Last Updated on October 29, 2020 9:58 PM by Khabar365Din

৩৬৫ দিন। পুজো মিটতে না মিটতেই তড়িঘড়ি দিল্লি রওনা দিলেন বাংলার পদ্মপাল। আজ রাতে দিল্লি পৌঁছে আগামীকালই অমিত শাহের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বসবেন বাংলার পদ্মপাল। আড়াই দিনের দিল্লি সফরের উদ্দেশ্য একটাই দিল্লিতে গিয়ে নিজের নিয়ােগকর্তা তথা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের আগে কীভাবে বাংলায় বিরােধী দলনেতার ভূমিকায় আন্ডারকভার বিজেপি এজেন্ট হিসেবে অবতীর্ণ হয়ে সরকার বিরােধী কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়া যায় তার ব্লু প্রিন্ট তৈরি করা। কারণ, টী হবে দার্জিলিংয়ের রাজভবনে। ব্রিটিশ আমলে প্রথমে ভারতের বড়লাট এবং পরবর্তীকালে ছােটলাটেরা গ্রীষ্মকালে কলকাতার গরম থেকে মুক্তির জন্য শৈলশহর দার্জিলিং-র রাজভবনে ছুটি কাটাতেন। কিন্তু নভেম্বরের ঠান্ডায় দার্জিলিংয়ের রাজভবনে একমাস কাটানাের নজির ব্রিটিশ আমল বা স্বাধীন ভারতেও নেই। মূলত রাজভবনে বসে তৃণমূল এবং বিমল গুরুংয়ের বিরােধী শিবিরের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গােপনে ডেকে বিভিন্ন ধরনের চক্রান্তের করার জন্যই কার্যত খআন্ডারকভার বিজেপি এজেন্টখ হিসেবে পাঠানাে হচ্ছে। বাংলার পদ্মপালকে। প্রসঙ্গত, ২০১৯ লােকসভা নির্বাচনের নিরিখে দার্জিলিং শহর উত্তরবঙ্গের লােকসভা আসনগুলােতে বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে জোট করে যে অপ্রত্যাশিত ফল করেছিল বিজেপি, সেই বিমল গুরুং রাতারাতি বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করে তৃণমূলকে সমর্থনের কথা ঘােষণা করার পরেই কার্যত চোখে অন্ধকার দেখা শুরু করেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাই আগামী ৩০ অক্টোবর দিল্লি থেকে কলকাতায় ফেরার পরেই তড়িঘড়ি কলকাতা থেকে দার্জিলিং-এর রাজভবনে এক মাসের জন্য পাঠানাের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বাংলার পদ্মপালকে। কারণ এই মুহূর্তে দার্জিলিং শহর উত্তরবঙ্গের রাজনীতির যা পরিস্থিতি, তারমধ্যে বিজেপির রাজ্য অথবা কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে কারও পক্ষে দার্জিলিঙে বসে রাজনৈতিক গােপন আঁতাতের বৈঠক করা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই সাংবিধানিক পথে বসে থাকার ফায়দা নিতে পদ্মপালকে দার্জিলিংয়ের রাজভবনে পাঠানাে হচ্ছে।কারণ আগামী সপ্তাহেই দীর্ঘদিন পরে দার্জিলিঙে ফিরতে চলেছেন বিমল গুরুং। বিমল গুরুং ঘনিষ্ঠ শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৫/৭ নভেম্বর নাগাদ নিজের সঙ্গী সাথীদের নিয়ে দার্জিলিংয়ের পাহাড় ফিরতে চলেছেন বিমল গুরুং। বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করে আপাতত পৃথক গাের্খাল্যান্ডের দাবি থেকে বিমল গুরুং সরে আসার পর দার্জিলিংয়ের পাহাড় সহ উত্তরবঙ্গে যে শান্তি ফিরেছে, দার্জিলিংয়ের অন্যান্য বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলাের সঙ্গে আঁতাত করে এবং পৃথক গাের্খাল্যান্ডের জন্য উস্কানি তৈরি করাই মূল উদ্দেশ্য প্রায় এক মাস ধরে বাংলার পদ্মপালের দার্জিলিংয়ের রাজভবনে থাকার পরিকল্পনার পেছনে।


