আলাপন ইস্যুতে ব্যাকফুটে মোদি। আইএস, আইপিএস নিয়ে মমতার পথে হেঁটে প্রতিবাদ চিঠি পাঠালো বিহার, ওড়িশা, মেঘালয়, মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্র

0

Last Updated on January 25, 2022 7:50 PM by Khabar365Din

৩৬৫ দিন। ভাজপা শাসিত কেন্দ্রের মোদি সরকারের বিরুদ্ধে এবারে মমতার ( Mamata Banerjee on IAS IPS Issue ) পাশে দাঁড়িয়ে লড়াইয়ের মঞ্চে এগিয়ে এলো দেশের একাধিক ভাজপা (BJP) এবং ভাজপা নেতৃত্বাধীন এনডিএ (NDA) জোট শাসিত রাজ্য। বাংলার প্রাক্তন মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Alapan Bandyopadhyay) উপরে প্রতিশোধ নিতে গিয়ে যেভাবে বারে বারে তাকে দিল্লিতে বদলি করার চিঠি দেওয়া সত্ত্বেও মমতার অনড় অবস্থানের ফলে মুখ পুড়েছে মোদি সরকারের, তারপরেই গোটা দেশে সমস্ত আইএএস এবং আইপিএস অফিসারের উপরে কেন্দ্রীয় সরকারের একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করার জন্য আইনে বদল আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রের ভাজপা সরকার। কিন্তু সেখানেও দেশের মধ্যে প্রথম প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখে তীব্র প্রতিবাদ জানান মমতা। গত এক সপ্তাহের মধ্যে পরপর দুটি চিঠি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অবিলম্বে এই আইন সংশোধনের চেষ্টা থেকে বিরত হওয়া অনুরোধ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।

মমতার অভিযোগ

আইএএস সার্ভিস রুলে সংশোধনীর বিরোধিতায় পরপর দুটি চিঠিতে এই সংশোধনীকে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর চরম পরিপন্থী আখ্যা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, রাজ্য সরকারের মেরুদণ্ড আইএএস এবং আইপিএস আধিকারিকরা। এই নয়া নিয়মের জেরে আধিকারিকদের মধ্যে ভীতি তৈরি হবে। মমতার (Mamata Banerjee) অভিযোগ, এই নয়া নিয়ম চালু হলে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো ধ্বংস হবে। মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের মত বা তিনি যে রাজ্য সরকারের হয়ে কাজ করছেন, সেই সরকারের কোনও মত ছাড়াই যদি কাউকে একটি রাজ্য থেকে তুলে দেশের যেকোনও জায়গায় পাঠানোর নিয়ম চালু হয়, তাহলে তা আধিকারিকদের মনে ভয়ের সঞ্চার ঘটাবে। এটা ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ। এই পদক্ষেপ কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যকার পারস্পরিক বোঝাপড়া নষ্ট হয়ে যাবে। মমতার অভিযোগ, কেন্দ্রে যখন যে দলের সরকার ক্ষমতায় আসবে, তারা নিজেদের মতো করে এই আইনকে ব্যবহার করবে। রাজ্যগুলি মতপ্রকাশের ক্ষমতা হারাবে।

মমতার সঙ্গে মোদি বিরোধিতায় ভাজপা

আশ্চর্যজনকভাবে এবারেও কেন্দ্রের ভাজপা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের পরেই মমতার ( Mamata Banerjee on IAS IPS Issue ) পাশে দাঁড়িয়ে এক সুরে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় শামিল হয়েছে একাধিক ভাজপা এবং ভাজপা নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট শাসিত রাজ্য। যার মধ্যে একেবারে প্রথমে রয়েছে ভাজপা শাসিত মধ্যপ্রদেশ (Madhya Pradesh), ভাজপা নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট শাসিত বিহার (Bihar) এবং মেঘালয় (Meghalaya), ভাজপার সহযোগী দল বিজেডি শাসিত ওড়িশা (Odisha)। এছাড়াও গতকাল মহারাষ্ট্র (Maharashtra) মন্ত্রিসভার ক্যাবিনেট বৈঠকের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর (Prime Minister) কাছে এই আইন সংশোধনী প্রস্তাব এর তীব্র বিরোধিতা করে চিঠি দেবে মহারাষ্ট্র সরকার। জানা গিয়েছে এখনো পর্যন্ত দেশের ৫ রাজ্য আইএএস এবং আইপিএস আধিকারিকদের ওপরে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর আইন সংশোধনের প্রস্তাবের বিরোধিতা করে ডিপার্টমেন্ট অব পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিং (Department of Personnel & Training) বা ডিওপিটি-র কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন তাঁরা। প্রতিটি রাজ্যের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়েছে, বদলের প্রয়োজন নেই।

এই বিষয়ে রাজ্যগুলির জবাব দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার আগের ঘোষিত দিন বাড়িয়ে শেষ দিন ধার্য করেছে ২৫ জানুয়ারি। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি রাজ্য চিঠি পাঠিয়ে বিরোধিতা করেছে। জানা গিয়েছে, আইএএস (IAS) এবং আইপিএস (IPS) অফিসারদের কেন্দ্রে বদলিতে যেতে হলে রাজ্যের সম্মতি আবশ্যিক ছিল। কিন্তু নয়া সংশোধনীতে আনা হচ্ছে, আর বাধ্যতামূলক থাকবে না বিষয়টি। এতেই আপত্তি তুলেছে রাজ্যগুলি। এভাবে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে পড়বে বলে মনে করছেন রাজ্যগুলি। কেন্দ্রের নয়া সংশোধনী অনুযায়ী, রাজ্যে কর্মরত যে কোনও আইএস, আইপিএস-সহ যে কোনও কেন্দ্রীয় আমলাকে যে কোনও সময় দেশের যে কোনও প্রান্তে বদলি করতে পারবে কেন্দ্রীয় সরকার। এক্ষেত্রে রাজ্যের অনুমতির প্রয়োজন নেই। রাজ্য সরকার রিলিজ না দিলে কেন্দ্রের হাতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকবে। ঠিক যেভাবে বর্তমান আইনে বাংলার মুখ্যসচিব থাকাকালীন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্রীয় সরকার কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে 24 ঘণ্টার নোটিশে যোগ দিতে নির্দেশ দেওয়ার সত্বেও মমতার সরকার রিলিজ অর্ডার না দেওয়ায় কিছু করে উঠতে পারেনি মোদি সরকার। কার্যত আলাপন ইস্যুতে সেই ব্যর্থতা তাড়া করে বেড়াচ্ছে নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi)।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here