Last Updated on July 21, 2021 5:38 PM by Khabar365Din
“সুপ্রিম কোর্টের কাছে আমার হাত জোড় করে অনুরোধ, এই নজরদারি থেকে দেশকে বাঁচান। সুয়ো মোটো কেস করুন।”
৩৬৫ দিন। রান্নার গ্যাসের দাম ৪৭ বার বেড়েছে। প্রায় পৌনে চার লক্ষ কোটি টাকা খোয়া গিয়েছে গৃহস্থর। বিজেপি সরকার গণতান্ত্রিক অধিকার শেষ করে দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় অধিকার, বিচারব্যবস্থাকে শেষ করছে। গোটা দেশে গোয়েন্দাগিরি চলছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সর্বশক্তি নিয়ে বাংলায় ছাপানো ভাজপাকে হারানোর পরে একুশে জুলাই এর ভার্চুয়াল শহীদ দিবসের মঞ্চ থেকে এভাবেই কেন্দ্র সরকারের একের পর এক জনবিরোধী এবং গণতন্ত্র বিরোধী পদক্ষেপে নিয়ে তীব্র আক্রমণ শানালেন মমতা।
পেগাসাস পেগাসাস নরেন্দ্র মোদির নাভিশ্বাস
যেভাবে ইজরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাস ব্যবহার করে দেশের বিরোধী রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, বিচারপতি থেকে শুরু করে সমাজকর্মীদের ফোনে আড়িপাতার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তা যে আসলে নরেন্দ্র মোদি সরকারের ওয়াটারগেট হতে চলেছে তা নিয়ে এদিন স্পষ্ট হুঁশিয়ারি’ দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, সকলকে বলব একজোটে প্রতিবাদে নামুন। জানতে চান, পেট্রোল, ডিজেল, গ্যাসের দাম বাড়ল কেন? টিকা নেই কেন? পেগাসাস পেগাসাস নরেন্দ্র মোদীর নাভিশ্বাস। পেগাসাস হটাও দেশ বাঁচাও। এই আড়ি পাতা ভুলবেন না। এই পেগাসাস-কাণ্ডকে থিতিয়ে যেতে দেবেন না শরদজি, চিদম্বরমজি। আপনাদের কিন্তু ছেড়ে দেয়নি। আড়ি পেতে নির্বাচন জিতছে। ভাবছে সারা জীবন এ ভাবেই ভোট পাবে। কাউকে ফোন করতে পারি না, ফোন ট্যাপ হয়। আমার ফোন ট্যাপ হচ্ছে, রেকর্ড করা হচ্ছে। আমার ফোনের ক্যামেরা ঢেকে দিতে হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংস করছে বিজেপি। গণতান্ত্রিক অধিকার শেষ করে দিচ্ছে ওরা। আমাকে ফোনের ক্যামেরায় প্লাস্টার লাগাতে হচ্ছে।
ওরা নৃশংস, শান্তিতে কাউকে বাঁচতে দেবে না ।আমি চিদম্বরমকে ফোন করতে পারি না, ফোনে আড়িপাতা হয়।

স্বার্থ ভুলে সর্বভারতীয় স্তরে জোট বাঁধতে হবে
আগামী লোকসভা নির্বাচনে ভাজপা কে কেন্দ্র থেকে হঠানোর লক্ষ্যে সর্বভারতীয় স্তরে ভাজপা বিরোধী শক্তিকে একজোট হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে আজ মমতা বলেন, নিজেদের স্বার্থ ভুলে আমাদের সবাইকে এককাট্টা হতে হবে। সব নেতাদের বলছি, ফ্রন্ট তৈরি করুন। বাংলার মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছেন, স্বাধীনতা আন্দোলন হোক বা যে কোনও লড়াই, লড়তে প্রস্তুত বাংলা। সব রাজ্যকে বলব, একজোট হয়ে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হন। জোট গড়ে তুলুন। এটাই ঠিক সময়। যত দেরি করবেন, ততই সময় নষ্ট হবে। আমি দিল্লি যাচ্ছি। শরদজি, চিদম্বরমজিকে বলব বৈঠক ডাকলে আমরা যাব। আজ স্বাধীনতা সঙ্কটে। রবীন্দ্রনাথকে সিলেবাস থেকে বার করে দিয়েছে। বিজেপি একটি হাই লোডেড ভাইরাস পার্টি। করোনার চেয়েও বিপজ্জনক ভাইরাস রয়েছে বিজেপি-তে।