৩৬৫ দিন নয়াদিল্লি। বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের আগেই আহারে বিজেপির সংগঠন তৈরি করার পাশাপাশি সেখানকার বিচ্ছিন্নতাবাদী শটি গুলির সঙ্গে গােপন বৈঠক করে অশান্তি তৈরীর জন্য যে পাহাড়ে যাচ্ছেন পদ্মপাল, তা নিজেই পরােক্ষে স্বীকার করে নিলেন। দার্জিলিং-এ গিয়ে যে তিনি সেখানকার বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন, নাম না করে তাও স্বীকার করে নেন বাংলার পদ্মপাল। তবে আজ পর্যন্ত সাংবিধানিক পদে বসে থেকে কোন রাজ্যপাল যেখানে দার্জিলিংয়ের রাজভবনের শীতকালে একমাস। কাটাতে যাননি, তিনি হঠাৎ করে প্রশাসনিক কোনাে প্রয়ােজন ছাড়াই সেখানে দৌড়াচ্ছেন তা নিয়ে দিল্লির সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে। রীতিমতাে তিতিবিরু হয়ে যান বাংলার পদ্মপাল। বাধ্য হয়েই তিনি স্বীকার করে ফেলেন, আমি কি কোনও দোষ করছি দার্জিলিংয়ে গিয়ে? এর আগেও অন্যান্য রাজ্যপাল গিয়েছিলেন। আমি নিজেই তিনবার গিয়েছি সেখানে। উত্তরবঙ্গ পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। আমি যে কটা দিন ওখানে থাকব, পাহাড়ের মানুষের সমস্যার কথা, সংস্কৃতির কথা জানার চেষ্টা করব।দার্জিলিঙে যাওয়ার আগে কিভাবে সেখানে। বিজেপির আন্ডারকভার এজেন্ট হিসেবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতে হবে, সে বিষয়ে মন্ত্রণা নিতে আজ সকাল সকাল হাজির হয়ে যান বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি তথা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বাড়িতে।এরপরে দিল্লিতে বসে বাংলার সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তার দৈনন্দিন কুৎসা এবং অপপ্রচারের পাশাপাশি কার্যত বিজেপির রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে বাংলার বিজেপি কর্মীদের নিয়ে তাঁর আশঙ্কার কথা জানাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন পদ্মপাল।যদিও সাংবিধানিক পদে বসে থেকেও যেভাবে দিল্লিতে গিয়ে বাংলার নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যের বিরােধী দলনেতা রঙের পদ্মপাল আজ কুৎসা করেছেন তার তীব্র নিন্দা করেছে। তৃণমূল। সাংসদ কল্যাণ বন্দোপাধ্যায় তীব্র ব্যঙ্গ করে বলেন, বাংলার রাজ্যপাল বিজেপির লাউড স্পিকার হিসেবে কাজ করছেন। দিল্লিতে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখ | করতে গিয়েছেন? নাকি বিজেপি নেতাদের সঙ্গে? এর আগে তিনি // বাড়ি কাজ করেছেন তাে মনে হচ্ছে। এটা তার ১০০ তম বার। মিথ্যের ঝুড়ি নিয়ে তিনি দিল্লি গেছেন। তৃণমূল মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমি তাে নিজেই বুঝতে পারছি না উনি কি চাইছেন? রাজনৈতিকভাবে তিনি যে ভূমিকা পালন করছেন, তাতে রাজ্যপালের আসনের গরিমা কলুষিত হচ্ছে। ওঁর আচরণে আমরা উদ্বিগ্ন।