের অকাল মৃত্যুর শোকে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন যাদবপুরের মৃত ছাত্রের অভিভাবকেরা। তাদের সান্তনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। সাক্ষাতের পরেই স্বপ্নদীপের মা বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে তদন্ত করছেন তাতে আমাদের ভরসা আছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও বারবার বলেছেন দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। বৈঠকে পুলিশ আধিকারিকদের ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আমাদের সামনেই তাদের নির্দেশ দিয়েছেন, একজন দোষী ব্যক্তিকেও যেন ছাড়া না হয়। দিদির ওপর পূর্ণ আস্থা আছে আমাদের।’ প্রসঙ্গত, স্বপ্নদীপ থাকত নদীয়ার বগুলায়। বগুলার গ্রামীণ হাসপাতাল স্বপ্নদীপের নামে হবে বলেও তাঁর পরিবারকে প্রতিশ্রুতি দেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠক পর্ব শেষ হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে নবান্ন থেকে নির্দেশিকা জারি করা হয় গত সোমবার। নির্দেশিকায় রাজ্যের সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে জানানো হয়, এখন থেকে বগুলা গ্রামীন হাসপাতালের নাম পরিবর্তন করে ‘স্বপ্নদীপ গ্রামীণ হাসপাতাল’ নামে করা হল। স্বপ্নদীপের মূর্তিও বসবে এই গ্রামীণ হাসপাতালে, যার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বলে নবান্ন সূত্রের খবর।

স্বপ্নদ্বীপের মায়ের হাতে চাকরির নিয়োগ পত্র
স্বপ্নদ্বীপের পরিবারের সঙ্গে বৈঠকের ২৪ ঘন্টার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁর মায়ের হাতে স্বাস্থ্য দফতরের অ্যাটেনডেন্টের নিয়োগপত্র তুলে দেন লালবাজারে এক শীর্ষ কর্তা। মঙ্গলবার, ১৬৪ নম্বর ধারায় মৃত পড়ুয়ার মা আলিপুর আদালতে গোপন জবানবন্দী দেন। লালবাজার সূত্রের খবর, এরপরেই স্বপ্নদ্বীপের পরিবারকে লালবাজারে ডেকে পাঠান কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। মৃত পড়ুয়ার মা চাকরি করতেন একজন আশা কর্মী হিসেবে। তাঁকে স্বাস্থ্য দফতরের অ্যাটেনডেন্টের চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন পুলিশের এক শীর্ষকর্তা। লালবাজার সূত্রের খবর, মঙ্গলবারও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত পড়ুয়ার পরিবারকে আশ্বস্ত করা হয়, এই ঘটনায় জড়িত দোষী ব্যক্তিদের কড়া শাস্তি দেবে প্রশাসন। সোমবার নবান্নে বৈঠকের দিনেই স্বপ্নদীপের পরিবারকে আশ্বস্ত করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যে তাঁর ছোট ভাইয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব নেবে রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রের খবর, সেই অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট শিক্ষা দফতরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

দোষীদের করা শাস্তি দেবে প্রশাসন
গত ৯ আগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলে রাগিং এর নাম করে খুন করা হয় বাংলা প্রথম বর্ষের ছাত্রকে। এই ঘটনার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অভিযুক্ত ছাত্রদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এই ঘটনায়। প্রকৃত দোষীরা যাতে ছাড়া না পায় তার সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। দৃষ্টান্তমূলক ভাবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন স্বপ্নদীপের পরিবারকে তা কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বাস্তবায়ন করেছেন মমতা, যা একমাত্র তাঁর পক্ষেই সম্ভব।