Last Updated on January 17, 2021 9:22 PM by Khabar365Din
নন্দীগ্রাম থেকে সৌগত মণ্ডল ছবি ▌ অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়
এই শুভেন্দু অধিকারীকে আমরা চিনিনা। মাস্কেট ধারী সিপিএমের হার্মাদ বাহিনীর হাতে রক্তাক্ত নন্দীগ্রামের মানুষের মুখে এখন একটাই কথা। বিশ্বজিৎ মাইতি। ২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি সিপিএমের হার্মাদ বাহিনীর হাত থেকে নিজের জমি দখল রুখতে গিয়ে সোনাচূড়ার বাসিন্দা ১৩ বছরের এই কিশোরের বুক চিরে চলে গিয়েছিল মুখোশধারী হার্মাদ বাহিনীর গুলি। আজও সেই দৃশ্য খুলতে পারেন না তার জ্যাঠা অনন্ত কুমার মাইতি। তিনি সাফ জানালেন, সিপিএম যেভাবে আমাদের জমি দখল করার চেষ্টা করেছিল গুন্ডাবাহিনী পাঠিয়ে, মমতা দিদির নেতৃত্বে লড়াই করে সেই জমির আয়ে আমরা বেঁচে আছি। শুভেন্দু দা যতদিন দিদির প্রতিনিধি হিসেবে আমাদের কাছে ছিলেন আমরা তাকে বুকে আগলে নেতা হিসেবে মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তিনিই এখন সিপিএমের সঙ্গে বন্ধুত্ব করছেন আর বলছেন নন্দীগ্রামে নাকি সিপিএম কিছু করেনি। নন্দীগ্রামের মানুষ কিন্তু মিথ্যেবাদীদের পাশে দাঁড়াবে না।
রবীন দাস। গড় চক্রবেড়িয়া ধানক্ষেতে সিপিএমের হার্মাদ বাহিনীর হাত থেকে জমি রক্ষা করতে গিয়ে মাথায় গুলি খেয়ে শহীদ হয়েছিলেন। তার পরিবারের স্পষ্ট বক্তব্য, দিদির হাত ধরে নন্দীগ্রামে এসেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এখন বিজেপিতে গিয়ে ফের হার্মাদদের নন্দীগ্রামের ফিরিয়ে আনার কথা বলছেন। এই শুভেন্দু অধিকারীকে আমরা চাই না।
শুধুমাত্র নন্দীগ্রাম অথবা সোনাচূড়ার শহীদ পরিবারের সদস্যরা নয়, নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনে গিয়ে আহত হওয়া বিশ্বজিৎ হালদার রীতিমতো ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, শুভেন্দু অধিকারী মীরজাফর। যেখানে দাঁড়াবে সেখানে হারবে। সিপিএম আমাদের জমি জসালিমদের বেচে দেওয়ার জন্য গুন্ডা পাঠিয়েছিল। মোদি সরকার তো দেশটাকে বেচে দিচ্ছে।
নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনের সামনের সারিতে থাকা ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির নেতা তথা শুভেন্দু অধিকারীর ডানহাত বলে পরিচিত আবু তাহের আবার শুভেন্দুর রাতারাতি ভোল বদল এর আগের থেকে বেশি দুঃখ পেয়েছেন। তার কথায়, আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অনেক লড়াই করেছি। কিন্তু দলবদল এরপরে যেভাবে শুভেন্দু দা ব্যক্তি আক্রমণ করে চলেছেন, তা কোনোভাবেই সমর্থন করা যায় না। এই নতুন শুভেন্দু দা-কে আমরা চিনিনা।
তাই শুভেন্দু অধিকারী যতই দাবি করুন নন্দীগ্রামের মানুষ তার সঙ্গে আছে, তা যে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন তার প্রমাণ দিতে সোমবার নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনের অন্যতম প্রেক্ষাপট তেখালি ব্রিজের পাশে বিশাল মাঠে এযাবতকালের সবথেকে বড় জনসমাবেশ হতে চলেছে। ছোট স্কুল মাঠ বা রোড শো নয়, নন্দীগ্রামে তৃণমূলের শক্তি প্রদর্শনের জন্য কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড এর প্রায় দেড় গুণ পড়ো মাঠ ভরিয়ে নন্দীগ্রামের মাটিতে যে কর্পোরেটদের বন্ধু ভাজপার কোনও জায়গা নেই, তা বোঝাতে প্রস্তুত জমি আন্দোলনের পথপ্রদর্শক নন্দীগ্রাম।