Last Updated on December 29, 2020 10:13 PM by Khabar365Din
বােলপুর থেকে শুভায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়
ছবি ▐ অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়
ভাজপা এবং বিশ্বভারতীর বর্তমান আরএসএস ঘনিষ্ঠ উপাচার্য যতই রবীন্দ্রনাথের আদর্শকে ধুলােয় লুটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুক না কেন, তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে যে বাংলার মানুষ প্রস্তুত, আজ বােলপুরের বিশাল পদযাত্রায় তা বুঝিয়ে দিলেন মমতা। বােলপুরে ঐতিহাসিক পদযাত্রায় সামিল লক্ষ মানুষ। বাংলার বাঘিনী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে পায়ে পা মেলাতে হাজার হাজার বাউল শিল্পীরা গানের বােল তুলেছে। বােলপুর লজ মােড় থেকে শুরু হয়ে পদযাত্রায় দীর্ঘ প্রায় ৫ কিলােমিটার পথ বীরভূমের লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে বাংলার সংস্কৃতিকে বাঁচানাের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ করলেন মমতা। ডাক,একতারা, রবীন্দ্র সঙ্গীতের সুরে গর্জে উঠেছে বােলপুর গুরুদেবের কর্মভূমি থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার বিরুদ্ধে বাংলাকে এককাট্টা করতে পথে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। দীর্ঘ পাঁচ কিমি পদযাত্রী হয়ে মিছিলের নেতৃত্ব দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সকাল থেকে বীরভূমের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বােলপুর শহরে তাদের প্রিয় দিদিকে দেখতে, বাংলার মেয়ের সাথে প্রতিবাদে সামিল হতে লক্ষ মহিলা অপেক্ষায় থেকেছে। দুপুর ১.১৫ মিনিট গাড়ি থেকে নামতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে জয়ধ্বনি শুরু হয়ে যায়। স্লোগান ওঠে ধর্মীয় রাজনৈতিক দল বিজেপি দূর হঠো। বীরভূম জেলা তৃনমূলের অনুব্রত মন্ডল বলেন, আজকের পদযাত্রা দেখলেই বিজেপির নেতারা বুঝতে পারবে ২১ সালের বিধান সভায় কী ফল হবে। প্রসঙ্গত মমতার মঞ্চে গান শােনান বাসুদেব দাস বাউল। যার বাড়িতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসে খাওয়া দাওয়া করে বাউল ট্যুরিজম করেছিলেন।
আজ মমতা যা বললেন, তার সারসংক্ষেপ:
■ বিশ্বভারতীর ভাইস-চ্যান্সেলর কি আর খুঁজে পাইনি? দেখে দেখে খুঁজে আনতে হচ্ছে বিজেপির মার্কামারা স্ট্যাম্প মারাদের। ইনসাইড দ্য ক্যাম্পাস কি করে ওরা? আমি তাে কলকাতা, যাদবপুর ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে এসব করিনা। বিশ্বভারতী কে একটা রেগুলার দাঙ্গার জায়গা তৈরি করছে। একটা ঘৃণ্য রাজনীতি আমদানি করা হয়েছে।
■ সােনার বাংলার প্রণেতা রবীন্দ্রনাথই। তাঁকে ও বিশ্বভারতীকে কুকথা বলে বেশ কয়েক দিন ধরে অপমান করা হচ্ছে। আমাদের বাংলায় এমনিতেই সােনার বাংলা ওদের আর নতুন করে সােনার বাংলা বানাতে হবে না।
■ বিবেকানন্দ গান্ধীজিকে শ্রদ্ধা করেনা। বাংলায় আবার ভিন্ন রাজনীতির জনগণমন-এর অপমান সহ্য করা হবে না।
■ নির্বাচনের জন্য ওরা বারবার বাংলায় আসছে। বাংলায় এলেই আবার আদিবাসী বাড়িতে গিয়ে খাবার খায় , কিন্তু খাবার আসে পাঁচতারা হােটেল থেকে।
■ হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে ওরা বাংলাটাকে দখল করতে আসছে। দেশে বর্গী আসছে রাজ্যে বর্গী এসেছে।
■ বিবেকানন্দ গান্ধীজিকে শ্রদ্ধা করেনা। বাংলায় আবার ভিন্ন রাজনীতির আমদানি করছে। যারা গান্ধীজিকে খুন করল আজকে তারা ওদের নেতা। যারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অসম্মান করছে তারা ওদের নেতা।
■ টাকা দিয়ে কিছু বিধায়ক কেনা যায়। টাকা দিয়ে গােটা দলকে কেনা যায় না।
■ ওরা ভাড়াটে লােক এনে অপপ্রচার করছে। ওরা বাংলার সংস্কৃতিকে নষ্ট করতে চাইছে।
■ রবি ঠাকুরের পায়ের তলায় এসে আমি বঙ্গভূমি যাত্রা সমাপ্তি করেছি।কারণ রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, সারদা মা, নিবেদিতা ছাড়া ভাবতে পারিনা।
■ কৃষকদের আন্দোলন চলছে এক মাস ধরে। কৃষক নিজেদের জিনিস বিক্রি করতে পারবে না।আদানিদের বড় বড় ইন্ডাস্ট্রি বানিয়েছে সব সবজি তারা ওখানে গিয়ে তুলবে। আপনারা পাবেন না।
■ মাঝে মাঝে আসছে আর মনে হচ্ছে সান্তাক্লজ এসে গিয়েছে, রবীন্দ্রনাথ এসে গিয়েছে। আর কি বাণী !
■ বহিরাগতদের পাড়ায় দেখলেই থানায় গিয়ে অভিযােগ করবেন। কোন পুলিশ অভিযােগ না নিলে লিখে ড্রপবক্সে ফেলে দেবেন আর একটা কপি আমাদের পাঠিয়ে দেবেন।
■ টাকা দিলে গরিব মানুষ নিয়ে নিন। ভােটে ওদের বিদায় দিন।