বিজেপি-র পার্টি অফিসের মতো কাজ করেছে নির্বাচন কমিশন
বাংলায় নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনের পরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নির্লজ্জ পক্ষপাতিত্বের প্রশ্ন তুলে ধরে মমতা বলেন, বিজেপি স্বৈরশাসন চায়। ত্রিপুরায় আমাদের অনুষ্ঠান করতে দেয়নি। ভোটপরবর্তী হিংসার অভিযোগ মিথ্যা। কোনও হিংসা হয়নি রাজ্যে। মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ভোটের আগের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত করা হচ্ছে। বিজেপি-র পার্টি অফিসের মতো কাজ করেছে নির্বাচন কমিশন। আমাদের ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে। অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিস্থিতি। মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিচ্ছে না বিজেপি। মানুষকে হেনস্থা করছে। গরিব মানুষকে টাকা দেওয়ার বদলে আড়ি পাততে টাকা খরচ করা হচ্ছে।
কোভিড মোকাবিলায় ব্যর্থ মোদি
গঙ্গায় মৃতদেহ ভাসছে আর প্রধানমন্ত্রী বলছেন উত্তরপ্রদেশ দেশের মধ্যে সেরা রাজ্য। একটুই লজ্জা নেই। টিকা নেই, ওষুধ নেই, অক্সিজেন নেই, মৃতদেহ সৎকার পর্যন্ত করতে দিতে হচ্ছে না। আমরা গঙ্গা থেকে তুলে সৎকার করেছি। খালি বড় বড় কথা। আপনার ব্যর্থতা চূড়ান্ত। আপনাদের জন্য ৪ লক্ষ লোক মারা গিয়েছে। দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণ কার যেত সঠিক সময় ব্যবস্থা নিলে। কিন্তু বাংলায় ডেইলি প্যাসেঞ্জারের মতে এসে গণতন্ত্র ধ্বংস করতেই ব্যস্ত ছিলেন আপনারা।
রাজ্যে রাজ্যে খেলা হবে
খেলা একটা হয়েছে, খেলা আবার হবে। যত দিন বিজেপি-কে বিদায় করতে না পারি রাজ্যে রাজ্যে খেলা হবে। সমস্ত জায়গায় খেলা হবে। ১৬ অগাস্ট খেলা দিবস হিসেবে পালিত হবে।

গুজরাত নয়, বাংলাই আদর্শ মডেল
গুজরাত নয়, বাংলাই দেশের মডেল। একথা বলে মমতা বলেন, রবীন্দ্রনাথের বাংলা মাথা নত করে না। আপনারা শুধু বিভাজন চান, অশান্তি চান। আমরা রবীন্দ্রনাথের মাটির। আমরা তাঁর আদর্শে বেঁচে রয়েছি। কাউকে ভয় পাই না। ভারতের মাটি বিবেকানন্দ, নেহরু, রাজেন্দ্র প্রসাদের। এখানে সংখ্যালঘু, কৃষক সকলের সমান অধিকার। কিন্তু আপনারা শুধু নিজেদের দল নিয়ে ভাবেন। ভারতে উন্নয়ন প্রয়োজন, মজবুত অর্থনীতি চাই, মহিলাদের নিরাপত্তা চাই, সকলের সমান অধিকার চাই। কিন্তু আপনারা শুধু বাকিদের হেনস্থা করতে চান। আমাদের ব্যতিব্যস্ত না করে সকলকে বিনামূল্যে রেশন দিন। আমাদের ফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে গোটা দেশে বিনামূল্যে রেশন দেব। আমাদের কন্যাশ্রী রাষ্ট্রপুঞ্জে পুরস্কৃত হয়েছে। কৃষকদের আমরা ১০ হাজার টাকা করে দিচ্ছি। কৃষকের মৃত্যু হলে তাঁর পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিই আমরা।