Last Updated on June 30, 2022 10:23 AM by Khabar365Din
৩৬৫ দিন। ১০০ দিনের কাজ, বাংলার সড়ক, বাংলার বাড়ি সহ একাধিক প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু রাজ্য উদ্যোগী হয়ে পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ গুলিকে নির্দেশ দিয়ে বুধবার দুর্গাপুরের প্রশাসনিক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, বরাদ্দ অর্থের ৫০ শতাংশ টাকা দিয়ে গ্রামীণ রাস্তা তৈরি করবে পঞ্চায়েত সমিতির জেলা পরিষদ।
অতিরিক্ত ১২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ সহ আরো একাধিক ক্ষেত্র থেকে অর্থ দিয়ে বাংলার বাড়ি প্রকল্প চালু রাখবে রাজ্য সরকার। বাংলার বাড়ির ক্ষেত্রে নতুন করে তালিকা তৈরি না করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যে তালিকা রয়েছে সেগুলোরই কাজ আগে শেষ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যে বাংলার বাড়ির তালিকা আপনারা করেছেন, আর কেউ নতুন করে সেই তালিকা করবেন না। কারণ কেন্দ্রীয় সরকার এ বছরের টার্গেট দেয়নি। যে বাড়িগুলো আপনারা তালিকা করেছিলেন, ওরা সেগুলো ওদের ডেটা থেকে মুছে দিয়েছে। আমি নিজেও দিল্লি গিয়ে কথা বলব। যে কাজগুলো আমরা অন্য লোককে দিয়ে করাই, জব কার্ড যাদের আছে আমরা তাদের দিয়ে কাজ করাব।
একদিকে রাস্তা বন্ধ হলে আরেক দিকে রাস্তা খুলতে হয়। জেলা পরিষদ পঞ্চায়েত সমিতি আপনারা ১৫ তম কমিশনের অর্থ আপনারা পান (পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ), যেহেতু গ্রামীণ রাস্তার টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, এখন শুধু রাস্তার কাজ করুন।
বাকি কাজ আমরা করে দেব। আপনারা ৫০ শতাংশ টাকা দিয়ে গ্রামীণ রাস্তার কাজটা করুন, আর 50 শতাংশ অন্যভাবে খরচ করুন। সারা বাংলার জন্য এটাই পলিসি হল। গ্রামীণ রাস্তা খারাপ থাকলে কেউ ভোট পাবেন না মাথায় রাখবেন। নিজে দাঁড়িয়ে থেকে মাথায় ইট বইবেন। আমি ইট বইয়ে রাস্তা তৈরি করেছি।
দরকার হলে আমায় ডাকবেন, আমি আসব। রাস্তাটা আপনারা করুন, রাস্তার টাকাটা দিয়ে আমি বাংলার বাড়ি করব। অতিরিক্ত আমি ১২০০ কোটি টাকা দেব। এই বছরে ১০ লক্ষ বাড়ি করব। পাঁচ বছরে ৫০ লক্ষ বাড়ি করব। নতুন করে কেউ বাড়ি তৈরি করার তালিকা প্রস্তুত করবেন না।
এই কাজ ঝটপট করে দিন, না হলে ললিপপ খাবেন, যেকোনো দিন পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হয়ে যাবে। বিধায়ক সাংসদেরা পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদকে বলবেন রাস্তার কাজটা করে দিতে। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, রাজস্থানের বাড়ি রাজস্থানের নামে হলে বাংলার বাড়িতে আপত্তি কোথায়? সব জেলা পরিষদকে এই নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। গ্রামীণ রাস্তা তৈরীর কাজ বন্ধ থাকলে কেউ ভোট দেবে না।হাতের কাজ কেউ ফেলে রাখবেন না।
বালি খাদানে ই-টেন্ডারিং
বালি খাদান রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পঞ্চায়েত আগে তাদের থেকে টাকা নিত। ওভারলোডিং বন্ধ করতে একটা লরিতে যে বালি যেত, এখন তিনটে লরিতে সেই বালি যায়। বালির লরির জন্য ই টেন্ডারিং করা হচ্ছে। একে কেন্দ্রীয়ভাবে(জেলা ভিত্তিক) পরিচালনা করলে সরকারের আয় বিপুল পরিমাণে বাড়তে পারে। এখান থেকে ৫০ শতাংশ গ্রামের উন্নয়নের জন্য ব্যয় হল, বাকি ৫০ শতাংশ রাজ্যের কোষাগারে পাঠানো হল। এতে সরকারের আয় বাড়বে।
সিবিআই হজবরল করছে
দুর্গাপুরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় সমালোচনা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গরিব টোটো চালক থেকে সাংবাদিকদের ডাকছে সিবিআই। নামি চিকিৎসকেও ডেকেছিল সিবিআই। ডেকে ডেকে হেনস্থা করা হচ্ছে তৃণমূলের বিধায়ক পঞ্চায়েত সদস্যদের দেখে ডেকে হেনস্থা করছে। একটা কেসে এক হাজার লোককে ডাকা হয়েছে।
এভাবেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকাকে তুলধনা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সিবিআই ভোট-পরবর্তী হিংসা মামলায় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বহু সাধারণ মানুষকেও তলব করে দুর্গাপুরের সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে। কেতুগ্রাম 1 নম্বর ব্লকের অতি সাধারন এক টোটো চালক তিনি এলাকার ভগ্ন রাস্তা নিয়ে বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে ফোন করেছিলেন। সেই টোটো চালক অজয় দাস কেও ডাকা হয় এর পক্ষ থেকে।
মুখ্যমন্ত্রী তা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। টোটো চালক অজয় দাস দুর্গাপুরে সিবিআই আধিকারিকদের কাছে সমস্ত জবাব দিয়ে বেরোনোর পর সংবাদমাধ্যমের সামনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছিলেন। এদিন বৈঠকে মঞ্চে অন্যান্যদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ কুমার মালব্য।
মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকের একেবারে শেষের দিকে মনোজকুমার মালব্যকে হঠাৎই হাসিমুখে বলেন, আমাদের দিকে দেখ। একেবারে শান্ত শিষ্ট। দেখে মনে হচ্ছে উত্তম কুমারের মত। যা শুনে রাজ্যের পুলিশকর্তাও হাসিমুখেই মুখ্যমন্ত্রীকে জানালেন পুর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলার পুলিশ কমিশনার অত্যন্ত দক্ষ।