পুজোর আগে জেমস বোস বন্ডের ইচ্ছে, আমিও মুখ্যমন্ত্রী আমিও পুরস্কার দেব, দুর্গা কার্নিভালের নকলে অসুরশ্রী পুরস্কার, পাঁচ মিশালি পুরস্কারে দুর্গা নিয়ে রাজভবনের প্রহসন

0

Last Updated on September 28, 2023 12:48 PM by Khabar365Din

৩৬৫ দিন। আমি সিএম হব। তাই অসুরের ‘দুর্গা শ্রী পুরস্কার’। ভাজপা আইনজীবীদের পুরস্কার, সাংবাদিকদের পুরস্কার, সমাজ সেবামূলক কাজের জন্য পুরস্কার, ব্যাংক, অর্থনীতি, ম্যানেজমেন্ট, পর্যটনের প্রচার, ব্যবসার সঙ্গে দুর্গা পুজোর কী সম্পর্ক তা একমাত্র বলতে পারবেন পদ্মপাল টু। আদতে ভাজপার কিছু নিজস্ব পেটোয়া লোক তৈরি করার জন্যই রাজভবনের এই উদ্যোগ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ইতিমধ্যেই পদ্মপাল টু রাজ্য সরকারকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে সমান্তরাল প্রশাসন চালাচ্ছেন। সাংবিধানিক ক্ষমতাকে ধ্বংস করে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে রীতিমত যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন রাজ্যপাল জেমস বোস বন্ড। কিন্তু বরাবর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা, সি ভি আনন্দ বোসকে মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি নির্বাচিত প্রতিনিধি নন। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে একজন মুখ্যমন্ত্রী যে কাজ করতে পারেন, প্রাতিষ্ঠানিক প্রধান হিসেবে রাজ্যপালের সেই গুরুত্ব সংবিধানে নেই। তাই পদ্মপাল টু এবার উঠে পরে লেগেছেন। তার প্রচেষ্টা আমি সিএম হবই, কেউ আটকাতে পারবেনা।

এই অভিপ্রায় থেকেই সিভি আনন্দ বোস নিজস্ব পেটোয়া লোকজনদের নিয়ে রাজভবনের সংগঠন তৈরি করতে বুধবার ‘দুর্গা ভারত’ সম্মান’ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। দুর্গা ভারত সম্মান অদ্ভুতভাবে শুধুমাত্র দুর্গাপুজো কমিটি গুলোকে নয়, বরং এই পুরস্কারে সম্মানিত হবেন ছবি আঁকিয়ে, স্থাপত্য শিল্পী, থিয়েটার শিল্পী, পরমাণু বিজ্ঞানী, মহাকাশ প্রকৌশল বিজ্ঞানী-যাদের সঙ্গে পারতপক্ষে দুর্গা পুজোর কোনো সম্পর্ক নেই। তবে কেন এই পুরস্কারকে ‘দুর্গা ভারত সম্মান’ নাম দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি পদ্মপাল টু সি ভি আনন্দ বোস। প্রসঙ্গত, রাজভবনের বিবৃতি অনুযায়ী মোট ৯ টি বিভাগে পুরস্কৃত করা হবে, সেগুলি হল,
১. শিল্পকলা: সংগীত, আঁকা, স্থাপত্য, ছবি, সিনেমা থিয়েটার, আদিবাসী শিল্পকলা, যেকোনো সমাজ সেবামূলক কাজ।
২. আইন ও সমাজের প্রতি অবদান অর্থাৎ আইনজীবী।
৩. বিজ্ঞান এবং ইঞ্জিনিয়ারিং: এক্ষেত্রে পরমাণু বিজ্ঞান, মহাকাশ প্রকৌশল বিজ্ঞানের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের দুর্গা ভারত পুরস্কার দেবেন বাংলার রাজ্যপাল সি বি আনন্দ বোস।
৪. তথ্যপ্রযুক্তি, বিজ্ঞান সংক্রান্ত গবেষণার কাজে যুক্ত ব্যক্তিদের পুরস্কৃত করা হবে।
৫. বাণিজ্য এবং শিল্প: ব্যাংক, অর্থনীতি, ম্যানেজমেন্ট, পর্যটনের প্রচার, ব্যবসা।
৬. চিকিৎসা: গবেষণা, আয়ুর্বেদ, হোমিওপ্যাথি, সিদ্ধা, অ্যালোপ্যাথি, নেচারোপ্যাথি,
৭. সাংবাদিকতা, শিক্ষকতা, প্রকাশনা।
৮. সাহিত্য কবিতা শিক্ষার প্রচার সাক্ষরতার প্রচার, প্রশাসনিক কর্মীদের দক্ষতা, খেলাধুলা।
৯. অন্যান্য: ভারতীয় সংস্কৃতির প্রচারক, মানবাধিকার রক্ষা, বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে উদ্যোগী। এছাড়াও মোট তিনটি বিভাগে দুর্গা ভারত সম্মান কে ভাগ করা হয়েছে। ‘দুর্গা ভারত পরম সম্মান’ প্রাপক পুরস্কার পাবে এক লক্ষ টাকা। ‘দুর্গা ভারত সম্মান’ প্রাপক পাবেন ৫০ হাজার টাকা এবং ‘দুর্গা ভারত পুরস্কার’ প্রাপক কে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।

আগামী শনিবারের মধ্যে মনোনয়ন জমা দিতে বলা হয়েছে রাজভবনের তরফে। ই-মেইল মারফত মনোনয়ন জমা দেবে রাজভবন। উল্লেখ্য, বাংলার দুর্গাপুজো বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতার নেতৃত্বে যে জাঁকজমক পূর্ণ ভাবে হয়ে থাকে তার ফলেই প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যবসা হয়ে থাকে এই দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে। ঐতিহাসিক রেড রোড কার্নিভাল শুরু করে শুধুমাত্র তা চাক্ষুষ করার জন্য বিদেশ থেকে অসংখ্য পর্যটকেরা কলকাতা এসে থাকেন। শুধু কলকাতার পুজোয় নয়, জেলার পুজো গুলিকেও শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা হিসেবে ‘বিশ্ব বাংলা শারদ সম্মান’ দিয়ে থাকে বাংলার সরকার। এই বিপুল জাঁকজমকপূর্ণ দুর্বোৎসবের কারণেই সম্প্রতি ইউনেস্কো বাংলার দুর্গোপুজোকে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি দিয়েছে। ফলে বিশ্বের হাতেগোনা যে কয়েকটি উৎসব শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা পেয়েছে তার মধ্যে মমতার নেতৃত্বে বাংলার দুর্গোৎসব জায়গা করে নিয়েছে। ‌ এখানেই চরম ইর্ষায় জ্বলেছেন পদ্মপল টু সি ভি আনন্দ বোস। তাই বাংলার দুর্গোৎসবের সঙ্গে অযথা টক্কর দিতেই মাঠে নেমে পড়েছেন জেমস বোস বন্ড।