লেজে পা পড়তেই ফোঁস, ইডি সিবিআই এর বিরুদ্ধে চিঠি কেরল সরকারের

0

Last Updated on March 8, 2023 12:57 PM by Khabar365Din

৩৬৫দিন। নিজের ল্যাজে পা পড়তেই এবার মোদি সরকারের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই ইডির বিরুদ্ধে মুখ খুললেন কেরলের সিপিএম সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। এবার দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মনিশ সিসোদিয়া ইস্যুতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিলেন তিনি। সম্প্রতি দেশের ৯ বিরোধী দল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন। কিন্তু সেই বিরোধীদের তালিকায় নাম ছিল না সিপিএমের। মঙ্গলবার লাইভ মিশন দুর্নীতি মামলায় পিনারাই বিজয়নের অ্যাডিশনাল প্রাইভেট সেক্রেটারি সিএম রবীন্দ্রনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইডি ডাকতেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারীর সংস্থার বিরুদ্ধে সরব হলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী। কেরলের মুখ‍্যমন্ত্রীর এই অবস্থানকে বিরোধীদের অনেকেই সুবিধাবাদী রাজনীতি বলে খোঁচা দিচ্ছেন।

তারা বলছেন, সব বিরোধী দল যখন এককাট্টা হয়ে মোদিকে কেন্দ্রীয় এজেন্সির অপব‍্যবহার নিয়ে চিঠি দিল তখন সিপিএম তাতে সামিল না হয়ে ভাজপার মন পাবার চেষ্টা করল। এখন সেই ছক ভেস্তে যেতেই ইডি সিবিআই খারাপ বলে মোদিকে চিঠি দিচ্ছেন। ধরি মাছ না ছুঁই পানি অবস্থান নিয়ে সিপিএম দু নৌকায় পা দিয়ে চলছে। বিজয়ন তার চিঠিতে লিখেছেন, বিরোধীদের উপরে কেন্দ্রীয় সংস্থার নির্লজ্জ অপব্যবহারের জেরে মনে হচ্ছে আমরা গণতন্ত্র থেকে স্বৈরতন্ত্রের দিকে চলেছি। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের হেনস্থা করতে সিবিআই, ইডি-র মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাদের ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু দুর্নীতিতে অভিযুক্ত রাজনীতিক যাঁরা ভাজপাতে যোগ দিয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়েছিল বিরোধীরা। দেশের ৯ বিরোধী দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এই চিঠি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীকে। এর মধ্যে রয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতাও। কেন্দ্রীয় এজেন্সির অপব্যবহারের অভিযোগ তুলেই মূলত এই চিঠি। মণীশ সিসোদিয়ার গ্রেফতারি নিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয় চিঠিতে। তবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণভাবে ভাজপা বিরোধী আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলির এই প্রতিবাদ পত্র বা অঘোষিত জোটে অনুপস্থিত ছিল কংগ্রেস এবং সিপিএম। এদিন চিঠিতে পিনারাই বিজয়ন লিখেছেন,তদন্ত প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা ঠেকাতে সিসৌদিয়ার গ্রেফতারি অপরিহার্য ছিল কি? না হলে তো কাঙ্ক্ষিত কাজটি অনায়াসে এড়িয়ে যাওয়া যেত।জনমানসে এমন ধারণা তৈরি হয়েছে যে, সিসৌদিয়াকে কৃত অপরাধের জন্য নয়, স্রেফ রাজনৈতিক কারণেই গ্রেফতার করানো হয়েছে।

সিসৌদিয়ার হেফাজত থেকে অর্থ বা এমন কোনও সামগ্রী তদন্তকারীরা উদ্ধার করতে পারেননি যাতে প্রমাণ হয় আপ নেতা বড় অঙ্কের আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। জানি, আইন নিজের পথেই চলবে। কিন্তু একই সঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এই গ্রেফতারি নিয়ে জনমানসে প্রতিক্রিয়া। মানুষ মনে করছেন, সিসৌদিয়াকে রাজনৈতিক কারণেই গ্রেফতার করানো হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, নয় বিরোধীদল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অপব্যাবহারের অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী কে চিঠি দেওয়ার সময় বিরোধী দল গুলোর থেকে দূরত্ব রেখে ছিল সিপিএম যাতে মোদি সরকারের কাছে গুড বুকে থাকা যায়। কিন্তু আচমকাই অ্যাডিশনাল সেক্রেটারিকে ইডির দপ্তরের তলবের পরই নিজের স্বার্থে আঘাত লেগেছে পিনারাই বিজয়নের। তাই তড়িঘড়ি করে দিল্লিতে চিঠি পাঠাতে হল।
প্রসঙ্গত,গত ২৬ ফ্রেব্রুয়ারি দিল্লির মদনীতি মামলায় সিসোদিয়াকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই । তখন আদালতে তোলা হলে চার দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তদন্তের জন্য গত শনিবার আরও ২ দিন নিজেদের হেফাজতে রাখা জন্য আবেদন করে কেন্দ্রীয় সংস্থা।ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ বেড়েছিল। এবার ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেওয়ায়, হোলিতে জেলেই কাটাতে হবে সিসোদিয়াকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here