Last Updated on February 1, 2022 12:10 AM by Khabar365Din

বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসার পর জ্যোতি বসুর (Jyoti Basu) আমলে দন্ডকারণ্য থেকে আসা প্রায় ৩০ হাজার নমঃশূদ্র উদ্বাস্তু সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ জঙ্গলে (Sundarbans Mangrove Forest) মরিচঝাঁপি দ্বীপে বসতি স্থাপন করে। নাম দেয় নেতাজি কলোনি। সিপিএম সরকার তাদের উৎখাতের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ১৯৭৯ সালের ২৪ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে গণহত্যা ও অর্থনৈতিক অবরোধ করে উদ্বাস্তুদের ছত্রভঙ্গ করে। গোটা পরিকল্পনাটাই ছিল তৎকালীন পার্টি সম্পাদক কমঃ প্রমোদ দাশগুপ্ত (পিডিজি) ও মুখ্যমন্ত্রী কমঃ জ্যোতি বসুর।
৩৬৫দিন। ৪৩ বছর আগে ঘটে যাওয়া মরিচঝাঁপির (Marichjhapi) ঘটনাকে নিয়ে হঠাৎই বর্তমান ভাজপা নেতাদের রাত ঘুম উড়েছে। সোমবার মহা ধুমধাম করে মরিচঝাঁপি দিবসও (Marichjhapi Day)পালন করলেন মুরলীধর সেন লেনের (Murlidhar Sen Lane) নেতারা। কিন্তু সিপিএম (CPIM) জমানার ৪৩ বছর আগের ঘটনাকে নিয়ে হঠাৎ ভাজপার এত আদিখ্যেতা কেন ? এই প্রশ্নের জবাবেই ফের একবার বামরাম জোটকে প্রকাশ্যে নিয়ে এলেন বহিস্কৃত ভাজপা (BJP) নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার (Jaiprakash Majumdar)। রবিবারই আরেক বিক্ষুব্ধ ও বহিস্কৃত ভাজপা নেতা রীতেশ তিওয়ারির (Ritesh Tiwari) কথাতেই স্পষ্ট হয়েছিল, বর্তমান ভাজপা নেতৃত্ব আসলে সিপিএমের জোট করে চলছে। যার ফলেই সিপিএম কলকাতা পৌরসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিল। এবার তার থেকে আরো একধাপ এগিয়ে ভাজপার মরিচঝাঁপি দিবস পালনের পিছনে বাম রাম জোটের পর্দা ফাঁস করলেন জয়প্রকাশ মজুমদার। তার অভিযোগ, ভাজপা সিপিএমের বি টিম হিসেবে কাজ করছে। তাই বাংলার বুক থেকে মুছে যাওয়া সিপিএম কে আবারও প্রাসঙ্গিক করে তুলতে মরিচঝাঁপি দিবসকে বেছে নিয়েছে বর্তমান ভাজপা নেতারা। যাতে আবারও সিপিএম কে বাংলার রাজনীতিতে জায়গা করে দেওয়া যায়। জয়প্রকাশ বলেন, জ্যোতি বসুর আমলে মরিচঝাঁপি ঘটনা হয়েছিল, যার কোনো প্রভাব নেই বর্তমান সময়ে। তাহলে মরিচঝাঁপি কে নিয়ে আন্দোলন করার মানে সিপিএমকে জনমানুষের আবারও প্রাসঙ্গিক করে তোলা। বর্তমান বিজেপি নেতৃত্বের কাছে কোনো তৃণমূলের বিরুদ্ধে কোনো ইস্যু নেই। ওরা এখন সিপিএমের বি টিম হিসেবে রয়েছে। শুধু তাই নয়, মরিচঝাঁপি কে হাতিয়ার করার পিছনে আরো একটি কারণ রয়েছে বলেই মনে করছেন ভাজপা বিক্ষুব্ধরা। তাদের মতে, মরিচঝাঁপি আসলে উদ্বাস্তুদের উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে ঘটেছিল। কিন্তু বর্তমানে ভাজপার উদ্বাস্তু মতুয়া ইস্যুতে যেভাবে হাত পুড়েছে। আপাতত মতুয়াদের থেকে মুখ ঘোরাতে চাইছে মুরলী ধর সেন লেন নেতারা। তাই ৪৩ বছর আগের মরিচঝাঁপি কে সামনে নিয়ে আসা হচ্ছে। যাতে ভাজপার বি টিম সিপিএমও বাংলার বুকে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে এবং মতুয়া ক্ষতে যেতে খানিকটা হলেও মলম দেওয়া যায়। উল্লেখ্য, জয় প্রকাশের আগে রবিবার বিক্ষুব্ধ বহিস্কৃত অভিনেতা রিতেশ তেওয়ারি বর্তমান ভাজপা নেতৃত্বের সঙ্গে সিপিএমের জোটের কথা ফাঁস করেছিলেন। গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের ভাজপা বাংলার বিরোধী দল হলেও কলকাতার পুরসভা নির্বাচনে তৃতীয় হওয়ার পিছনে আসলে বাম রাম জোটের কথা প্রকাশ্যে এনেছিলেন রিতেশ।